২১ এপ্রিল, ২০২১ ১৩:৫৬

দাম কমায় ক্ষতির মুখে পান চাষিরা

দিনাজপুর প্রতিনিধি:

দাম কমায় ক্ষতির মুখে পান চাষিরা

করোনা সংক্রমণ রোধে চলমান লকডাউনের কারণে দিনাজপুরের হাকিমপুর, বিরামপুর, নবাবগঞ্জে পানের ক্রেতা সংকট দেখা দিয়েছে। এতে করে পানের দাম পূর্বের চেয়ে অর্ধেকে নেমেছে। লকডাউনের ফলে দূর-দূরান্তের পাইকারী ব্যবসায়ীরা আসতে না পারায়, পান নিয়ে বিপাকে চাষিরা। পানের দাম কমায় উৎপাদন খরচ না উঠায়, চরম ক্ষতির মুখে পড়েছেন চাষিরা। এতে উৎপাদন খরচও উঠছে না এবং শ্রমও বৃথা হচ্ছে, এমনটাই বললেন পান চাষীরা।

অথচ অন্যান্য ফসলের চেয়ে দীর্ঘমেয়াদী ফসল হিসেবে পান চাষ তুলনামূলক খরচ কম এবং লাভজনক। মৌসুমে পানের ব্যাপক চাহিদা ও বাজার মূল্য ভাল থাকায় দিনাজপুরের হাকিমপুর, বিরামপুর, নবাবগঞ্জ, খানসামাসহ বিভিন্ন উপজেলার কয়েক গ্রামের মানুষ এই চাষ করে আত্মনির্ভরশীল হয়েছেন। কিন্তু করোনায় লোকসানের মুখে চাষিরা। এ অবস্থায় পান চাষে সরকারী প্রনোদোনা চান তারা।

হিলি বাজারে পান বিক্রি করতে আসা আব্দুস সাত্তার বলেন, পান নিয়ে চাষিরা চরম বিপাকে পড়েছি। পূর্বে প্রতি ৪০ বিরা পান (পোয়া) ৭ থেকে ৮ হাজার টাকা দরে বিক্রি হলেও বর্তমানে তা কমে ২ হাজার ৮শ টাকা। আর যে পান একটু ভালো সেটি ৩ হাজার ৫শ টাকা পর্যন্ত বিক্রি হচ্ছে। আর নতুন চিকন পানের তো কোন দামই নেই। ৮০ টাকা থেকে শুরু করে এক’শ থেকে দেড়শ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। অনেক সময় চাষিরা দাম না পাওয়ায় এসব পান ফেলেও দিচ্ছেন। 

পান চাষি সোহরাব হোসেন জানান, এক বিঘা জমিতে পানের বরজ করেছি তাতে করে আমার খরচ হয়েছে ৩ লাখ ২৫-৩০ হাজার টাকা। শ্রমিক লাগিয়ে বরজ থেকে পান তুলতে মজুরি দিতে হলো ৪শ টাকা আর সেই পান নিয়ে বাজারে বিক্রি করলাম ২শ থেকে ৩শ টাকায়। 

পান কিনতে আসা পাইকার মিলন হোসেন ও আব্দুল আলিম বলেন, পানের দাম কম হওয়ার মূল কারণ হচ্ছে দেশে লকডাউন চলছে। দোকানপাটও বন্ধ রয়েছে। এতে পানের চাহিদা না থাকায় দাম কমছে। তাছাড়া এসব পান দেশের বিভিন্নস্থানে সরবরাহ হতো। গাড়ি বন্ধ থাকায় পাইকার যেমন আসতে পারছে না তেমনি এসব পান পাঠানো যাচ্ছে না। এছাড়া এখন সব পানের বরজে নতুন পান উঠতেছে। এতে করে পানের দাম দিন দিন কমতির দিকে। 

হাকিমপুর উপজেলা কৃষি অফিস জানায়, উৎপাদন খরচ কম ও লাভজনক হওয়ায় হাকিমপুর উপজেলায় গত বছর ২৮ হেক্টর জমিতে আবাদ হলেও এবার তা বেড়ে ৩৬ হেক্টর জমিতে ৩৫৫টি বরজে পানের আবাদ হয়েছে। 

উল্লেখ্য, দিনাজপুরের বিরামপুর, নবাবগঞ্জ, হাকিমপুর, খানসামা উপজেলায় পান চাষ হয়। একবার পান গাছ হলে ১৫-২০ বছর প্রতিনিয়ত পান পাওয়া যায়। পান চাষে উচু বেলে দোআঁশ মাটি বেশ উপযোগি। বাঁশের কঞ্চি ও খড় দিয়ে ঘেড়া আর উপরের ছাউনি দিয়ে তৈরি দেখতে বাড়ির মতো এসব পানের বরজ। 

বিডি প্রতিদিন/ মজুমদার 

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর