করোনাভাইরাসের সংক্রমণ থেকে রক্ষা পেতে বিভিন্ন ধরনের সুরক্ষাসামগ্রী ব্যবহার করছেন সব শ্রেণি-পেশার মানুষ। মানুষের এই প্রবণতাকে কাজে লাগিয়ে মানহীন সুরক্ষাসামগ্রী তৈরি করে বাজারে সরবরাহ করছে অসাধু কিছু ব্যবসায়ী।
লালমনিরহাট শহরে ফুটপাতে মাত্র ২৫০ টাকাতেই পাওয়া যাচ্ছে মানহীন পারসোনাল প্রটেকটিভ ইকুইপমেন্ট (পিপিই)। এমনকি মাছের দোকানের পাশেও বিক্রি হচ্ছে এসব পিপিই। আর সবজি,পানের দোকানেও বিক্রি হচ্ছে মাস্ক। কিন্তু এসব কথিত সুরক্ষা সরঞ্জামের মান যাচাই নিয়ে কোনো পদক্ষেপ নেই স্থানীয় প্রশাসনের।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, লালমনিরহাটের তুষভান্ডার,হাতিবান্ধার মেডিকেল মোড়,পাটগ্রামের চৌরাঙ্গীর মোড়সহ ভিন্ন উপজেলার হাট বাজারে বিক্রি হচ্ছে ধুমচে। এসব পিপিইর অধিকাংশই মানহীন ও ঝুঁকিপূর্ণ। পারসোনাল প্রটেকটিভ ইকুইপমেন্ট বা ব্যক্তিগত সুরক্ষা সরঞ্জামটি মোটেও সুরক্ষা দিতে পারছে না। তবে সাধারণ মানুষ পিপিই কম পরলেও মাস্ক পরেই প্রতিদিনের কাজ করছেন। আর মানুষের এই দুর্বলতার সুযোগ নিচ্ছে কিছু অসাধু ব্যবসায়ী। এন-নাইনটি ফাইভ নামের মাস্কের কথা বলে দেদারসে বিক্রি হচ্ছে এফএফসি ১ এস মাস্ক। মাস্কগুলো এন-৯৫ না হলেও সেগুলোর গায়ে এন-৯৫ সিল লাগিয়ে দিয়ে বিক্রি করা হচ্ছে।
পাটগ্রামের নয়ন মিয়া ছিলেন পানের দোকানদার। দোকান খোলা রাখলে পুলিশ বার বার দোকান বন্ধ করতে বলে তাই বুদ্ধি খাটিয়ে মাক্স নিয়ে ব্যবসায় নেমেছেন করোনা মহামারীতে।
নয়ন মিয়া বলেন, পেট বাঁচাতে শেষ পর্যন্ত ব্যবসা বদল করতে বাধ্য হয়েছি। এসময় মানুষ রোযা থাকে তাই পানের ব্যবসা কম চলছে। তবে এই পণ্যের মান সম্পর্কে তাদের দাবি ‘শতভাগ সার্জিক্যাল’ জিনিস। তাদের কেউ বাধাও দেননি। তারা স্বাধীন মতো ব্যবসা করছেন ফুটপাতে।
লালমনিরহাটের বিভিন্ন মার্কেটের সামনে নয়ন মিয়ার মত আরও অনেকেই এসব ব্যবসার সাথে জড়িয়ে পড়েছেন। এই দোকানগুলোতে করোনা সুরক্ষা সরঞ্জাম বলতে যা যা বোঝায়, তার সবই রয়েছে বলে দাবি করেন তারা। তাদের কাছে পাওয়া যাচ্ছে কয়েক ধরনের মাস্ক, গাউন, হ্যান্ড গ্লাভস, স্যানিটাইজার ও চিকিৎসকদের মাথায় পরার টুপি। গাউনের প্যাকেটে রয়েছে শুকভার ও একজোড়া হ্যান্ড গ্লাভস। সেগুলোর দাম ২৫০ থেকে শুরু করে ৭০০ টাকা পর্যন্ত নেওয়া হচ্ছে। আর আলাদা করে হ্যান্ড গ্লাভস বিক্রি হচ্ছে প্রতি জোড়া ৩০-৪০ টাকা। মাথায় পরার টুপি ১০ টাকা ও হ্যান্ড স্যানিটাইজার ৪০ টাকা করে বিক্রি হচ্ছে। ফুটপাতের এই দোকানিরা খুচরা ও পাইকারি দুই ধরনের ক্রেতাদের কাছেই পণ্য বিক্রি করছেন।
এ ব্যাপারে লালমনিরহাট জেলার সিভিল সার্জন জানান, বিষয়টি আমরা আমলে নিয়েছি। এ সব দোকানে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
বিডি প্রতিদিন/এনায়েত করিম