দিনাজপুরের বিভিন্ন খুচরা বাজারে দাম বেশি থাকলেও কৃষক তার ক্ষেতের শষা বিক্রিতে আশানুরুপ দাম না পাওয়া বিপাকে পড়েছে বীরগঞ্জের শষা চাষীরা। তারা লোকসানের আশংকায় দিশেহারা। তবে চাষীদের মুনাফা মধ্যস্বত্বভোগীদের পকেটে চলে যাচ্ছে।
জমি থেকে তোলার পর ক্ষেতে ৪০-৫০ টাকায় ৪৫ কেজির ১ বস্তা শসা বিক্রি করছে কৃষক, কয়েক হাত ঘুরে সেই শসা খুচরা বিক্রেতারা বিক্রি করছে ১০ থেকে ২০ টাকা কেজি দরে। প্রতি রমজানেই শসার ব্যাপক চাহিদা থাকলেও এবার নায্য দাম না পাওয়ায় হতাশ হয়ে পড়ছেন চাষীরা। তবে কয়েকদিন আগে ভালো দাম পেলেও বর্তমানে দাম কমে যাওয়ায় পাইকারি বাজারের ব্যবসায়ীরা কৃষকদের কাছ থেকে ১ টাকা থেকে ২ টাকায় প্রতি কেজি শসা কিনছেন। কিন্তু দিনাজপুর শহরের খুচরা বাজারে প্রতি কেজি শষা বিক্রি হচ্ছে ১৫-২০ টাকা।
বীরগঞ্জের প্রাননগর গ্রামের কৃষক সলেমান জানান, ১৫ দিন আগে বাজারে শসার দাম ভালো থাকলেও গত সপ্তাহের শেষ দিকে দাম কমতে শুরু করেছে। রমজানের শুরুতে পাইকারি বাজারে প্রতি কেজি শসা ২০-২৫ টাকায় বিক্রি করলেও গত ৩ দিন ধরে পাইকারি বাজারে কেজি প্রতি ১ টাকা থেকে দেড় টাকায় শসা বিক্রি করছেন তারা।
বীরগঞ্জ উপজেলার কয়েক গ্রামে দেখা যায়, ভাল দামের আশায় অনেক কৃষক এ বছর পূর্বের চেয়ে বেশী জমিতে শসা চাষ করেছেন। বাম্পার ফলন হলেও এখন দাম একেবারে কমে গেছে। প্রতিদিন এলাকার চাষীরা তাদের উৎপাদিত পণ্য বীরগঞ্জ পৌর পাইকারি বাজারে বিক্রির জন্য নিয়ে আসছে।
মাহানপুর গ্রামের কৃষক মো. সাইফুল ইসলাম বলেন, কিছুদিন থেকে সবজির দাম চড়া থাকায় আশা করে শসা চাষ করেছিলাম কিন্তু এখন ১ টাকা কেজি দরে শসা বিক্রি করতে চোখে পানি আসছে। তিনি আরও বলেন, এক বিঘা জমিতে শসা চাষ করতে খরচ হয়েছে ৭০ হাজার টাকা। রমজানে শসার চাহিদা ভালো থাকে তাই ভালো লাভের আশায় চাষ করে লাভ তো দূরে থাক, উল্টো আর্থিক ক্ষতির সন্মুখীন হয়েছি। ইতোমধ্যেই ৩০ হাজার টাকা লোকসান হয়েছে বলে জানান তিনি।
আড়ৎদার সেলিম জামান বলেন, বাজারে চাহিদা না থাকায় শসার দাম নেই বললেই চলে। এছাড়া বাজারে শসার ব্যাপক সরবরাহ রয়েছে। তিনি বৃহস্পতিবার ২ টাকা কেজি দরে শসা কিনেছেন বলে দাবি করেন।
বীরগঞ্জ উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আবু রেজা মো. আসাদুজ্জামান জানান, এবছর বীরগঞ্জ উপজেলায় ২৪৫ হেক্টর জমিতে শসা চাষ করা হয়েছে। এখন পর্যন্ত ২৫ শতাংশ জমির ফসল তোলা হয়েছে। চাহিদার বিপরীতে বাজারে শসার সরবরাহ অনেকগুণ বেশি হওয়ায় এই পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে। এতে কৃষকদের মুনাফা মধ্যস্বত্বভোগীদের পকেটে চলে যাচ্ছে।
বিডি প্রতিদিন/এএ