কক্সবাজারের টেকনাফে অপহৃত এক কৃষককে হত্যা করেছে রোহিঙ্গা সন্ত্রাসীরা। এছাড়া অন্য অপহৃতদের জন্য ২০ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করা হয়েছে। অন্যথায় তাদেরও মেরে ফেলার হুমকি দিয়েছে রোহিঙ্গা হাকিম ডাকাতের সশস্ত্র সন্ত্রাসীরা।
নিহত কৃষক মিনাবাজার মৌলভী আবুল কাছিমের ছেলে আক্তারুল্লাহ (২৪)।
আজ শুক্রবার (১ মে) ভোরে উপজেলার হোয়াইক্যং ইউনিয়নের রোহিঙ্গা ক্যাম্প (২২ নম্বর) উনছিপ্রাং পুটিবনিয়ার পশ্চিমে ছনখোলা এলাকা থেকে ওই কৃষকের গুলিবিদ্ধ মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে একদল পুলিশসহ গোয়েন্দা সংস্থার লোকজন। মৃতদেহটি উদ্ধার করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে পুলিশ।
জানা যায়, গত বুধবার (২৯ এপ্রিল) দিবাগত রাতে হোয়াইক্যং মিনাবাজার শামসু হ্যাডম্যানের ঘোনা থেকে ৬ জন কৃষক ধানক্ষেতে পাহারা দেওয়া অবস্থায় সশস্ত্র একদল রোহিঙ্গা সন্ত্রাসী তাদের অপহরণ করে। অপহৃতরা হলেন, কৃষক আবুল হাশেম ও তার দুই ছেলে জামাল এবং রিয়াজুদ্দিন, স্থানীয় বাসিন্দা মোহাম্মদ হোসেনের ছেলে শাহেদ (২৫), মৌলভী আবুল কাছিমের ছেলে আকতারুল্লাহ (২৪) ও মৃত মোহাম্মদ কাশেমের ছেলে মোঃ ইদ্রিস। আস্তানা থেকে চাল ও অন্যান্য খাদ্য সামগ্রীর বিনিময়ে হাসেমসহ তার দুই ছেলেকে ছেড়ে দিলেও অপর তিন কৃষককে ছেড়ে দেয়নি সশস্ত্র সন্ত্রাসীরা। অপহৃত শাহেদের মোবাইল ফোন থেকে তার পরিবারের নিকট ৩ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করা হয়েছিল। অন্যথায় তাদের মেরে ফেলার হুমকি দেন।
এরই প্রেক্ষিতে ভোরে ওই কৃষককে মাথায় গুলি করে হত্যা করে ফেলে রেখে পরিবারকে খবর দেয় রোহিঙ্গা সন্ত্রসীরা। মৃতদেহের শরীর থেকে একটি চিরকুট ও ঘটনাস্থল থেকে খালি কার্তূজ পাওয়া গেছে বলে জানা যায়। অপর দুই কৃষককে জীবিত পেতে হলে বিশাল অংকের মুক্তিপণ দাবি করা হয়।
পুলিশ ও স্থানীয়রা জানান, রোহিঙ্গা কুখ্যাত হাকিম ডাকাত তাদের অপহরণ করেছে। অপহৃত শাহেদের মোবাইল ফোনের বরাত দিয়ে শামসুদ্দিন হ্যাডম্যান বলেন, ‘শাহেদ ভোর রাতে মোবাইল ফোনে তার মার কাছে জানান, আক্তারুল্লাহকে মেরে ফেলেছে হাকিম ডাকাত। ২০ লাখ টাকা না দিলে তাদেরও দুইয়েকদিনের মধ্যে মেরে ফেলা হবে।’
এ দিকে অপহরণের পর থেকে অভিযান অব্যাহত রেখেছে পুলিশের একটি টিম।
ফাঁড়ির ইনাচার্জ উপ-পরিদর্শক মশিউর রহমান জানিয়েছেন, গহীন পাহাড়ে পুলিশের ছয়টি টিম করে অভিযান পরিচালনা করে তাদের (রোহিঙ্গা সন্ত্রাসীদের) আস্তানা হতে নানা সরঞ্জামাদি উদ্ধার করা হয়েছিল।
উল্লেখ্য, এর আগেও কুখ্যাত রোহিঙ্গা ডাকাত আব্দুল হাকিম ও তার সন্ত্রাসীদের ধরতে হেলিকপ্টার অভিযানসহ নানা অভিযান পরিচালনা করেছিল আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। সর্বশেষ র্যাবের সাথে বন্দুকযুদ্ধে ৭ রোহিঙ্গা ডাকাত নিহত হয়েছিলেন।
বিডি প্রতিদিন/হিমেল