রূপালি ইলিশে সয়লাব মাওয়া পদ্মা পাড়ের মৎস্য আড়ত। নিষেধাজ্ঞা শেষ হওয়ার পর বুধবার লৌহজং উপজেলার মাওয়া মৎস্য আড়ত ভরে গেছে ইলিশে। বাঁধ ভাঙা স্রোতের মতো রাজধানীসহ বিভিন্ন অঞ্চল থেকে আসা ক্রেতারা ভিড় করছে এখানে।
রাজধানী ঢাকার কাছে আড়তটি হওয়ায় আশপাশের জেলা থেকে পাইকারদের পাশাপাশি সৌখিন ক্রেতাদের উপচে পড়া ভিড় লক্ষ করা গেছে। তবে পদ্মার এই ইলিশের দাম বেশ চড়া। এক কেজি সাইজের ইলিশ বিক্রি হচ্ছে ১৩০০ থেকে ১৫০০ টাকা পর্যন্ত।
আড়তগুলো এখন ইলিশে সয়লাব হলেও ক্রেতা বেশি থাকায় দামে অনেক বেশি। প্রকারভেদে কেজি প্রতি ইলিশ বিক্রি হচ্ছে ৬০০ থেকে ১৫০০ টাকা পর্যন্ত। এতে জেলে ও আড়তদাররা খুশি হলেও ক্রেতারা পড়েছেন বিপাকে।
মাওয়া মৎস্য আড়তের সাধারণ সম্পাদক মো. চাঁন মিয়া মাদবর বলেন, ভোর রাতে যেভাবে আড়তে ইলিশ এসেছে তাতে বোঝা যাচ্ছে পদ্মা ইলিশে ভরপুর রয়েছে এবছর। ইলিশে ভরে গেছে আড়ত। পাইকারদের পাশাপাশি সৌখিন ক্রেতারাও আসছেন।
তিনি আরও বলেন, আজকে অনেক ক্রেতা থাকায় মাছের দাম বেশি। ক্রেতারা এতদিন ধরে ইলিশ কিনতে না পেরে আজকে আশা করে আসছে ইলিশ কিনবে, তাই দামও চড়া।
এদিকে, ঐতিহ্যবাহী মাওয়া মৎস্য আড়তটি সরিয়ে নিতে হবে ৫ নভেম্বরের মধ্যে। পদ্মাসেতুর কাজের জন্য সেতু বিভাগ আড়তটি সরিয়ে নেওয়ার জন্য নোটিশ দেওয়ায় দুশ্চিন্তায় পড়েছেন আড়তদাররা।
আড়তদার মো. আ. মজিদ শেখ ও হামিদুল ইসলাম জানালেন, প্রায় ৫০ বছর ধরে এখানে আড়তটি রয়েছে। আমারা সরকারের থেকে লিজ নিয়ে এখানে আড়তদারি করছি দীর্ঘদিন। হঠাৎ করে আমাদের ১৫ দিন সময় দিয়ে ৫ নভেম্বরের মধ্যে উঠে যেতে বলেছে। আমাদের এত বড় একটা ব্যবসা-প্রতিষ্ঠান ১৫ দিনের মধ্যে কীভাবে উঠে যাব, আমরা বুঝতে পারছি না।
মুন্সীগঞ্জ মৎস্য অধিদপ্তরের তথ্য বলছে, গেল মৌসুমে ১৯৭২ মেট্রিক টন ইলিশ উৎপাদন হয়েছে। এবছর আরও বেশি ইলিশ উৎপাদনের আশা করছেন তারা। মাওয়ায় বড় ইলিশ ১৩০০ থেকে ১৫০০ টাকায়, এক কেজির ইলিশ ১০০০ থেকে ১২০০ টাকায়, ৭০০ থেকে ৮০০ গ্রামের ইলিশ ৭০০ থেকে ৮০০ টাকায়, ৪০০ থেকে ৫০০ গ্রাম ইলিশ ৬০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
গত বছরের চেয়ে এবার বেশি অভিযান চালানো হয়েছে। তবে ইলিশ নিধনের দায়ে কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে গত বছরের চেয়ে অনেক কম সংখ্যক জেলেকে।
উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা মো. আসাদুজ্জামান আসাদ বলেন, এ বছর ২২ দিনে নিষেধাজ্ঞা কার্যকরে সফলতা ৮০ ভাগের বেশি হবে। এ বছর নিষেধাজ্ঞার মধ্যে মুন্সীগঞ্জের লৌহজং ও মেঘনায় বেপরোয়াভাবে ইলিশ নিধন করা হয়েছে। তবে প্রশাসনের সব সময় নজরদারিতে রাখা হয়েছে।
বিডি প্রতিদিন/এমআই