নোয়াখালীতে সুধারাম মডেল থানা বেষ্টনীর মধ্যে পুলিশ মেসে ২৩ বছর বয়সী এক তরুণীকে ধর্ষণের অভিযোগের ঘটনায় তার স্বাস্থ্য পরীক্ষা হয়নি। শনিবার দুপুরে ভিকটিমকে স্বাস্থ্য পরীক্ষা করার জন্য নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে যান সুধারাম থানার পুলিশ পরিদর্শক (অপারেশন) মিজানুর রহমান পাঠানসহ কয়েকজন নারী পুলিশ। তখন তরুণী স্বাস্থ্য পরীক্ষায় অনীহা প্রকাশ করেন।
তরুণী বলেন, ‘স্বাস্থ্য পরীক্ষা করলে নারী-পুরুষ দুইজনকে করতে হবে। আমি ঢাকায় স্বাস্থ্য ক্লিনিকে কাজ করি। কী রিপোর্ট আসবে আমি সব জানি। আমি একা কেন করব? পরে তিনি স্বাস্থ্য পরীক্ষা করবেন না বলে স্বাক্ষর দেন। তবে তখন তার কথাবার্তায় কিছুটা উদাসীনতা দেখা যায়।
শারীরিক পরীক্ষায় তরুণীর রাজি না হওয়ার কথা নিশ্চিত করেছেন নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালের আরএমও ডা. সৈয়দ আবদুল আজিম।
এদিকে শনিবার বিকালে নোয়াখালীর জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে ২২ ধারায় জবানবন্দি দেন ওই তরুণী। জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট নুর জাহানের আদালতে এ জবানবন্দি দেন বলে জানান সুধারাম থানার পুলিশ পরিদর্শক ও মামলার তদন্ত কর্মকর্তা মিজানুর রহমান পাঠান।
এ ঘটনায় জেলা ট্রাফিক পুলিশের এক কনস্টেবলসহ (মুন্সি) ৪ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। তারের আদালতে পাঠানো হয়েছে।
এর আগে শুক্রবার দুপুরে অভিযুক্ত ৪ জনকে আসামি করে সুধারাম মডেল থানায় ধর্ষণের অভিযোগে ভিকটিমের মা বাদী হয়ে মামলা করেন। এর আগে বৃহস্পতিবার বিকালে সুধারাম থানার বেষ্টনীর মধ্যে জেলা ট্রাফিক পুলিশের কোয়ার্টারে বাবুর্চি আবুল কালামের রুমে ওই ধর্ষণের ঘটনা ঘটে। ঘটনার পর রাতেই অভিযুক্ত ৪ জনকে আটক করে পুলিশ।
পরে মামলায় তাদের গ্রেফতার দেখানো হয়। তারা হলেন ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার কসবা উপজেলার মাদলা গ্রামের আব্দুল ওহাবের ছেলে ও নোয়াখালী জেলার সদর ট্রাফিক পুলিশের কনস্টেবল (কং/২৬৪) মকবুল হোসেন (৩২), বেগমগঞ্জ উপজেলার নাজিরপুর গ্রামের মৃত আমান উল্যার ছেলে সিএনজিচালক মো. কামরুল (২৫), সদর উপজেলার দাদপুর গ্রামের মৃত মফিজ উল্যার ছেলে আবদুল মান্নান (৪৯), বেগমগঞ্জ উপজেলার অনন্তপুর গ্রামের আবুল কাশেমের ছেলে নুর হোসেন কালু (৩০)।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা সুধারাম মডেল থানার পুলিশ পরিদর্শক (অপারেশন) মিজানুর রহমান পাঠান মামলার এজহারের বরাত দিয়ে জানান, বৃহস্পতিবার দুপুরে ভিকটিম ঢাকা থেকে ব্যক্তিগত কাজে নোয়াখালী জেলা শহরের মাইজদীতে আসেন। জেলা শহরে অবস্থানকালে তার টাকা-পয়সার সংকট দেখা দেয়। এরপর ভিকটিম তার পূর্বপরিচিত সিএনজি চালক মো. কামরুলের সঙ্গে দেখা করেন। একপর্যায়ে কামরুল ও তার দুই সহযোগী আবদুল মান্নান ও নুর হোসেন কালু ভিকটিমকে সদর ট্রাফিক পুলিশের কনস্টেবল (মুন্সি) মকবুল হোসেনের কাছে নিয়ে যান। তখন তাদের সহযোগিতায় মুন্সি মকবুল হোসেন ভিকটিমকে ট্রাফিক পুলিশের বাবুর্চি আবুল কালামের রুমে নিয়ে ধর্ষণ করেন। ঘটনার পরপরই ভিকটিম পাশের সুধারাম থানা পুলিশকে বিষয়টি জানান।
বিডি প্রতিদিন/জুনাইদ আহমেদ