ঠাকুরগাওয়ে গত ২৪ ঘণ্টায় লাম্পি স্কিন রোগে ২০টি গরুর মৃত্যু হয়েছে।
জেলা প্রাণীসম্পদ অধিদফতর সূত্রে জানা যায়, জেলায় এ পর্যন্ত ২ হাজার ২১৮টি গরু লাম্পি স্কিন রোগে আক্রান্ত হয়েছে। এর মধ্যে চিকিৎসা প্রদান করা হয়েছে ১ হাজার ৮৪৫টি গরুকে। টিকা প্রদান করা হয়েছে ৩৫ হাজার ৫শ গরুকে।
এই রোগে আক্রান্ত গবাদি পশুর চামড়া ফুলে গুটি গুটির সৃষ্টি হয়। পরে এসব গুটি-ফেটে গিয়ে শরীরের বিভিন্ন স্থানে ঘাঁয়ের মতো হয়ে যায়, তারপর আক্রান্ত পশুর জ্বর আসে। এক সময় পশুটি দুর্বল হয়ে ওজন কমে যায় এবং অবশেষে মারা যায়। মশা- মাশির মাধ্যমে এটি ছড়িয়েছে বলে জানান জেলা প্রাণিসম্পদ বিভাগ।
এ রোগ জেলার সকল উপজেলাতে ছড়িয়ে পড়েছে। এ অবস্থায় কোরবানী ঈদকে সামনে রেখে মারাত্মক দুশ্চিন্তায় গরুর খামারীরা।
প্রাণি বিশেষজ্ঞরা বলছেন, গত বছর অক্টোবরে ভারত হয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করা এই আফ্রিকান ভাইরাসটির সংক্রমণ এবার ব্যাপক আকার ধারণ করেছে।
জেলা প্রাণিসম্পদ অধিদফতর থেকে বলা হয়, কয়েক সপ্তাহ ধরে গরুর মধ্যে বিরল এই ভাইরাসটি ছড়িয়ে পড়েছে। এই রোগকে লাম পি স্কিন ডিজিস বলে অভিহিত করছেন প্রাণি বিশেষজ্ঞরা। যা সাধারণত এক ধরনের আরএনএ ভাইরাসের সংক্রমণে হয়ে থাকে।
কৃষক গোলাম রসুল জানান, আমার কয়েকটি গরু এ রোগে আক্রান্ত হলে আমি উপজেলা প্রাণীসম্পদ অফিসে নিয়ে চিকিৎসা করিয়েছি। বর্তমানে আমার গরুগুলো সুস্থ আছে। একইভাবে সিদ্দিকুল ইসলাম ও কৃষক সাখাওয়াত হোসেন জানান, তাদের বেশ কয়েকটি গরু এ রোগে আক্রান্ত হয়। পরে গরুগুলি দুর্বল হয়ে পড়লে উপজেলা প্রাণিসম্পদ অধিদফতরে নিয়ে গিয়ে চিকিৎসা করালে গরুগুলো সুস্থ হয়ে ওঠে।
জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা কৃষিবিদ আলতাফ হোসেন জানান, এ রোগের সুনির্দিষ্ট কোনও মেডিসিন নেই। এর চিকিৎসায় গোটপক্স ভ্যাক্সিন প্রয়োগে ফল পাওয়া যাচ্ছে আক্রান্ত পশুর লক্ষণ অনুযায়ী আমরা প্যারাসিটামল, এন্টিহিস্টামিন ও সোডা প্রয়োগ করে ইতিবাচক ফল পাচ্ছি। তবে আক্রান্ত পশু সুস্থ হতে এক থেকে দেড় মাস সময় লাগাতে পারে। এছাড়াও এ রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ানোর জন্য জিংক ও ভিটামিন সি দেওয়া হচ্ছে।
বিডি প্রতিদিন/হিমেল