বিভিন্ন সংস্কৃতি আর ঐতিহ্য বাঙালিকে করে তুলেছে স্ব মহিমায় উজ্জ্বল। বৈশাখ মাসের নানা পার্বণের মধ্যে রাজবাড়ীর বিভিন্ন এলাকায় আয়োজন করা হয় কালী বৈশাখীর পূজা বা দেউল পূজা। এলাকার সনাতন সম্প্রদায়ের যুবকেরা শিব ঠাকুর নিয়ে বাড়ি বাড়ি ঘুরে ঢাক ও কাসির বাজনায় সঙ্গে নানা ভঙ্গিমায় নেচে গেয়ে উদযাপন করে এ পূজা।
মূলত সনাতন সম্প্রদায়ের পূজা হলেও এ পূজাকে ঘিরে আয়োজিত বর্ণাঢ্য আরতি নৃত্য, শ্লোক ও ব্যতিক্রমী চালান খেলার আয়োজনে উপস্থিত থাকে নানা শ্রেণি পেশার মানুষ।
এবছর বালিয়াকান্দি উপজেলার জামালপুর ইউনিয়নের নটাপাড়া গ্রামের সরকার বাড়িতে দেউল পূজার আয়োজন করা হয়। শুক্রবার রাত ১টার দিকে বিভিন্ন ধরণের শ্লোক পরিবেশন করা হয়। স্থানীয় খোকন কুমার বিশ্বাস, প্রানেশ বিশ্বাস সহ বিভিন্ন ব্যক্তিরা শ্লোক পরিবেশন করেন। এসব শ্লোকের মাধ্যমে সনাতন ধর্মের বিভিন্ন সৃষ্টি সম্পর্কে বর্ণনা করা হয়।
শ্লোক শুনতে আসা ভবানী সরকার বলেন, এক সময় অনেক গ্রামে এই কালবৈশাখী পূজা অর্থাৎ দেউল পূজা অনুষ্ঠিত হত। এখন সেভাবে দেখা যায় না। উপজেলায় দুই একটা কালবৈশাখী পূজা হয়। দীর্ঘদিন পর শ্লোক শুনতে আসছি। আমাদের ভালো লেগেছে।
নিয়ম অনুয়ায়ী দেউল পূজাকে ঘিরে ১৬ জন সন্নাসী সেজে বিভিন্ন ধর্মীয় আচারের মধ্য দিয়ে এ পূজা করেন। এ সময় তারা ধুতি, গেঞ্জি আর রুদ্রাক্ষের মালায় সন্যাসী হয়ে থাকেন। নানা পূজা, আচার অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে তারা দেশের শান্তি কামনা করেন। বছরের প্রতিটা দিনের শুভকামনা করেন।
পূজা চলাকালীন সময়ে সন্যাসীদের হাতে থাকে বেতের লাঠি। দেউল ঠাকুরের গায়ে তেল, সিন্দুর, ফুল বেলপাতা ও লালচি দিয়ে সাজানো হয়। সন্যাসীরা দেউল ঠাকুরকে নিয়ে বিভিন্ন বাড়িতে যায়। এ সময় গ্রামের নারীরা ফুল, বেলপাতা, চাউল দিয়ে সন্যাসীদের স্বাগত জানান। অধিবাস, নির্জলা উপবাস, ফল উপবাসসহ ৭দিন নানা নিয়ম-কানুনের মধ্য দিয়ে সন্নাসীরা তাদের সন্নাসব্রত পালন করেন। আগামীকাল রবিবার ভগবতী পূজার মধ্য দিয়ে কাল বৈখাশী পূজা শেষ হবে বলে জানান আয়োজন কমিটি।
বিডি-প্রতিদিন/সালাহ উদ্দীন