রিকশা ভ্যানের জন্য বন্ধুদের হাতে খুন হয়েছেন পারভেজ ফকির (২৪)। ওই রিকশা-ভ্যানটি মাত্র ১০ হাজার এক টাকায় বিক্রি করা হয় এক ভাঙ্গারি ব্যবসায়ীর নিকট। পারভেজ হত্যার সাথে জড়িত দুইজন এবং রিকশা-ভ্যান কেনার সাথে জড়িত দুইজনসহ চারজনকে গ্রেপ্তারের পর উদঘাটিত হয় এ হত্যা রহস্য।
শুক্রবার বিকেলে ফরিদপুরের ফারুক হোসেনের আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দী দেন ওই চারজন। জবানবন্দী শেষে আদালতের নির্দেশে তাদের জেলা কারাগারে পাঠিয়ে দেওয়া হয়। পারভেজ ফকির একজন রিক্সা ভ্যান চালক। তিনি মাদারীপুর জেলার শিবচর উপজেলার চর জান্নাত ইউনিয়নের ফকির রণাই মুন্সীকান্দী গ্রামের মো. বাবুল ফকিরের ছেলে।
গত ১৪ অক্টোবর দুপুর আড়াইটার দিকে ফরিদপুরের ভাঙ্গার নাসিরাবাদ ইউনিয়নের দরগা বাজারের সন্নিকটে চরগজারিয়া গ্রমে আড়িয়াল খাঁ নদের পড়ে একটি ধান ক্ষেত থেকে পারভেজের মৃতদেহ উদ্ধার করে ভাঙ্গা থানার পুলিশ।
এ ব্যাপারে গত ১৫ অক্টোবর নিহত পারভেজের বাবা বাবুল ফকির বাদী হয়ে ভাঙ্গা থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। ওই মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ভাঙ্গা থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) আবুল কালাম আজাদ বলেন, তথ্য প্রযুক্তির মাধ্যমে গত বৃহস্পতিবার ভোরে পারভেজ হত্যাকান্ডের সাথে জড়িত শিবচরের রাজারচর ইউনিয়নের গোবিন্দ মাদবরের গ্রামের আজিজুল মুন্সী (২৮) কে গ্রেপ্তার করা হয়। পরে তার দেওয়া তথ্য অনুযায়ী একই ইউনিয়নের শরিফকান্দি গ্রামের হৃদয় মাতবরকে (২৩) গ্রেপ্তার করা হয়। পরে তাদের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী ভাঙ্গা পৌরসভার কাফুরিয়া সদরদী মহল্লার বাসিন্দা ভাঙ্গারী ব্যবসায়ী আব্দুল মোল্লা (৩৬) এবং ভ্যান ক্রেতা ফজলু শেখ (৪০) কে গ্রেপ্তার করা হয়।
স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে আজিজুল মুন্সী জানান, পারভেজ, তিনি এবং হৃদয় পরস্পর বন্ধু। সম্প্রতি তিনি ও হৃদয় ধার দেনা করে ঋণগ্রস্ত হয়ে পড়েন। একজনের কাছ তেকে সুদে টাকাও নেন। সম্প্রতি ওই ব্যক্তি সুদের টাকা পরিশোধ করার জন্য তাদের চাপ দিচ্ছিল। এ অবস্থায় আজিজুল মুন্সী ও হৃদয় পরামর্শ করে পারভেজকে পালাগানের কথা বলে রিক্সা ভ্যানসহ নিয়ে গিয়ে আড়িয়াল খাঁ নদের পাড়ে নিয়ে কোমল পানিতে ঘুমের বড়ি খাইয়ে পরে গলা রশি দিয়ে পারভেজকে হত্যা করে মৃতদেহটি একটি ধান ক্ষেতের মধ্যে গিয়ে রাখেন। পরে পারভেজের চালিত ভ্যানটি ভাঙ্গায় নিয়ে ভাঙ্গারী ব্যাবসায়ী আব্দুল মোল্লার কাছে ১০ হাজার একশ টাকায় বিক্রি করে দেন। ভাঙ্গারী ব্যবসায়ী আব্দুর মোল্লার কাছ থেকে ওই রিক্সা ভ্যানটি ১০ হাজার পাঁচশ টাকায় কিনে নেন ফজলু শেখ।
বিডি প্রতিদিন/এএম