আর বুঝি বাঁচবো না, কখন যে কি হয়ে যায়! যদি আর জীবিত ফিরতে না পারি। এমন আতঙ্কগ্রস্ত হয়ে পড়েছিলাম। অবশেষে আল্লাহর রহমতে প্রাণে বেঁচে গেছি।
কথাগুলো বলছিলেন ইউক্রেন থেকে ফিরে আসা বাংলার সমৃদ্ধি জাহাজের সেকেন্ড ইঞ্জিনিয়ার টাঙ্গাইলের রবিউল আউয়াল (৩২)। মঙ্গলবার রোমানিয়া থেকে বিমানে বাংলাদেশে আসেন তিনি।
রবিউল আউয়াল টাঙ্গাইলের দেলদুয়ার উপজেলার লাউহাটী ইউনিয়নের পাহাড়পুর গ্রামের হোসেন আলীর ৫ ছেলে-মেয়ের মধ্যে সবার ছোট সন্তান। চট্টগ্রামের বাংলাদেশ মেরিন একাডেমিতে লেখাপড়া শেষ করে ২০২১ সালে বাংলাদেশ শিপিং কর্পোরেশনে চাকরি নেন তিনি।
রবিউল জানান, গত ২১ ফেব্রুয়ারি তুরস্ক থেকে জাহাজ নিয়ে পরদিন ইউক্রেনের অলভিয়া বন্দরে পৌঁছান তারা। সেখানে বুধবার (২ মার্চ) বিকেলে তাদের জাহাজে বোমা হামলা হয়। এতে জাহাজে থাকা ২৯ জনের মধ্যে ১ জন নিহত হন।
তিনি বলেন, জাহাজের ক্যাপ্টেন এবং প্রধান ইঞ্জিনিয়ার মোবাইলের মাধ্যমে শিপিং কর্পোরেশনে যোগাযোগ করতে থাকেন। সরকারের কাছে বিভিন্নভাবে সাহায্য কামনা করতে থাকি। পরে দূতাবাসের সাহায্যে গত বৃহস্পতিবার (৩ মার্চ) আমাদেরকে ট্রাকবোর্ডের মাধ্যমে জাহাজ থেকে বন্দরে আনা হয়।
রবিউল আরও বলেন, শুক্রবার (৪ মার্চ) পর্যন্ত আমরা সেখানে অবস্থান করি। পরদিন শনিবার বাসযোগে আমাদেরকে ইউক্রেন সীমান্ত দিয়ে মলদোভা হয়ে রোমানিয়া নেওয়া হয়। তখন বিশ্বাস আসে, এখন আর যুদ্ধে মারা যাব না।
ইউক্রেনে কয়েক দিন মৃত্যুর ভাবনায় ছিলেন জানিয়ে তিনি বলেন, মঙ্গলবার (৮ মার্চ) রোমানিয়া থেকে বিমানে বাংলাদেশে অবতরণ করি। বুধবার রাতে টাঙ্গাইলের সাবালিয়ার নিজ বাসায় পরিবারের সঙ্গে মিলিত হই। জন্মভূমিতে নিজ পরিবারের কাছে ফিরে এসে কি যে আনন্দ লাগছে; সেটা বলে বোঝাতে পারব না।
তিনি সৃষ্টিকর্তার দরবারে শুকরিয়া এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও শিপিং কর্পোরেশনের কাছে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে বলেন, পোল্যান্ড এবং রোমানিয়া দূতাবাসের অকল্পনীয় সহযোগিতা সত্যিই প্রশংসনীয়। রবিউল কিছু দিন বিশ্রাম নিয়ে রমজানের ঈদের পর চাকরিতে ফিরবেন বলে জানিয়েছেন।
বিডি প্রতিদিন/কবিরুল