যমুনা নদী পারের অপেক্ষায় পাবনার কাজীরহাট ফেরি ঘাট এলাকায় কয়েক কিলোমিটার দীর্ঘ পণ্যবাহী ট্রাকের জট তৈরি হয়েছে। বৃহস্পতিবার থেকে যানজট তৈরি হতে থাকে। শুক্রবার এ যানজট আরও দীর্ঘ হয়। ফেরি স্বল্পতার কারণে পাবনার কাজীরহাট ফেরি ঘাটে দীর্ঘ যানজটের সৃষ্টি হয়েছে বলে বিআইডব্লিউটিসি কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে। কাজীরহাট আরিচা নৌ রুটে পরিবহনের যে পরিমান চাপ সে তুলনায় আরো ফেরি সংযুক্ত করা দরকার বলেও জানান বিআইডব্লিউটিএ এর সংশ্লিষ্টরা।
কাজীরহাট ফেরিঘাটে গিয়ে দেখা যায়, ঘাট থেকে শুরু করে বাঁধের হাট পর্যন্ত প্রায় ৫ কিলোমিটার ট্রাকের দীর্ঘ সারি। এতে প্রায় ৫ শতাধিক পণ্যবাহী ট্রাক রয়েছে।
শুক্রবার বিকেল ৩ টায় কাজীরহাট ফেরিঘাট থেকে ট্রাক চালক কাজল (৪০) জানান, তিনি সোনা মসজিদ এলাকা থেকে গম বোঝাই করে ঢাকা অভিমুখে যাচ্ছেন। কিন্তু বৃহষ্পতিবার দুপুর থেকে যানজটে পড়ে রয়েছেন।
একই কথা জনালেন, ট্রাক চালক রাজ্জাক। তিনি পাবনার কাশীনাথপুর থেকে রওয়ানা দিয়ে আটকা পড়েছেন। তারাসহ বেশ কিছু চালক ও গাড়ির স্টাফ জানান, তাদের গাড়িতে খাদ্যদ্রব্যসহ ও পশুখাদ্য রয়েছে। সারা রাত তাদের গাড়িতে কাটছে। তারা ফেরিতে ওঠার সুযোগ পচ্ছেন না। ঘাটে ফেরির সংখ্যা বেশি থাকলে তাদের এমন ভোগান্তি হত না বলে জানান।
কাজীরহাট ঘাটে খাবার হোটেল মালিক সালমান হোসেন জানান, তিনি বৃহস্পতিবার থেকেই যানজট লক্ষ্য করছেন। শুক্রবার সে জট দীর্ঘ হয়েছে। গাড়ির চালক, হেলপাররা দীর্ঘ পথ হেঁটে তার হোটেলে খেতে আসছেন। ঘাটে খাবার হোটেল থাকলেও থাকার কোন হোটেল নেই। ফলে গাড়ির লোকজনের কষ্ট বেড়েছে।
কাজীরহাট এর স্থানীয় ব্যবসায়ি আয়ুব আলী জানান, তিনি শুক্রবার সকালে দেখেছেন মূল ঘাট থেকে বাঁধেরহাট পর্যন্ত ৫ কিলোমিটার শুধু ট্রাকের সারি।
বিআইডব্লিউটিসি’র কাজীরহাট এর ম্যানেজার মাহবুবুর রহমান যানজটের কারণ হিসেবে জানান, আরিচা-কাজীরহাট নৌরুটে এখন ৩ টি ফেরি চলাচল করছে। একটি ফেরি নষ্ট হলে খুবই সমস্যায় পরতে হয়। আবার নদীতে নব্যতা সংকট রয়েছে, ফেরিতে অতিরিক্ত লোড করলেও সমস্যায় পড়তে হয়। এই রুটে আরো ৩/৪টি ফেরী প্রয়োজন বলেও তিনি দাবি করেন।
বিআইডব্লিউটিসি কাজীরহাট ঘাট ইনচার্জ খালেদ মোশারফ জানান, ফেরি দ্রুতই লোড আনলোড হচ্ছে। তারপরও যানজট থেকে যাচ্ছে।
আমিনপুর থানার ওসি রওশন আলী জানান, তিনিসহ থানা পুলিশের একটি টিম ঘাট এলাকায় অবস্থান করছেন। তারা শৃঙ্খলা ও নিরাপত্তার বিষয়টি দেখভাল করছেন। তাদের সার্বক্ষণিক দায়িত্ব পালনের জন্য কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি বলে জানান।
বেড়া উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান রেজাউল করিম বাবু জানান, এই নৌরুট দীর্ঘদিন বন্ধ থাকায় বর্তমান নৌ পরিবহন প্রতিমন্ত্রীকে আমরা অনুরোধ করলে তিনি রুটটি চালু করেন। এখন হঠাৎ করে রুটটি জনপ্রিয় হয়ে উঠার কারণে এমন পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। আমরা এলাকাবাসীর পক্ষ থেকে মন্ত্রী মহোদয়ের নিকট ফেরি বৃদ্ধির দাবি জানাবো বলেও জানান তিনি।
বিডি প্রতিদিন/হিমেল