নেত্রকোনা জেলার পাহাড়ি নদী সোমেশ্বরীর পানি বিপৎসীমার নিচে নামলেও কলমাকান্দায় উপদাখালী নদীর পানি এখনো বিপৎসীমার ৩৯ সেন্টিমিটার ওপরে রয়েছে। এছাড়া ধনু নদীর পানিও বিপৎসীমার ১৭ সেন্টিমিটার ওপরে রয়েছে।
যে কারণে প্লাবিত এলাকার পানি নামছে ধীরগতিতে। কোনো কোনো বাড়িতে এখনো ঘরের মেঝেতে গড়াগড়ি খাচ্ছে পানি। আবার কোথায় ঘর থেকে নেমে বারান্দায় এসেছে।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী জানান, রবিবার সকালের তথ্যমতে, ধনু নদীর পানি বিপৎসীমার ১৭ সেন্টিমিটার ওপরে। তবে কংশ নদীর পানি নেমে বিপৎসীমার ৫০ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। উপদাখালী নদীর পানিটা বিপৎসীমার নিচে চলে গলে হয়তো বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি হবে।এদিকে ভারী বৃষ্টিপাত কমে গেলেও থেমে থেমে হচ্ছে বৃৃষ্টি। জেলার প্রথম বন্যাকবলিত এলাকা কলমাকান্দা ও দুর্গাপুরে কিছুটা উন্নতির দিকে থাকলেও এখনো আটপাড়া, বারহাট্টাসহ হাওরাঞ্চলের অবস্থা অপরিবর্তিত।
এদিকে আশ্রয় কেন্দ্রে ১ লাখ ১৫ হাজার মানুষ থাকলেও বাকি ৪ লাখের মতো নিজ বাড়িতেই আছেন। জেলা প্রশাসন, পুলিশ প্রশাসন, স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনসহ ব্যক্তি উদ্যোগে ত্রাণ সহায়তা দিলেও গ্রামের ভেতরের সড়কবিচ্ছিন্ন পানিবন্দী মানুষগুলো পাচ্ছেন না এই সহায়তা। সড়কের কাছাকাছি অথবা নদীর ধারের মানুষগুলো পাচ্ছেন স্বাস্থ্যসেবাসহ খাদ্য সহায়তা। আশ্রয়কেন্দ্রগুলোতে নিয়মিত খোঁজ নিয়ে সেনাবাহিনীও সেবা দিচ্ছে। কিন্তু নিজ বাড়িতে আটকে থাকা মানুষগুলো যেতেও পারছেন না কোথাও। তাদের কাছে যাচ্ছেও না কেউ।
যেমন আটপাড়া উপজেলার স্বরমুশিয়া ইউনয়নের মাদল, রূপচন্দ্রপুর মাইঝপাড়াসহ বেশ কটি গ্রামের কয়েকশ পরিবার গত এক সপ্তাহ পার হলেও চোখে দেখেননি কোনো সহায়তাকারীকে। তবে এক বাড়ির মানুষ অপর বাড়ির মানুষকে সহায়তা করছেন বলে জানান তারা।
এদিকে জেলা প্রশাসক অঞ্জনা খান মজলিশ জানান, পানি নামতে হয়তো আরও কয়েকটা দিন সময় লাগবে। তবে আমাদের পর্যাপ্ত পরিমাণ খাদ্য সহয়াতা রয়েছে। আমরা যেখানেই খোঁজ পাচ্ছি সেখানেই দিচ্ছি। আপনারাও যারা খোঁজ পাবেন জানাবেন বলে তিনি সহযোগিতার হাত বাড়ানোর প্রতিশ্রুতি রাখেন।
অপরদিকে জেলার ৭৭টি ইউনয়নের প্রায় সাড়ে পাঁচ লাখ মানুষ পানিবন্দী উল্লেখ করে তিনি বলেন, ৯০টি স্বাস্থ্যসেবা টিম সেবা দিয়ে যাচ্ছে। সেনাবাহিনী রয়েছে আমাদের সাথে। পুলিশ প্রশাসন রয়েছে সার্বিক নিরাপত্তায়। আমরা সকল সংকট কাটিয়ে উঠতে পারবো, ইনশাআল্লাহ।
বিডি প্রতিদিন/জুনাইদ আহমেদ