২৪ অক্টোবর, ২০২১ ০০:৫৬

মাদক মামলায় সাজাপ্রাপ্ত আসামি পেল নৌকা প্রতীক

সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধি

মাদক মামলায় সাজাপ্রাপ্ত আসামি পেল নৌকা প্রতীক

ফিরোজ উদ্দিন

তৃতীয় ধাপের ইউপি নির্বাচনে সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়ায় পঞ্চক্রোশী ইউনিয়নে দ্বিতীয়বারের মতো নৌকা পেয়েছেন মাদক মামলায় সাজাপ্রাপ্ত এক আসামি। তিনি বর্তমান চেয়ারম্যান ফিরোজ উদ্দিন। সাজাপ্রাপ্ত হওয়ায় তাকে সাময়িক বহিষ্কারও করা হয়েছিল। অন্যদিকে এক সময় ইউনিয়ন ছাত্রদলের সাংগঠনিক সম্পাদক শীর্ষ মাদক ব্যবসায়ী ফিরোজ মনোনয়ন পাওয়ায় তৃণমূল আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের মধ্যে চরম ক্ষোভ বিরাজ করছে।

স্থানীয় সরকার বিভাগের উপ-সচিব মো. ইফতেখার আহমেদ উদ্দিন চৌধুরী স্বাক্ষরিত পত্রে উল্লেখ করা হয়েছে, উল্লাপাড়া থানার জিআর ৭৬০/০৩ মামলায় ফিরোজ উদ্দিনকে আদালত ৬ মাসের সশ্রম কারাদণ্ডাদেশ ও ৫০০ টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরও এক বছরের সশ্রম কারাদণ্ডাদেশ দেন। অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড ইউনিয়ন পরিষদ আইন বিরোধী হওয়ায় ইউনিয়ন পরিষদ ২০০৯ আইন অনুযায়ী ফিরোজ উদ্দিনকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়।

কিন্তু চেয়ারম্যান হাইকোর্টে রিট করে আদেশটি স্থগিত করেন। চেয়ারম্যান ফিরোজ উদ্দিন সমস্ত তথ্য গোপন করে তৃতীয় ধাপের ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ থেকে মনোনয়ন ফরম কেনেন এবং নৌকা প্রতীক পান। এদিকে, মাদক মামলায় একজন সাজাপ্রাপ্ত আসামিকে মনোনয়ন দেয়ায় তৃণমূল আওয়ামী লীগের মধ্যে চরম ক্ষোভ বিরাজ করছে।

নেতৃবৃন্দ বলছেন, গত পাঁচ বছরে চেয়ারম্যান ফিরোজ উদ্দিন চেয়ারম্যানের পদ ব্যবহার করে এলাকায় মাদক ব্যবসা পরিচালনা করে লক্ষ লক্ষ টাকার মালিক হয়েছেন। এলাকার মাদকের রাজত্ব কায়েম করে যুব সমাজকে ধ্বংস করছেন। তৃণমূল আওয়ামী লীগ নেতৃবৃন্দ একজন মাদক মামলায় সাজাপ্রাপ্ত আসামির মনোনয়ন বাতিল পূর্বক একজন স্বচ্ছ ব্যক্তিকে মনোনয়ন দেয়ার জন্য দলের সভানেত্রী শেখ হাসিনার কাছে দাবী জানিয়েছেন। 

ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আরিফুর ইসলাম লিটন জানান, মাদক মামলায় সাজার বিষয়টি অত্যন্ত সুকৌশলে গোপন রেখে ফিরোজ উদ্দিন মনোনয়ন হাতিয়ে নিয়েছেন। দীর্ঘদিন ধরে সে এলাকায় মাদক ব্যবসার নিয়ন্ত্রণ করছেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যেখানে মাদক নির্মূলে কঠোর অবস্থানে রয়েছেন সেখানে একজন মাদক ব্যবসায়ী ও মাদক মামলার সাজাপ্রাপ্ত আসামি মনোনয়ন পাওয়ায় আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীসহ সাধারণ মানুষ হতাশ।

তিনি আরও জানান, ফিরোজ উদ্দিন ২০০৮ সালের আগে ইউনিয়ন ছাত্রদলের সাংগঠনিক সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেছেন। ওই সময় নৌকার জোয়ার দেখে সে কৌশলে আওয়ামী লীগে প্রবেশ করে। আওয়ামী লীগে যোগদান করে ক্ষমতার দাপটে অনেক কুকর্ম করে বেড়াচ্ছেন ইউনিয়নে। সম্প্রতি চেয়ারম্যানের পদ ব্যবহার করে মাদক ব্যবসা চালিয়ে এলাকার যুব সমাজকে ধ্বংস করছেন। এ অবস্থায় একজন সাজাপ্রাপ্ত আসামিকে মনোনয়ন দেয়ায় আমরা হতাশ। 
 
এ বিষয়ে ফিরোজ উদ্দিন তার বিরুদ্ধে ওঠা সব অভিযোগ অস্বীকার করে জানান, মাদক মামলায় সাজা হওয়ায় চেয়ারম্যান পদ থেকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছিল। কিন্তু হাইকোর্টে রিট করে তিনি স্বপদে বহাল রয়েছেন।  

বিডি প্রতিদিন/আবু জাফর

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর