লালমনিরহাটের পাটগ্রাম উপজেলার বুড়িমারীতে ইউনিয়ন পরিষদ ভাঙচুর করে, সেখান থেকে নিয়ে এসে, পিটিয়ে শহিদুন্নবী জুয়েল নামের এক ব্যক্তিকে হত্যার পর মরদেহ পোড়ানোর ঘটনায় করা মামলায় আরও চারজনের দুই দিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত। এ নিয়ে এখন পর্যন্ত এ ঘটনায় করা মামলায় ২০ জনের রিমান্ড মঞ্জুর করা হলো।
রবিবার বিকালে আমলি আদালত-৩ এর বিচারক সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ফেরদৌসী বেগম এ রিমান্ড মঞ্জুর করেন। এর আগে শনিবার (৫ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় ওই একই আদালতে তাদের সোপর্দ করে তিনদিনের রিমান্ড আবেদন করে পুলিশ।
রিমান্ডপ্রাপ্তরা হলেন পাটগ্রামের বুড়িমারী ইউনিয়নের কামারপাড়া গ্রামের জুয়েল হোসেনের ছেলে মোতাহার হোসেন (২১), একই গ্রামের সহিদার রহমানের ছেলে আমির হোসেন (৩০), বুড়িমারী লাইনেরপাড় গ্রামের জুয়েল রানার ছেলে বিপ্লব হোসেন লিমন (১৯) ও একই গ্রামের বানার উদ্দিনের ছেলে আতিয়ার রহমান পাইয়া (৩৫)।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা জেলা গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশের উপ-পরিদর্শক (এসআই) আনোয়ার হোসেন বলেন, শহিদুন্নবী জুয়েল হত্যায় দায়ের করা হত্যা মামলা, পুলিশের ওপর হামলা ও বুড়িমারী ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) ভবনে হামলার মামলায় অজ্ঞাতনামা আসামি হিসেবে গত ৪ ডিসেম্বর দিনগত রাতে ওই চারজনকে গ্রেফতার করা হয়। তদন্তে ইউনিয়ন পরিষদ ভাঙচুরের ঘটনায় তাদের সম্পৃক্ততা পাওয়ায় ভাঙচুর ও লুটপাটের মামলায় তাদের গ্রেফতার দেখিয়ে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য শনিবার প্রত্যেকের তিনদিন করে রিমান্ড আবেদন করা হয়। রবিবার আদালত শুনানি শেষে চার আসামির প্রত্যেককে দুদিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেন। এ নিয়ে এখন পর্যন্ত বিভিন্ন মেয়াদে ২০ জনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত। যার মধ্যে শেষের চারজন ইউনিয়ন পরিষদ ভাঙচুর ও লুটপাট মামলায়। অন্য ১৬ জনকে হত্যা মামলায় রিমান্ডে নেওয়া হয়।
জুয়েল হত্যার ঘটনায় দায়ের করা ৩ মামলায় পুলিশ ৪৪ জনকে গ্রেফতার করেছে। এর মধ্যে হত্যা মামলায় ১৬ জনকে বিভিন্ন মেয়াদে রিমান্ড নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করে পুলিশ। যার মধ্যে মূলহোতা বুড়িমারী ইউনিয়ন শ্রমিক লীগের সভাপতি আবুল হোসেন ওরফে হোসেন ডেকোরেটর এবং মসজিদের খাদেম জোবেদ আলীসহ ছয়জন স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন বলেও নিশ্চিত করেন জেলা গোয়েন্দা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ওমর ফারুক।
গত ২৯ অক্টোবর রাতে পাটগ্রাম উপজেলার বুড়িমারী ইউনিয়ন পরিষদ ভাঙচুর করে যেখান থেকে ওই যুবককে বের করে নিয়ে হত্যা করা হয়। নিহত যুবক সাহিদুন্নবী জুয়েল রংপুর শহরের শালবন মিস্ত্রিপাড়ার আব্দুল ওয়াজেদ মিয়ার ছেলে। তিনি রংপুর ক্যান্টনমেন্ট পাবলিক স্কুল অ্যান্ড কলেজের সাবেক গ্রন্থাগারিক এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) সাবেক ছাত্র ছিলেন। গত বছর চাকরিচ্যুত হওয়ায় কিছুটা মানসিক ভারসাম্য হারিয়ে ফেলেন তিনি।
বিডি প্রতিদিন/জুনাইদ আহমেদ