বগুড়ার শিবগঞ্জে এক গৃহবধূকে ধর্ষণ চেষ্টার মামলা না নিয়ে পাল্টা তাকে যৌনকর্মী হিসেবে আদালতে চালান দেওয়ার অভিযোগে শিবগঞ্জ থানার ওসি বদিউজ্জামান ও এসআই রতন কুমারের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা হয়েছে। রবিবার বিকেলে বগুড়া জেলা ও দায়রা জজ আদালতে মামলাটি নথিভুক্ত হয়। বিচারক মামলাটি আমলে নিয়ে চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটকে নির্দেশ দিয়েছে যে একজন ১ম শ্রেণির ম্যাজিস্ট্রেটকে দিয়ে ঘটনাটি তদন্তের।
বগুড়া জেলা ও দায়রা জজ আদালতে মামলাটি করেন শিবগঞ্জ উপজেলার জানগ্রামের নুর ইসলামের স্ত্রী ছাবিনা বেগম।
মামলায় আসামি করা হয়েছে শিবগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এসএম বদিউজ্জামান ও এস আই রতন কুমারকে।
মামলার অভিযোগে বলা হয়েছে, সিহালী ফকিরপাড়া গ্রামের আবদুর রশিদের ছেলে কলেজছাত্র রামিম হাসান রিমনের সাথে বাদীর মেয়ের প্রেমের সম্পর্ক ছিল। রিমনের পরিবার রাজি না থাকায় বাদী তার মেয়েকে অন্যত্র বিয়ে দেয়। এক বছর হলো সে পাশের গ্রামে স্বামীর বাড়িতেই থাকে। কিন্তু বিয়ের পরও রিমন বাদীর মেয়ের সাথে ফোনে সম্পর্ক অব্যাহত রাখে। তাকে প্রভাবিত করতে নানা রকমের কুপ্রস্তাব দেয়। এরই এক পর্যায়ে স্বামী বাড়িতে না থাকায় রিমন গত ২৪ নভেম্বর দুপুরে বাদীর মেয়ের বাড়িতে ঢোকে এবং তাকে ধর্ষণের চেষ্টা করে। এ সময় পিরব ইউপি সদস্য আবুল কাশেম বাড়িতে ঢুকে রিমন ও বাদীর মেয়েকে আটক করে পুলিশকে খবর দেন। পরে শিবগঞ্জ থানার ওসি এসএম বদিউজ্জামান ও এসআই রতন কুমার রায় দু’জনকে আটক করে নিয়ে যান। থানায় গিয়ে ঘটনার শিকার গৃহবধূ এবং তার মা অভিযুক্ত রিমনের বিরুদ্ধে ধর্ষণ চেষ্টার মামলা করতে চাইলে পুলিশ তা নেয়নি। উল্টো অভিযুক্ত রিমনের সাথে ওই গৃহবধূকেও দন্ডবিধির ২৯০ ধারায় মামলা দিয়ে (পতিতাবৃত্তি) আদালতে চালান দেওয়া হয়। পরে আদালত দু’জনকে জামিনে ছেড়ে দেন।
বাদীর আইনজীবী আব্দুল বাছেদ জানান, ২০১৩ সালের নির্যাতন ও হেফাজত মৃত্যু নিবারণ আইনের ১৩ ও ১৫ ধারা অনুযায়ী নির্যাতনের অভিযোগ আনা হয়েছে।
বগুড়ার শিবগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ এসএম বদিউজ্জামান জানান, তার বিরুদ্ধে একটি মহল মিথ্যা অভিযোগ করছে। যে নারী মামলা করেছে তাকে শারীরিক ও মানসিকভাবে কোন নির্যাতন করা হয়নি। তাকে জনগণ ধরে থানায় দিয়েছিল।
এস আই রতন কুমার বলেন, আমি যা করেছি তা আইনগত ভাবেই করেছি। অভিযুক্ত মেয়ে যে খারাপ তার স্বীকারোক্তি স্থানীয় লোকজন তার কাছে দিয়েছে।
শিবগঞ্জ সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার আরিফুল ইসলাম বলেন, ঘটনাটি স্পর্শকাতর হওয়ায় জেলার উচ্চ পদস্থ কর্মকর্তাদের জানানো হয়েছে। তবে তিনি খোঁজ নিয়ে জেনেছেন যে, মেয়েটি পতিতাবৃত্তি করে না। আর স্বামীর বাড়িতেই থাকে।
বিডি প্রতিদিন/এ মজুমদার