পঞ্চগড়ের টমেটো চাষিরা এখন বেশ খুশি। ন্যায্যমূল্যে টমেটো বিক্রী করতে পারছেন তারা। করোনা পরিস্থিতে মাত্র কয়েকদিন আগেও খেতের টমেটো খেতেই নষ্ট হয়ে যাচ্ছিল তাদের। সবশেষে পুলিশের উদ্যোগে দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে টমেটো ব্যবসায়ীদের এনে টমেটো বিক্রির কার্যক্রম শুরু করা হয়।
জেলা কৃষিভাগের তথ্য মতে, এ বছর জেলায় ৯৩০ হেক্টর জমিতে টমেটো চাষ হয়েছে। টমেটো চাষ করে সারাবছর সংসার চালান পঞ্চগড়ের সদর উপজেলার কয়েকটি ইউনিয়নের কয়েক হাজার গ্রীষ্মকালীন টমেটো চাষি। নিজেদের জমানো টাকা আর পোষা গরু ছাগল বিক্রি করা টাকা লগ্নি করে তারা টমেটো চাষ করে আসছেন। অনেকে ধার দেনা করে চাষ করেন, অনেকে দোকানে বাকিতে সার কিটনাশক কিনে চাষ করেন টমেটো। তারা গ্রীষ্মকালীন এই টমেটো রপ্তানি করেন দেশের বিভিন্ন জেলায়। দেশের নানা প্রান্ত থেকে টমেটো ব্যবসায়ীরা এই এলাকায় এসে চাষিদের কাছে টমেটো কেনেন।
কিন্তু এবার করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ ঠেকাতে গত মাস থেকে সবকিছু বন্ধ হয়ে যাওয়ায় টমেটো বিক্রি করতে পারছিলেন না চাষিরা। অঘোষিত লকডাউনের কারণে অন্য জেলা থেকে টমেটো ব্যবসায়ীরা পঞ্চগড়ে প্রবেশ করতে পারছিলেন না। ফলে রপ্তানিও বন্ধ হয়ে যায়। ফলে গভীর সংকটে পড়ে চাষিরা। এক টাকা কেজি দরেও টমেটো বিক্রি করা যাচ্ছিলনা। সময় মতো টমেটো তুলতে না পারায় ক্ষেতেই পঁচে গিয়ে নষ্ট হচ্ছিল।
ঠিক এমন পরিস্থিতিতে গণমাধ্যমে প্রচারিত সংবাদ দেখেই টমেটো বিক্রির জন্য অন্য জেলা থেকে ব্যবসায়ীদের নিয়ে আসার উদ্যোগ নেয় পুলিশ সুপার মো. ইউসুফ আলী। তিনি স্থানীয় কৃষিবিভাগ এবং জনপ্রতিনিধিদের সাথে আলাপ করে শরিয়তপুরসহ অন্যান্য জেলা থেকে টমেটো ব্যবসায়ীদের পঞ্চগড়ে আসার আহ্বান জানান। আগত ব্যবসায়ীদের ১৪ দিন হোম কোয়ারেন্টিনে রাখা হয়।
এরপর তারা টমেটো কিনতে শুরু করে। বর্তমানে ২শ’ ৮০ থেকে ৩’শ টাকা দরে টমেটো বিক্রি হচ্ছে।
পুলিশ সুপার মো. ইউসুফ আলী জানান, টমেটো ব্যবসায়ীদের ধারণা ছিল লকডাউনে কৃষি পণ্য আনা নেয়া করা যাবে না। তাই একটা সংকট চলছিল। বর্তমানে টমেটো বিক্রির সংকট কেটে গেছে। এখন ভালো দাম পাচ্ছে চাষিরা।
বিডি প্রতিদিন/হিমেল