অতিরিক্ত গাড়ির চাপ, মহাসড়ক সংস্কার ও ঝুঁকিপূর্ণ নলকা সেতু তিন কারণে বঙ্গবন্ধু সেতু পশ্চিমপাড় মহাসড়কে জানজট সৃষ্টি হচ্ছে। কখনো সেতু থেকে নলকা পর্যন্ত ১৫ কিলোমিটার পর্যন্ত থেমে থেমে আবার কখনো তীব্র যানজট দেখা দিচ্ছে। এতে ঢাকায় ফেরত যাত্রীদের চরম ভোগান্তিতে পড়তে হচ্ছে। তবু কর্ম রক্ষায় ট্রাকের খোলা ছাদে রোদ-বৃষ্টিসহ ভোগান্তি নিয়েই কর্মস্থল ঢাকায় ফিরছে শ্রমিকরা।
জানা যায়, রপ্তানীমুখী শিল্প কারখানা খোলার ঘোষণা দেয়ার পরই উত্তরবঙ্গের ১৬ জেলাসহ দক্ষিণবঙ্গের কয়েকটি জেলার শ্রমিক-কর্মচারিসহ চাকরীজীরা ঢাকায় কর্মস্থলে ফিরতে শুরু করে। শুরুতে গণপরিবহন বন্ধ থাকায় ট্রাক-পিকআপ ভ্যান, মোটরসাইকেল ও মাইক্রোবাসে ঢাকামুখে রওনা হয়। পরে গণপরিবহন খুলে দেয়া হলে মহাসড়কটিতে যানবাহনের চাপ বেড়ে যায়।
রবিবার সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত গাড়ির চাপ বেড়ে যাওয়ায় ১৫ কিলোমিটার যানজট দেখা দেয়। এতে উত্তরাঞ্চল থেকে ঢাকাগামী যাত্রীরা চরম দুর্ভোগে পড়ে। বিকেলের দিকে যানজটের তীব্রতা কমে এলেও কচ্চপ গতিতে যানবাহন চলাচল শুরু করে। বিশেষ করে নলকা ব্রিজের দুপাশে এবং কড্ডা থেকে সয়দাবাদ এ দুটি স্থানে সবসময় যানজট লেগেই রয়েছে। স্থানটিতে একমিনিট গাড়ি চললে ২০ মিনিট দাঁড়িয়ে থাকতে হচ্ছে। এ স্থানটুকু পার হতেই দেড় থেকে দুই ঘণ্টা লেগে যাচ্ছে। এদিকে যানজট রোদ-বৃষ্টির ভোগান্তি মাথায় নিয়েই কর্মস্থলে ফিরছে মানুষ। প্রতিটি গাড়িতে গাদাগাদি মানুষ রয়েছে। করোনা সংকট যেন সেখান থেকে উধাও।
গার্মেন্টকর্মী সাহারা খাতুন ও নাজমা খাতুন জানান, সারাজীবন কষ্ট করে যাচ্ছি। রোদ-বৃষ্টি আর কষ্ট মনে হয় না। তবে শিশু সন্তান কাছে থাকায় তাদের খুব কষ্ট হয়। গার্মেন্টস কর্মী নুরজাহান জানান, একটি ট্রাকে প্রায় ১শ জন করে যাচ্ছে এখন করোনা কোথায় গেলো? সরকার একদিকে লকডাউন দেয় আরেকদিকে গার্মেন্টস খুলে দিয়ে আংগোর মতো গরিব শ্রমিকদের কষ্টের মধ্যে ফালায়। যেমন কষ্ট হচ্ছে তেমনি দুই থেকে তিনগুণ বেশি ভাড়া দিতে হচ্ছে। দেখা যাচ্ছে এক মাসের বেতন খরচ করে ঢাকায় যেতে হচ্ছে।
সিরাজগঞ্জ ট্রাফিক পুলিশের পরিদর্শক আব্দুল কাদের জানান, ঢাকামুখী লেনে যাত্রীবাহী ও উত্তরবঙ্গগামী লেনে ফিরতি গাড়ির চাপ রয়েছে। সকাল থেকেই কখনো ধীরগতি, কখনো যানজট ছিল। তিনি জানান, জরাজীর্ণ নলকা সেতুকে কেন্দ্র করেই এমন দুর্ভোগ সৃষ্টি হচ্ছে।
বঙ্গবন্ধু সেতু পশ্চিম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোসাদ্দেক হোসেন জানান, অতিরিক্ত যানবাহনের চাপে সেতুর পশ্চিম গোলচত্বর থেকে কড্ডা পর্যন্ত দফায় দফায় যানজট সৃষ্টি হচ্ছে। বর্তমানে ধীরগতি রয়েছে। পুলিশ যানজট নিরসনে কাজ করছে।
বিডি প্রতিদিন/এ মজুমদার