শিরোনাম
১৮ সেপ্টেম্বর, ২০২১ ১৭:৪৭

বগুড়ায় থ্রি হুইলার বন্ধে দেড় মাসে ৯৯৩ মামলা

আবদুর রহমান টুলু, বগুড়া

বগুড়ায় থ্রি হুইলার বন্ধে দেড় মাসে ৯৯৩ মামলা

বগুড়া শহরের দ্বিতীয় বাইপাস মহাসড়ক দিয়ে চলছে সিএনজিচালিত অটোরিকশা।

বগুড়ায় প্রায় সাড়ে ৫ হাজার সিএনজি গ্যাসে চালিত অটোরিকশার মধ্যে অধিকাংশই অবৈধভাবে চলাচল করছে। বগুড়া জেলার বিভিন্ন সড়কে চলাচলকারী সিএনজিচালিত অটোরিকশার ৯০ শতাংশের কোনো রেজিস্ট্রেশন, ফিটনেস, রুটপারমিট ও চালকের লাইসেন্স নেই।

এছাড়া মহাসড়কে থ্রি হুইলার চলাচলে নিষেধ থাকলেও বগুড়া জেলার মহাসড়কের বিভিন্ন অংশে থ্রি হুইলার চলছে। বগুড়া হাইওয়ে পুলিশ গত দেড় মাসে প্রায় ৯৯৩টি মামলা করেছে।

বগুড়া রোড ট্রান্সপোর্ট অথরিটি (বিআরটিএ) অফিস সূত্রে জানা গেছে, জেলায় প্রায় এক হাজার সিএনজি চালিত থ্রি হুইলার রয়েছে। এগুলোর রুটপারমিট ও ড্রাইভিং লাইসেন্স আছে। অথচ বগুড়া জেলার বিভিন্ন রুটে কমপক্ষে সাড়ে ৫ হাজার সিএনজি চলাচল করে। চলাচলকারী অধিকাংশ সিএনজির সড়কে চলাচলের কোনো বৈধ কাগজপত্র নেই। একটি সিএনজি সড়কে অনুমতি নিয়ে চলতে হলে কাগজ হালনাগাদ করে নিতে হয়।

এর মধ্যে রয়েছে রুটপারমিট, ট্যাক্স, ফিটনেস ফি, ইন্স্যুরেন্সসহ অন্যান্য প্রয়োজনীয় কাগজপত্র। এসব প্রক্রিয়া শেষ করতে একটি সিএনজির পেছনে প্রায় ৮ হাজার টাকা খরচ হয়ে থাকে। এই টাকা জমা না দিয়ে সিএনজি চালক ও মালিক কৌশলে সড়কে সিএনজি চালিয়ে ব্যবসা করে যাচ্ছে। অথচ এই পরিমাণ টাকা জমা দিলে সরকারের রাজস্ব আয় হতো লাখ লাখ টাকা। সরকার এই টাকা রাজস্ব আয় থেকে বঞ্চিত হচ্ছে প্রতি বছর।

জানা যায়, বগুড়া শহরের সাতমাথা, চেলোপাড়া, চারমাথা, বনানী, দত্তবাড়ি বারপুর, মহাস্থানগড় এলাকাসহ পুরো জেলায় অসংখ্য সিএনজি রয়েছে। সিএনজিগুলো দিনের বেলায় শহর থেকে বিভিন্ন রুটে চলাচল করে। এই সিএনজিগুলো শহরের মধ্যে যত্রতত্র স্ট্যান্ড গড়ে যানজটের সৃষ্টি করেছে। বৈধ কাগজপত্র না থাকার সুযোগে সিএনজি চালক মালিকদের কাছ থেকে এক শ্রেণির সুবিধা আদায়কারী সংস্থা নিজেদের ফায়দা লুটছে। আবার বেশ কিছু সিএনজি অবৈধভাবে বগুড়া শহরে চলাচল করে রাজনৈতিক প্রভাবে। মহাসড়ক হয়ে ধুনট, শেরপুর উপজেলাসহ বিভিন্ন স্থান দিয়ে চলাচল করছে।

বগুড়া জেলা শহরের বনানী সড়ক, দত্তবাড়ি, গোহাইল রোড, বাদুরতলা ও স্টেশন রোডে চলাচলকারী সিএনজি স্ট্যান্ডটির কারণে পুরো শহরে সড়কে থাকে যানজট। জেলার স্টেশন রোডে সরকারি আজিজুল হক কলেজের অবস্থান থাকলেও সিএনজি চলাচল করছে দাপটে। দুর্ঘটনার ঝুঁকিও বাড়িয়ে তুলেছে।

বগুড়া হাইওয়ে পুলিশ সুপারের কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, গত আগস্ট মাসে মহাসড়কে সিএনজি, ইজিবাইক, নছিমন, করিমন, ভটভটি, অটোরিকশাসহ অন্যান্য বিষয়ে মামলা দায়ের হয়েছে ৬৪২টি। আর সেপ্টেম্বরের ১৮ তারিখ পর্যন্ত মামলা দায়ের হয়েছে ৩৫১টি। গত দেড় মাসে ৯৯৩টি মামলা দায়ের করা হয়। এর মধ্যে সিএনজি ৩৫১টি, ইজিবাইক ৩২১, নছিমন ২৬, করিমন ৩৩, ভটভটি ৬৯টি, অটোরিকশা ৬১টি এবং মহাসড়কে আইন অমান্য করায় অন্যান্য ১৩২টি যানবাহনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছে।

বগুড়া ট্রাফিক বিভাগের কর্মকর্তারা জানান, বগুড়া শহরের মধ্যে সিএনজি প্রবেশ নিষেধ করা হয়েছে। নির্ধারিত সময় ছাড়া মূল শহরে সিএনজি প্রবেশ করতে দেওয়া হয় না। হালনাগাদ না থাকা সিএনজি আটক করা হয়। তারপরেও রেজিস্ট্রেশন, ফিটনেস, রুটপারমিট, ড্রাইভিং লাইসেন্স তাদের আটক অভিযান চলছে। 

বাংলাদেশ রোড ট্রান্সপোর্ট অথরিটি (বিআরটিএ) বগুড়ার সহকারী পরিচালকের কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, বগুড়া জেলায় বিভিন্ন রুটে চলছে প্রায় সাড়ে ৫ হাজার সিএনজি। এর মধ্যে ১০ শতাংশ সিএনজির কাগজ রয়েছে। বাকি সিএনজি ও চালকদের কোনো বৈধ কাগজ নেই। হালনাগাদ করার জন্য সিএনজি মালিকদের বিভিন্ন সময়ে বলা হয়েছে। কিন্তু তারপরও তারা হালনাগাদ করেনি।

হাইওয়ে বগুড়া রিজিয়নের পুলিশ সুপার মুনশী শাহাবুদ্দীন জানান, বগুড়া মহাসড়কে দুর্ঘটনারোধে নছিমন, করিমন, ইজিবাইক, ভটভটি, সিএনজিসহ অনুমোদনবিহীন অযান্ত্রিক যানবাহনের বিরুদ্ধে প্রসিউকিউশন দাখিলসহ কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে। মহাসড়কে থ্রি হুইলার রোধকল্পে পুলিশ টহল ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে।

বিডি প্রতিদিন/এমআই

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর