প্রবাসী স্বামীকে তালাক দিয়ে প্রতিবেশী ভাগ্নেকে বিয়ে করার দুই বছরেও পূর্বের স্বামীর ঘর ছাড়েনি বিউটি আক্তার নামের লক্ষ্মীপুরের এক নারী। বিষয়টি কেউ না জানলেও শুক্রবার (০৯ অক্টোবর) সকাল থেকে এ নিয়ে সর্বত্রে তোলপাড় চলছে। ঘটনাটি ঘটেছে পৌর শহরের ১৫ নং ওয়ার্ডের করইতলা এলাকায়। এদিকে স্থানীয়দের তোপের মুখে ভাগ্নে ফরিদ হোসেন এখন পলাতক।
জানা যায়, ২০১৮ সালের ৩০ জুলাই লক্ষ্মীপুর আদালতে নোটারী পাবলিকের মাধ্যমে বিউটি তার প্রবাসী স্বামী নজির আহমদকে তালাক দেয়। ওই সময় নজির বাড়িতেই ছিল কিন্তু তার কাছ থেকে তালাকের বিষয়টি গোপন রাখা হয়। একই বছরের নভেম্বরে নজির সৌদিতে যান। পরে ২০১৮ সালের ২০ নভেম্বর লক্ষ্মীপুর আদালতে নোটারী পাবলিকের মাধ্যমে বিউটি ১০ লাখ টাকা দেনমোহরে প্রতিবেশী ফরিদকে বিয়ে করেন। বিয়ের ঘটনাটিও বিউটি প্রবাসী নজিরের কাছ থেকে লুকিয়ে রাখে। নজিরের বাবা মা দুইজনই মৃত। এ সুযোগে ফরিদের সঙ্গে বিয়ের পরও নজিরের বসতঘরে থেকেই বিউটি তার সঙ্গে প্রতারণা করে আসছে। একই সঙ্গে নজিরের দেওয়া স্বর্ণালংকারসহ অন্তত ১৫ লাখ টাকা স্বামী ফরিদসহ বিউটি হাতিয়ে নেন বলে অভিযোগ।
সম্প্রতি ফরিদের পরিবার তাকে (ফরিদকে) বিয়ে করানোর জন্য মেয়ে দেখতে থাকে। এমন পরিস্থিতিতে বিউটি তার (ফরিদের) স্বজনদের ডেকে বিয়ের ঘটনাটি জানিয়ে দেন। বিষয়টি জানাজানি হলে এলাকাজুড়ে শুরু হয় তোলপাড়। গণমাধ্যম কর্মীরাও ছুটে যান ওই বাড়িতে।
এসময় গণমাধ্যমকর্মীদের কাছে ঘটনাটি স্বীকার করে বিউটি আক্তার বলেন, ফরিদ ও তার বোন রোকেয়া আমার সঙ্গে প্রতারণা করেছে। আমাকে অন্য কথা বলে তালাক ও কাবিননামায় স্বাক্ষর নিয়েছে। আমি তাকে স্ব-ইচ্ছায় বিয়ে করিনি। বিভিন্ন সময় আমাকে ফাঁদে ফেলে নজিরের দেওয়া টাকা ও স্বর্ণালংকার ফরিদ হাতিয়ে নিয়েছে।
এ ব্যাপারে মুঠোফোনে নজির জানান, দুই বছর আগে তালাক দিয়ে আমার ঘরে থেকে বিদেশে কষ্টে অর্জিত লাখ লাখ টাকা নিয়ে বিউটি আমার সাথে প্রতারণা করেছে। এ ঘটনার বিচার দাবি করেন প্রবাসী নজির। ঘটনাটি অনাচার ব্যাভিচার উল্লেখ করে একই দাবি জানান নজিরের স্বজন ও স্থানীয় এলাকাবাসী। এ ব্যাপারে ফরিদের বক্তব্য জানতে তাকে পাওয়া যায়নি। তবে ফরিদের মা নুরজাহান বেগম জানান, ছেলের বিয়ের বিষয়ে কিছুই জানতেন না তিনি।
এ ব্যাপারে লক্ষ্মীপুর পৌরসভার কাউন্সিলর আনোয়ার হোসেন শাহী জানান, এক নারী অবৈধভাবে দুই স্বামীর সংসার করছে, ঘটনাটি ন্যাক্কারজনক। এলাকায় ফরিদের নানা কুকর্ম রয়েছে জানিয়ে তার শাস্তি কামনা করেন এ জনপ্রতিনিধি।
এ ব্যাপারে অতিরিক্ত জেলা পুলিশ সুপার রিয়াজুল কবির বলেন, ঘটনাটি শুনেছি। সামাজিক শৃঙ্খলা বজায় রাখতে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হচ্ছে। লিখিত অভিযোগ পেলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
বিডি প্রতিদিন/হিমেল