নাটোরের সিংড়া উপজেলার চৌগ্রাম ইউপি নির্বাচনের ভোট গ্রহণে দায়িত্বে থাকা চারজন প্রিজাইডিং কর্মকর্তার বিরুদ্ধে নির্বাচন কারচুপির সম্ভাবনার অভিযোগ এনেছেন বিদ্রোহী প্রার্থী আলতাফ হোসেন। এজন্য তিনি তাদের পরিবর্তনের জন্য জেলা প্রশাসক, রিটার্নিং অফিসার, জেলা নির্বাচন অফিসার ও উপজেলা নির্বাহী অফিসারসহ বিভিন্ন দপ্তর প্রধান বরাবর লিখিত অভিযোগ করেছেন।
লিখিত অভিযোগে বলা হয়, ১০ নম্বর চৌগ্রাম ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে ভোট গ্রহণের জন্য ৯টি কেন্দ্রের প্রিজাইডিং, সহকারী প্রিজাইডিং ও পোলিং অফিসারের তালিকা প্রকাশ করেছেন রিটার্নিং কর্মকর্তা আতিকুর রহমান। কিন্তু তালিকায় যাদের প্রিজাইডিং কর্মকর্তা করা হয়েছে, তাদের বিরুদ্ধে বিগত ইউপি এবং সম্প্রতি সিংড়া পৌর নির্বাচনে ভোট কারচুপি এবং দায়িত্ব অবহেলার অভিযোগ রয়েছে। এছাড়া কেউ কেউ দলীয় পদেও রয়েছেন।
অভিযোগে আরও বলা হয়, মোট ৯ জন প্রিজাইডিং কর্মকর্তার ভেতরে চারজনের বিরুদ্ধে গুরুতর বেশ কিছু অভিযোগ রয়েছে। এর মধ্যে চৌগ্রাম ইউনিয়নের ৩ নম্বর ওয়ার্ডের স্থাপনদীঘি কেন্দ্রে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে সিংড়া কৃষি ডিপ্লোমা ইন্সটিটিউটের অধ্যক্ষ সায়বর আলী আকন্দকে। তার বিরুদ্ধে গত ইউনিয়ন নির্বাচনে ১ নম্বর ওয়ার্ডের হুলহুলিয়া উচ্চ বিদ্যালয় এবং সিংড়া পৌর নির্বাচনে বালুয়া বাসুয়া আব্দুর রহিম বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে প্রিজাইডিং অফিসারের দায়িত্ব পালনকালে দায়িত্ব অবহেলা এবং ব্যাপক কারচুপির অভিযোগ রয়েছে।
৬ নম্বর ওয়ার্ড চৌগ্রাম বিদ্যালয় ও কলেজে প্রিজাইডিং অফিসার হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে স্থাপনদীঘি উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক হাফিজার রহমানকে। নৌকা মার্কা প্রতীকের চেয়ারম্যান জাহেদুল ইসলাম ভোলা যে স্কুলের সভাপতি, তিনি ওই স্কুলের প্রধান শিক্ষক। ফলে নৌকার প্রার্থী তাকে নির্বাচনে কারচুপির কাজে অনুপ্রাণিত করতে পারে বলে অভিযোগ করা হয়েছে।
চৌগ্রাম ইউনিয়নের ৮ নম্বর ভোটকেন্দ্র ক্ষিদ্রবড়িয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে প্রিজাইডিং অফিসার হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে বঙ্গবন্ধু পরিষদের সভাপতি রহমত ইকবাল ডিগ্রি কলেজের প্রভাষক একরামুল হককে। একজন দলীয় ব্যক্তিকে দিয়ে নৌকার প্রার্থী ভোট কারচুপি করানোর সম্ভাবনা রয়েছে বলেও জানানো হয়।
এছাড়া ৫ নম্বর ওয়ার্ড ছোটচৌগ্রাম সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্রিজাইডিং অফিসার হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে জাহাঙ্গীর আলমকে। তার বিরুদ্ধে গত ইউপি নির্বাচনে ৬ নম্বর ওয়ার্ডের চৌগ্রাম উচ্চ বিদ্যালয় ও কলেজ কেন্দ্রে টাকার বিনিময়ে একজন মেম্বার প্রার্থীর ভোট কারচুপির অভিযোগ রয়েছে।
চৌগ্রাম ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি ও বিদ্রোহী প্রার্থী আলতাফ হোসেন বলেন, ভোট গ্রহণের জন্য প্রিজাইডিং অফিসার হিসেবে যাদের নাম দেওয়া হয়েছে, তাদের দ্বারা সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব নয়। নৌকার প্রার্থীকে বিজয়ী করার জন্য আগে থেকেই দলীয় পদ-পদবি লোকদের প্রিজাইডিং অফিসার হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। আমি চারজন প্রিজাইডিং অফিসার পরিবর্তনের জন্য রিটার্নিং অফিসারসহ বিভিন্ন দপ্তরে অভিযোগ দিয়েছি। আশা করছি, তারা সুষ্ঠু নির্বাচনের স্বার্থে অভিযুক্ত প্রিজাইডিং অফিসার পরিবর্তন করবেন।
এ বিষয়ে চৌগ্রাম ইউনিয়নের দায়িত্ব প্রাপ্ত রিটার্নিং অফিসার আতিকুর রহমান বলেন, প্রিজাইডিং অফিসার পরিবর্তন করা সম্ভব না। যাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ দেওয়া হয়েছে, তাদের নামে কোনো সমস্যা দেখছি না। তাছাড়া জেলা নির্বাচন অফিসার বললে তাদের পরিবর্তন করে দেওয়া হবে।
বিডি প্রতিদিন/এমআই