১৬ মে, ২০২১ ১১:৫৮

বাড়ি ফিরতে শুরু করেছে কোয়ারেন্টাইনে থাকা যাত্রীরা

বেনাপোল প্রতিনিধি

বাড়ি ফিরতে শুরু করেছে কোয়ারেন্টাইনে থাকা যাত্রীরা

ভারত ফেরত যাত্রীরা আপনজনদের সাথে পারেনি ঈদের আনন্দ ভাগাভাগি করতে। হোটেলের নির্জন কক্ষেই কাটিয়েছে ঈদের সারাটি দিন। জেলা প্রশাসন ও বেনাপোলের মেয়রের পক্ষ থেকে  বিশেষ খাবার সেমাই ফিরনি পোলাও মাংস সরবরাহ করা হলেও অধিকাংশ যাত্রীদের চোখে ছিল কান্না। 

রাজশাহীর একজন আমদানিকারক গোলাম মহিউদ্দিন ভারত থেকে পাথর আমদানি করেন। বেনাপোল চেকপোস্টের হোটেল জুয়েলে তিনি অবস্থান করছেন গত ১৪ দিন। কথা হচ্ছিল ঈদের বিকালে। ছোট বাচ্চাদের জন্য মনটা খারাপ। কোয়ারেন্টাইনে থেকেও নিষ্কৃতি পাচ্ছে না যাত্রিরা। শনিবার থেকে বন্ধ রয়েছে কোয়ারেন্টাইনে থাকা যাত্রীদের বাড়ি ফেরা। এখন থেকে কোয়ারেন্টাইনে থাকা যাত্রীদের ১৫ দিন অবস্থানের পর করোনা নেগেটিভ  সনদ নিয়ে ঘরে ফিরতে হবে।

গত ২৬ এপ্রিল থেকে গতকাল পর্যন্ত দেশে ফিরেছেন ২ হাজার ৮ শ ৬শ ০৩ জন। এদের বেনাপোল সহ খুলনা, কুষ্টিয়া, সাতক্ষীরা, নড়াইলের বিভিন্ন আবাসিক হোটেলে ও শেল্টার হোমে। গাজিরদরগাঁ ও বেনাপোলের বিভিন্ন হোটেল থেকে ছাড়া পেয়ে বাড়ি ফিরে গেছেন ৪শ ০২ জন। শনিবার থেকে ঘরে ফেরা বন্ধ রয়েছে।

এ দিকে কোলকাতাস্থ উপ দূতাবাস থেকে ছাড়পত্র প্রদান বন্ধ থাকায় গত ৪ দিনে বাংলাদেশে এসেছে মাত্র ১২৭ জন। এর মধ্যে বৃহস্পতিবার দেশে ফেরা চাঁদপুরের ফরিদগঞ্জ এলাকার এক করোনা পজিটিভ যাত্রী শুক্রবার সকালে যশোর সদর হাসপাতাল থেকে পালিয়েছে। গতকাল পর্যন্ত তাকে খুঁজে পায়নি পুলিশ। এর আগে যশোর সদর হাসপাতাল থেকে পলাতক ১০ জন করোনা পজেটিভ রোগিদের আটক করে জেলহাজতে দেন আদালত।

বেনাপোল ইমিগ্রেশনের দেয়া তথ্যমতে, শুক্রবার দুপুর পর্যন্ত দেশে এসেছে মাত্র ২ জন। ভারতে আটকে পড়া যাত্রীদের দেশে ফিরে আসা নিয়ে শর্তারোপ করার পর গত ২৬ এপ্রিল থেকে ফিরেছেন মোট ২ হাজার ৮শ ০৩ জন। অপরদিকে বাংলাদেশে আটকা পড়া ২৮০ জন ভারতীয় পাসপোর্টধারি দেশে ফিরে গেছেন।

এ দিকে ২৬ এপ্রিল থেকে ভারত ফেরত যাত্রিদের হেটেলবাসের মেয়াদ শেষ হয় গত মঙ্গলবার। এরপর থেকে শিরু হয় ঘরে ফেরা।

বেনাপোল ইমিগ্রেশনের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আহসান হাবিব জানান, ভারতের করোনার নতুন ভেরিয়েন্ট সংক্রমণ রোধে ২৬ এপ্রিল থেকে দু'দফা ৪ সপ্তাহের জন্য ভারত ভ্রমণে নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। কোলকাতাস্থ ভারতীয় দূতাবাস ১৬ মে পর্যন্ত ভারতে আটকে পড়া যাত্রীদের শর্তযুক্ত ছাড়পত্র প্রদান রেখেছেন।

ভারতে আটকে পড়া নরসিংদীর একযাত্রি জোছনা আজাদ টেলিফোনে বলেন, অসুস্থ এবং বিভিন্ন ধরনের অপারেশন করা ৪/৫ শ রোগি কোলকাতার নিউমার্কেট এলাকার বিভিন্ন হোটেলে অবস্থান করছেন। দেশে ফেরা বন্ধ থাকায় হোটেলের ভাড়া দ্বিগুণ বাড়িয়ে দিয়েছে ভারতীয় হোটেল মালিকরা। শোনা যাচ্ছে, বেনাপোলের হোটেল গুলোতে জায়গা না থাকায় আটকে পড়া যাত্রিদের সোনামসজিদ, হিলি এবং বুড়িমারি চেকপোস্ট দিয়ে দেশে ফেরত পাঠানো হবে।

বিডি-প্রতিদিন/সালাহ উদ্দীন

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর