৩ ডিসেম্বর, ২০২০ ১৪:৪৪

বরিশালে ধর্ষণের পর হত্যার দায়ে আসামির ফাঁসি

নিজস্ব প্রতিবেদক, বরিশাল:

বরিশালে ধর্ষণের পর হত্যার দায়ে আসামির ফাঁসি

বরিশাল নগরীর কাশিপুরে তৃতীয় শ্রেণির এক ছাত্রীকে অপহরণের পর ধর্ষণ ও হত্যা করে লাশ গুমের মামলায় আসামিকে ফাঁসির আদেশসহ যাবজ্জীবন ও ৭ বছর কারাদণ্ড দেয়া হয়েছে। বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ১১টার দিকে বরিশালের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক মো. আবু শামীম আজাদ এ রায় ঘোষণা করেন। রায় ঘোষণার সময় দন্ডপ্রাপ্ত আবুল কালাম আজাদ ওরফে কালু ট্রাইব্যুনালে উপস্থিত ছিলেন। কালু নগরীর কাশিপুর গণপাড়া এলাকার বাসিন্দা। রায় ঘোষণার পরপরই কঠোর নিরাপত্তার মধ্য দিয়ে আসামিকে কারাগারে প্রেরণ করে পুলিশ। 

এই রায়ে সন্তোষ প্রকাশ করেছেন বাদী পক্ষের আইনজীবী। অপরদিকে দ্রুত ফাঁসি কার্যকর করার দাবি জানিয়েছে শিশুটির পরিবার। 

মামলার বিবরণে জানা গেছে, ২০১৮ সালের ১১ মার্চ নগরীর গণপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের তৃতীয় শ্রেণির ছাত্রী সীমা আক্তার বিদ্যালয়ের শৌচাগার (টয়লেট) বন্ধ থাকায় স্কুল সংলগ্ন আসামী কালুর বাড়ির শৌচাগারে যায়। এ সময় কালু সিমাকে অপহরণ করে নিজ ঘরে নিয়ে ধর্ষন করে। পরে ধর্ষনের ঘটনা ফাঁস হওয়ার ভয়ে সে সিমাকে হত্যা করে লাশ বস্তাবন্দি করে স্থানীয় একটি গোরস্থানের মধ্যে লুকিয়ে রাখে। সিমা নিখোঁজ হওয়ার ২ দিন পর ১৩ মার্চ ওই গোরস্থান থেকে সিমার বস্তাবন্দি লাশ উদ্ধার করে পুলিশ।

এ ঘটনায় নিহতের মা মাহামুদা বেগম বাদী হয়ে ওই দিনই (১৩ মার্চ) নগরীর বিমান বন্দর থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। পুলিশ ওইদিনই সন্দেহজনকভাবে কালুকে আটক করে। পুলিশের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে কালু শিশু সিমাকে ধর্ষনের পর হত্যা করে লাশ গুম করার কথা স্বীকার করে। পরে শিশুটি ধর্ষন ও হত্যার পর লাশ গুমের কথা স্বীকার করে আদালতে স্বীকারক্তিমূলক জবানবন্দি দেয় কালু। একই বছরের ৩০ সেপ্টেম্বর আদালতে এই মামলার অভিযোগপত্র দেন তদন্ত কর্মকর্তা পুলিশ পরিদর্শক আব্দুর রহমান মুকুল। 

পরে ট্রাইব্যুনালে ১০ জনের সাক্ষ্যগ্রহন শেষে শিশু সিমাকে অপহরনের পর ধর্ষন ও হত্যা করে লাশ গুমের চেষ্টার অভিযোগ প্রমানিত হওয়ায় বরিশালের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল আসামি কালুকে ফাঁসির আদেশসহ যাবজ্জীবন ও ৭ বছর কারাদন্ড দেন। 

ট্রাইব্যুনালের স্পেশাল পাবলিক প্রসিকিউটর ফয়জুল হক ফয়েজ জানান, উপরোক্ত দন্ড ছাড়াও ট্রাইব্যুনাল আসামীর সম্পদ বাজেয়াপ্ত করে দেড় লাখ টাকা ভিকটিমের পরিবারকে দেয়ার নির্দেশ দিয়েছেন। তিনি এই রায়ে সন্তোষ প্রকাশ করেন।  
দ্রুত রায় কার্যকর করার দাবি জানিয়েছেন নিহত শিশুর বাবা আব্দুল জব্বার এবং মামলার বাদী ও নিহতের মা মাহামুদা বেগম।

বিডি প্রতিদিন/ মজুমদার 

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর