১৮ অক্টোবর, ২০২১ ১২:৫৪

কলেজের শ্রেণী কক্ষের ছাউনি ভাঙা, ক্লাস হচ্ছে লাইব্রেরিতে

নিজস্ব প্রতিবেদক, বগুড়া

কলেজের শ্রেণী কক্ষের ছাউনি ভাঙা, ক্লাস হচ্ছে লাইব্রেরিতে

করোনায় দীর্ঘদিন ধরে বন্ধ থাকায় ও সংস্কারের অভাবে বগুড়ার আদমদীঘির ‘সান্তাহার টেকনিক্যাল এন্ড বিজনেস ম্যানেজমেন্ট কলেজের’ দুটি শ্রেণী কক্ষ ও একটি কমন রুমের ছাউনি ভেঙে পড়েছে। বর্তমানে শিক্ষার্থীদের লাইব্রেরি ও কম্পিউটার ল্যাবে পাঠদান করানো হচ্ছে। ফলে লাইব্রেরি ও কম্পিউটার ল্যাবের কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে। তবে জরাজীর্ণ আধপাকা ভবনের কারিগরি এই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানটির এমন পরিস্থিতি দেখে স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা শুধু প্রতিশ্রুতি দিয়েই দায় সারছেন। 

জানা যায়, ২০০০ সালে প্রতিষ্ঠিত এই কলেজে একটি আধপাকা ভবন নির্মাণ করা হয়। এরপর ২০০২ সালে কলেজটি দুটি (কম্পিউটার অপারেশন ও সাচিবিক বিদ্যা) শাখায় কারিগরি শিক্ষা বোর্ড থেকে পাঠদানের অনুমোদন পায়। ২০০৪ সালে এমপিও ভুক্ত হয়। ২০০৭ সালে আরও একটি (হিসাবরক্ষণ) শাখা চালু হয়। 

মনোরম পরিবেশের এই কলেজটিতে দু’টি শ্রেণী কক্ষ, সাধারণ (কমন) কক্ষ, অধ্যক্ষের কক্ষ, শিক্ষক কমন কক্ষ, অফিস কক্ষ, কম্পিউটার ল্যাব, লাইব্রেরি ও বঙ্গবন্ধু কর্নার মিলে মোট আটটি কক্ষ রয়েছে। এই এলাকায় কারিগরি শিক্ষার ক্ষেত্রে প্রতিষ্ঠাকাল থেকে কলেজটি ব্যাপক ভূমিকা পালন করে আসছে। একাধিকবার উপজেলা ও জেলা পর্যায়ে শ্রেষ্ঠ শিক্ষার্থী, শ্রেষ্ঠ শ্রেণী শিক্ষক, শ্রেষ্ঠ প্রতিষ্ঠান ও শ্রেষ্ঠ প্রতিষ্ঠান প্রধান হিসেবে নির্বাচিত হয়েছে। 

জানা যায়, উপজেলার সান্তাহার পৌর শহরের খাড়ীর ব্রিজ এলাকায় কোমল দোগাছী মাঠে প্রাকৃতিক পরিবেশে গড়ে তোলা হয়েছে কলেজটি। সেখানে মনোরম পরিবেশে শিক্ষার্থীদের পাঠদান করানো হচ্ছে। তবে করোনা মহামারীর কারণে দীর্ঘদিন ধরে বন্ধ থাকায় জরাজীর্ণ আধপাকা ভবনের কারিগরি এই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানটির দুটি শ্রেণী কক্ষ ও একটি কমন রুমের ছাউনি ভেঙে পড়েছে। এসব শ্রেণীকক্ষের বিকল্প হিসেবে লাইব্রেরি ও কম্পিউটার ল্যাবে পাঠদান করানো হচ্ছে।

দ্বাদশ শ্রেণীর শিক্ষার্থী রুহুল আমীন বলেন, শ্রেণী কক্ষের তুলনায় কম্পিউটার ল্যাব ও লাইব্রেরি ছোট হওয়ায় একদিকে যেমন সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে ক্লাস করা সম্ভব হচ্ছে না। তেমনি অপরদিকে লাইব্রেরিতে নিয়মিত পড়াশোনা ও কম্পিউটার ল্যাবে ব্যবহারিক ক্লাসের বিঘ্ন ঘটছে।

কলেজের নারী বিদ্যোৎসাহী সদস্য ও জেলা পরিষদের সদস্য মঞ্জুয়ারা বেগম জানান, কলেজের পরিস্থিতির কথা শুনে আর্থিক অনুদানের ঘোষণা করেছি। বরাদ্দ পেলে সেখানে দেয়া হবে। কলেজের প্রতিষ্ঠাতা অধ্যক্ষ ছায়ফুল ইসলাম বলেন, কলেজটিতে সুনামের সাথে পাঠদান করানো হলেও অবকাঠামোর দিক থেকে পিছিয়ে রয়েছে। দীর্ঘদিন কলেজ বন্ধ থাকায় কলেজের নিজস্ব তহবিলে অর্থ সংকটের কারণে জরুরি ভিত্তিতে শ্রেণীকক্ষসহ অন্যান্য কক্ষ মেরামত বা সংস্কার করা সম্ভব হচ্ছে না।

এখানে সরকারি ভাবে একটি ভবন বরাদ্দ করা হলে লেখাপড়ার মান আরও বৃদ্ধি পাবে। ইতোমধ্যে জরাজীর্ণ আধপাকা ভবনটির কক্ষগুলো সংস্কারের জন্য আর্থিক বরাদ্দ চেয়ে জেলা প্রশাসক ও জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান বরাবর লিখিত আবেদন করা হয়েছে। কলেজ কমিটির সভাপতি ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শ্রাবণী রায় বলেন, লিখিত আবেদন পেয়ে সেটি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নিকট পাঠানো হয়েছে। 

বিডি প্রতিদিন/আবু জাফর

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর