কুষ্টিয়া থেকে চট্রগ্রামগামী চলন্ত বাসে ডাকাতি ও এক নারী যাত্রীকে গণর্ষণের ঘটনায় বাসের নিয়ন্ত্রণ নেয়া ডাকাত ড্রাইভারকে গ্রেফতার করেছে টাঙ্গাইল ডিবি পুলিশ। বৃহস্পতিবার দুপুরে টাঙ্গাইল পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন টাঙ্গাইলের পুলিশ সুপার সরকার মোহাম্মদ কায়সার।
এদিকে টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতালের সহকারী পরিচালক ডাঃ সাদিকুর রহমান জানান, ভুক্তভোগী ওই নারীর প্রাথমিক ডাক্তারী পরিক্ষায় শরীরে আঘাতের চিহ্ন পাওয়া গেছে। তবে সে গণধর্ষণের শিকার হয়েছে কিনা তা সোয়াপ পরীক্ষার পর নিশ্চিত হওয়া যাবে।
টাঙ্গাইলের পুলিশ সুপার সরকার মোহাম্মদ কায়সার জানান, চলন্তবাসে ডাকাতি ও গণধর্ষণের ঘটনায় একজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। বাকিদের গ্রেফতারে অভিযান চলছে। এ সময় তিনি জানান, মঙ্গলবার দিবাগতরাত থেকে ভোর পর্যন্ত ওই বাসে ডাকাতির পাশাপাশি এক নারী যাত্রীকে গণধর্ষণ করে ডাকাত দল। এরপর বুধবার ভোরে ডাকাতদলের সদস্যরা টাঙ্গাইলের মধুপুর উপজেলার রক্তিপাড়া এলাকায় বাসটি রাস্তার পাশে ফেলে দিয়ে পালিয়ে যায়। গ্রেফতারকৃত আসামির নাম রাজা মিয়া, বাড়ি টাঙ্গাইলের কালিহাতী উপজেলার বল্লা এলাকায়। সে টাঙ্গাইলের যাত্রীবাহী বাস ঝটিকা সার্ভিসের একজন চালক। দীর্ঘদিন যাবত সে টাঙ্গাইল নতুন বাস টার্মিনাল এলাকায় ভাড়া বাসায় বসবাস করে আসছিল।
পুলিশ সুপার জানান, মঙ্গলবার দিবাগতরাতে কুষ্টিয়া থেকে ঈগল পরিবহনের একটি বাস অন্তত ২৪ জন যাত্রী নিয়ে চট্টগ্রামের উদ্দেশেরওনা হয়। পরে রাত ১১টার দিকে সিরাজগঞ্জের একটি হোটেলে খাবারের জন্য বিরতি দেওয়া হয়। সেখান থেকে ৫ মিনিট যাওয়ার পর মূল সড়ক থেকে প্রথমে ৩ জন যাত্রী ওঠেন। কিছু দূর যাওয়ার পর আরও ৪ জন যাত্রী ওঠে। নির্ধারিত স্টেশন ছাড়া কিছু দূর যাওয়ার পর আরও ৩ জনযাত্রী সেজে বাসে উঠে। আনুমানিক রাত ১২টার দিকে যাত্রীরা ঘুমানোর এক পর্যায়ে ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কের টাঙ্গাইলের নাটিয়াপাড়া এলাকা পৌঁছালে ডাকাত দলের সদস্যরা হঠাৎ করে অস্ত্র-শস্ত্র নিয়ে পুরোবাসের নিয়ন্ত্রণ নেন।
টাঙ্গাইলের গোড়াই এলাকায় থেকে বাসটিকে ঘুরিয়ে ডাকাত দলের সদস্যরা কালিহাতী হয়ে মধুপুরে আসে। এরই মধ্যে ডাকাত দলের সদস্যরা সবারহাত-মুখ ও চোখ বেঁধে জিম্মি করেন। এরপর যাত্রীদের কাছে থাকা মোবাইল, টাকা, স্বর্ণালংকার লুট করে নেয়। পরে ডাকাত দলের সদস্যরা গাড়িতে থাকা এক নারীকে ধর্ষণ করে। রাত সাড়ে ৩টার দিকে টাঙ্গাইলের মধুপুর উপজেলার রক্তিপাড়া জামে মসজিদের পাশে বালুর ঢিবির কাছে বাসের গতি থামিয়ে পালিয়ে যায় তারা।
এ ব্যাপারে যাত্রীবাহী বাসে ডাকাতি ও ধর্ষণ মামলা দায়ের করা হয়েছে। কুষ্টিয়ার হেকমত নামে ঐ বাসের যাত্রী বাদী হয়ে মধুপুর থানায় মামলটি দায়ের করেন।
এদিকে গণধর্ষনের শিকার ঐ নারীকে ডাক্তারী পরীক্ষার জন্য টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতালে রাখা হয়েছে।
গ্রেফতারকৃত রাজা মিয়াকে আজ আদালতে হাজির করে ৭ দিনের রিমান্ডের আবেদন করা হবে বলে পুলিশ সুপার সরকার মোহাম্মদ কায়সার জানিয়েছেন।
বিডি প্রতিদিন/এএ