এক চাঞ্চল্যকর ঘটনার অভিযোগ উঠেছে ভারতের উত্তর প্রদেশের গাজিয়াবাদে। বিয়ের পর থেকেই এক তরুণীকে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতনের শিকার হতে হয়েছে বলে অভিযোগ। কারণ, তার স্বামী চেয়েছিলেন স্ত্রীকে বলিউড অভিনেত্রী নোরা ফাতেহির মতো দেখতে হোক। এজন্য স্ত্রীকে প্রতিদিন তিন ঘণ্টা ধরে ব্যায়াম করতে বাধ্য করা হতো। ব্যায়ামে গাফিলতি হলে তাঁকে কয়েকদিন খাবার থেকে বঞ্চিত করা হতো।
অভিযোগকারী তরুণী শানু (২৬) চলতি বছরের ৬ মার্চ বিয়ের পিঁড়িতে বসেছিলেন শিবম উজ্জ্বলের সঙ্গে। বিয়েতে কনের পরিবার প্রায় ৭৬ লক্ষ রুপি খরচ করেছে। যার মধ্যে ছিল ১৬ লক্ষ টাকার গয়না, ২৪ লক্ষ টাকার গাড়ি ও ১০ লক্ষ টাকা নগদ। কিন্তু বিয়ের কিছুদিনের মধ্যেই শানুর সংসারে অশান্তি দেখা দেয়।
শানুর অভিযোগ, স্বামী শিবম একটি সরকারি স্কুলের শারীরিক শিক্ষা শিক্ষক, প্রায়ই তাঁকে কটূক্তি করতেন এবং বলতেন তিনি নাকি নোরা ফাতেহির মতো সুন্দরী স্ত্রী পেতে পারতেন। এমনকি, শিবম নিয়মিত ইউটিউব ও ইনস্টাগ্রামে অশ্লীল ভিডিও দেখতেন।
গৃহবধূকে শাশুড়ি দিয়ে রাখতেন অবিরাম গৃহকর্মে ব্যস্ত, আর শ্বশুর মাঝে মাঝেই বিনা অনুমতিতে ঘরে প্রবেশ করতেন। শ্বশুরবাড়ির পক্ষ থেকে বারবার পণসামগ্রী ও টাকার দাবি আসত বলে অভিযোগ। নতুন পোশাক, দামি ইলেকট্রনিক্স, নগদ অর্থ— না আনতে পারলেই শুরু হতো মানসিক ও শারীরিক নির্যাতন।
সবচেয়ে চাঞ্চল্যকর অভিযোগ— গর্ভবতী হওয়ার খবর জানানোর পরও শ্বশুরবাড়ির পক্ষ থেকে কোনো আনন্দ প্রকাশ পায়নি। বরং শাশুড়ি ও ননদ তাঁকে জোর করে একটি ওষুধ খাওয়ায়। পরে জানা যায় সেটি ছিল গর্ভপাতের ওষুধ। এর পাশাপাশি খাবারের মধ্যে মিশিয়ে দেওয়া হতো মশলা ও টকজাতীয় পদার্থ। অবশেষে অসুস্থ হয়ে পড়লে হাসপাতালে ভর্তি হতে হয় শানুকে। সেখানেই তাঁর গর্ভপাত ঘটে।
১৮ জুন বাবার বাড়িতে আশ্রয় নেন শানু। পরবর্তীতে শ্বশুরবাড়িতে ফিরে গেলে তাঁকে ঢুকতে দেওয়া হয়নি। এমনকি নিজের গয়না ও পোশাকও ফেরত পাননি তিনি।
অবশেষে ১৪ আগস্ট থানায় অভিযোগ দায়ের করেন শানু। তাঁর অভিযোগ— মানসিক, শারীরিক ও আর্থিক নির্যাতন, পণের দাবি, গর্ভপাত ঘটানো এবং বিবাহবিচ্ছেদের হুমকি। তিনি এর সুষ্ঠু তদন্ত দাবি করেছেন।
বিডি প্রতিদিন/নাজমুল