শেখ রাসেল জাতীয় উদ্যান ও আশুড়ার বিলের উপর আঁকাবাঁকা দৃষ্টিনন্দন কাঠের সেতুতে ঈদের দিন উপচে পড়া ভিড়ে ভেঙে পড়েছে। মঙ্গলবার ঈদের দিন বিকেলে কয়েকজন দর্শনার্থীসহ সেতুটির একাংশ ভেঙে পড়ে যায়। এতে ৭-৮ জন দর্শনার্থী আহত হয়।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, একসঙ্গে অনেক দর্শনার্থী ওঠায় সেতুর একাংশ ভেঙে কয়েকজন বিলে পড়ে যায়। আশুড়ার বিলে ধানের জমি থাকায় তারা খুব বেশি আঘাত পায়নি। সবাই এখন সুস্থ আছেন। ইতিমধ্যে সেতুর ভাঙা অংশ সংস্কার কাজ করা হয়েছে।
রোকনুজ্জামানসহ কয়েকজন দর্শনার্থী জানান, সেতুটি আগে থেকেই ঝুঁকিপূর্ণ ছিল। কিছু খুঁটি, রেলিংয়ের কাঠ নষ্ট হয়ে গেছে। কর্তৃপক্ষের অবহেলায় এমন ঘটনা ঘটেছে।
আশুরার বিল রক্ষা কমিটির সাধারণ সম্পাদক মো. মাহাবুর রহমান জানান, হঠাৎ সেতুর একাংশ ভেঙে কয়েকজন দর্শনার্থী বিলের জমিতে পড়ে যায়। ঈদের দিন একসঙ্গে অনেক দর্শনার্থী সেতুতে ওঠায় এমন ঘটনা ঘটেছে। তবে খবর পেয়ে দ্রুত সেতুর সংস্কার কাজ করা হয়েছে।
ঈদের দিন সকাল থেকে ৯০০ ফিট দৈর্ঘ্য বিশিষ্ট কাঠের সেতুটি পর্যটকদের পদচারণায় মুখর হয়। পর্যটকদের আকর্ষণে কাঠের আঁকাবাঁকা সেতুটি নির্মাণ থেকেই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ব্যাপক প্রচারে মুগ্ধ হয়ে ছুটে আসছেন স্থানীয় ও দেশের বিভিন্ন এলাকার হাজার হাজার পর্যটক। এতে উদ্যানটি সব বয়স, সব শ্রেণির মানুষের মিলন মেলায় পরিণত হয়েছে। বসেছে প্রায় ১০০ খানেক বিভিন্ন প্রকার দোকান। বিভিন্ন এলাকার মানুষ অটো নিয়ে কেউবা মোটরসাইকেল আবার কেউ মাইক্রোবাসে এসে পিকনিক করছেন। নবাবগঞ্জের শেখ রাসেল জাতীয় উদ্যান এবং আশুড়ার বিলকে পর্যটকদের দৃষ্টি আকর্ষণ বাড়াতে আশুড়ার বিলের উপর আঁকাবাঁকা দৃষ্টি নন্দন কাঠের সেতুর নাম রাখা হয় শেখ ফজিলাতুন্নেছা কাঠের সেতু।
জানা যায়, জাতীয় উদ্যানের ভেতরে বিশাল শালবন ছাড়াও আশুড়ার বিল, সীতার কোট বিহার ও বাল্মিকী মনির থান অবস্থিত। জাতীয় উদ্যানের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য আর মনমাতানো নান্দনিক আশুড়ার বিলটিতে বর্ষা মৌসুমে দেশী প্রজাতির মাছ, হারিয়ে যাওয়া জাতীয় শাপলা ফুলের সমারোহ দেখা যায়। জাতীয় উদ্যানের শাল গাছে পাখির অভয়াশ্রমের জন্য মাটির হাঁড়ি ঝুলিয়ে পাখির আবাসস্থানের ব্যবস্থাসহ নেওয়া হয় বিভিন্ন উদ্যোগ। জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর দিনাজপুরের পক্ষ থেকে উন্নতমানের ল্যাট্রিন, বিশুদ্ধ পানির ব্যবস্থাসহ বিদ্যুৎ সংযোগের ব্যবস্থা করে প্রশাসন।
উল্লেখ্য, শেখ রাসেল জাতীয় উদ্যান কর্তৃপক্ষ সূত্রে জানা যায়, নবাবগঞ্জ উপজেলার আশুড়ার বিলকে শেখ রাসেল জাতীয় উদ্যান হিসেবে ২৪ অক্টোবর ২০১০ সালে গেজেট প্রকাশিত হয়। এই জাতীয় উদ্যানের আয়তন ৫১৭.৬১ হেক্টর বা ১২৭৮.৪৯ একর। ২০১৯ সালের ১ জুন দৃষ্টিনন্দন আঁকাবাঁকা কাঠের সেতুটি উদ্বোধন করেন দিনাজপুর-৬ আসনের সাংসদ মো. শিবলী সাদিক।
বিডি প্রতিদিন/এমআই