বগুড়ার ধুনট উপজেলার এলাঙ্গী ইউনিয়ন ছাত্রলীগের পূর্ণাঙ্গ কমিটিতে বিএনপি-জামায়াত পরিবারের সন্তানদের পদ-পদবি দেয়ার অভিযোগে সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে। সোমবার বিকেলে ধুনট মডেল প্রেসক্লাবে লিখিত সংবাদ সম্মেলনে এমন অভিযোগ করেন ওই কমিটি থেকে সদ্য অব্যাহতিপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক সোহেল রানা। এ সময় তার সমর্থক জসিম উদ্দিন, রাব্বি হাসান, সিয়াম কাদেরও, রবিন, নিরব, সোহাগ, শাকিলসহ নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
লিখিত সংবাদ সম্মেলনে সোহেল রানা বলেন, ২০১৯ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর ধুনট উপজেলার এলাঙ্গী ইউনিয়ন ছাত্রলীগের কমিটিতে আমাকে সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত করা হয়। সম্মেলনে স্থানীয় এমপি বীর মুক্তিযোদ্ধা হাবিবর রহমান, বগুড়া জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি নাইমুর রাজ্জাক তিতাস, সাধারণ সম্পাদক অসীম কুমার রায় সহ ধুনট উপজেলা আওয়ামীলীগ ও ছাত্রলীগের বিভিন্ন স্তরের নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন। কিন্তু কিছু দিন আগে ধুনট উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক ফেসবুকের মাধ্যমে ৭ কর্মদিবসের মধ্যে পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠনের নির্দেশ দেন। নির্দেশনা পেয়ে আমি এবং আমার কমিটির সভাপতি সোহানুর রহমান অসীম যৌথভাবে পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠন করে ধুনট উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি-সাধারণ সম্পাদকের কাছে জমা দেই।
কিন্তু গত ২ সেপ্টম্বর ওই পূর্ণাঙ্গ কমিটিতে আমাকে সাধারণ সম্পাদকের পদ থেকে বাদ নিয়ে মোটা অঙ্কের টাকার বিনিময়ে বিএনপি পরিবারের সন্তান জিন্না খানকে গঠনতন্ত্র পরিপন্থীভাবে ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক করা হয়েছে। এছাড়াও কমিটিতে বিএনপি পরিবারের সন্তান ২০১৯ সালের বিস্ফোরক মামলার আসামি খালেকের ছেলে সাগর হাসানকে সহসভাপতি এবং জামায়াত-শিবির পরিবারের খোকন আকন্দের ছেলে শোভনকে যুগ্ন সাধারণ সম্পাদক ও আফরাফ আলীর ছেলে শাকিলকে সাংগঠনিক সম্পাদক করা হয়েছে।
এ ব্যাপারে বগুড়া জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের কাছে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছি। তাই সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে কমিটি বাতিল করে সুষ্ঠ তদন্তের মাধ্যমে প্রকৃত আওয়ামী পরিবারের সন্তানদের নিয়ে ছাত্রলীগের এলাঙ্গী ইউনিয়ন কমিটি গঠনের দাবি জানাই।
তবে এ ব্যাপারে ধুনট উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি জাকারিয়া খন্দকার ও সাধারণ সম্পাদক আবু সালেহ্ স্বপন জানান, ২০১৯ সালে এলাঙ্গী ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সভাপতি পদে সোহানুর রহমান অসীকে সভাপতি এবং সোহেল রানাকে সাধারণ সম্পাদক করে ৫ সদস্য বিশিষ্ট কমিটি ঘোষনা করা হয় এবং তাদেরকে তিন মাসের মধ্যে পূর্ণাঙ্গ গঠন করতে নির্দেশনা দেয়া হয়। নির্দেশনা পেয়ে সোহানুর রহমান পূর্ণাঙ্গ কমিটি জমা দিলেও সাধারণ সম্পাদক সোহেল রানা ব্যর্থ হয়। এ কারনে সোহেল রানাকে কয়েক বার কারণ দর্শানোর প্রদান করেও কোন জবাব পাওয়া যায়নি। এ কারনে দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গের অভিযোগে সোহেল রানাকে স্ব-পদ থেকে অব্যাহিত প্রদান করা হয়।
এরপর গঠনতন্ত্র অনুযায়ী পদাধিকারবলে সিনিয়র যুগ্ন সাধারণ সম্পাদক জিন্না খান ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পায়। এরপর তারা অল্প দিনেই পূর্ণাঙ্গ কমিটি করে জমা দিলে তা অনুমোদন দেয়া হয়। এ কারনে অব্যাহতিপ্রাপ্ত সোহেল রানা দলের ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন করতে বিভিন্ন অপপ্রচার চালিয়ে যাচ্ছে। তবে কমিটিতে বিএনপি পরিবারের কোন সন্তানকে পদ-পদবি দেয়া হলে তা অবশ্যই তদন্ত করে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেয়া হবে বলেও জানান তারা।
বিডি প্রতিদিন/আল আমীন