শরীয়তপুরে এ বছর লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে বোরো ধানের আবাদ হয়েছে। ফলনও হয়েছে ভাল। কালবৈশাখী ঝড়ের সাথে কয়েক দিনের টানা বৃষ্টিতে জমিনে পানি জমে গছে। শিলা বৃষ্টিতে নষ্ট হয়ে যাচ্ছে জমিনের পাকা ধান। ধান পাকতে শুরু করলেও ধান কাটার শ্রমিক সংকটের কারণে ফসল ঘরে তোলা নিয়ে দুশ্চিন্তায় পড়েছেন শরীয়তপুরের কৃষকরা।
সরেজমিনে বৃহস্পতিবার সকালে দেখা যায়, জেলার নড়িয়া উপজেলার সুরেশ^র, ইছাপাশা, নন্দনসার, রাহাপাড়া ও গোড়াগাও এলাকার চারটি ইরি ব্লকের জমিতে বৃষ্টির পানি জমে গেছে। কৃষকরা জানিয়েছেন, ওই ইরি ব্লকগুলোর ২৮০ হেক্টর জমিতে বোরো ধানের আবাদ করা হয়েছে।
তা এখন বৃষ্টির পানিতে তলিয়ে যাওয়ার উপক্রম হয়েছে। ইরি ব্লকের পাশ দিয়ে স্থানীয় প্রভাবশালীরা মাছের ঘের তৈরি করে জমিনের পানি সরানোর পথ বন্ধ করে দিয়েছে। উপজেলা ধামারন, চামটা, ভুমখারার ইরি ব্লকগুলোতে অনেক জমিনের ধান পেকে সোনালী রং ধারণ করে রয়েছে। বৃষ্টিতে জমিনেও পানি জমে গেছে। ধান কাটার লোক না পাওয়ায় ধান কেটে ঘরে তুলতে পারছেনা ওই সব এলাকার কৃষকরা।
রাহাপারা ইরি ব্লকের কৃষক এমদাদুল আকন (৫০) বলেন, আমাদের জমিগুলোর পাশে কয়েকটি মাছের প্রোজেক্ট হয়েছে। এখন পানি নামানোর পথ বন্ধ হয়ে গেছে। আমাগো জমিনের ধান তলিয়ে যাচ্ছে। জমি থেকে পানি সরাতে না পারলে ধানগুলো সব পচে যাবে। আমরা কোন উপায় খুঁজে পাচ্ছিনা।
শরীয়তপুর জেলা কৃষি সম্প্রসারণ কার্যালয় থেকে জানানো হয়েছে, এ বছর শরীয়তপুরে বোরো আবাদের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছিল ২৫ হাজার ৯৮০ হেক্টর জমিতে। আবাদ হয়েছে ২৬ হাজার ৪শ হেক্টর জমি। আর ধান উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ১লক্ষ ৬৩ হাজার ২৩৮ মেট্রিকটন।
নড়িয়া উপজেলা কৃষিকর্মকর্তা রোকনুজ্জামান বলেন, ঘরিষার এলাকায় বাঁধের কারণে কয়েকটি বøকে মানি জমেছে এমন খবর আমরা আপনাদের মাধ্যমে জানতে পারলাম। মাঠকর্মীদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে খোঁজ নিয়ে ওই ইরি ব্লকের পানি অপসারণের ব্যাবস্থা করা জন্য।
জেলা প্রশাসক কাজী আবুতাহের বলেন, ঝিনাইদাহ, নড়াইল ও মুন্সিগঞ্জ থেকে ইতিমধ্যেই কৃষি শ্রমিক আসতে শুরু করেছে। যে সকল কৃষক ভাইদের শ্রমিক প্রয়োজন তারা যেসব এলাকা থেকে শ্রমিক আনতে চায় ওই এলাকায় যোগাযোগ করলে ওই জেলার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ওই শ্রমিকদের প্রত্যয়ন পত্র দিলেই শ্রমিকরা এসে কাজ করতে পারবে।
বিডি প্রতিদিন/আল আমীন