১৮ আগস্ট, ২০২২ ১৭:৫৬
নেত্রকোনায় যতীন সরকারের ৮৭তম জন্মদিন উদযাপিত

যতীন সরকারের জন্মদিনের প্রত্যাশা ‘নতুন প্রজন্মকে বই পড়তে হবে’

নেত্রকোনা প্রতিনিধি

যতীন সরকারের জন্মদিনের প্রত্যাশা ‘নতুন প্রজন্মকে বই পড়তে হবে’

যতীন সরকার। ফাইল ছবি

৮৬ পেরিয়ে ৮৭ বছরে পদার্পন করেছেন জ্ঞানব্রতী যতীন সরকার। জ্ঞানের তাপস, জ্ঞানব্রতী অনেক কিছুই বলেন ভক্তরা। ফুলেল শুভেচ্ছায় সিক্ত হয়েছেন তিনি। আজ বৃহস্পতিবার বিকালে অধ্যাপক যতীন সরকারের বাসভবন নেত্রকোনার সাতপাই এলাকায় উদযাপন করা হয় তার ৮৭তম জন্মদিন। এসময় ভক্ত অনুরাগী শিক্ষার্থীরা ফুল দিয়ে উপহার দিয়ে প্রিয়জনকে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন।

সারাজীবন কলেজে পড়িয়েছেন অধ্যাপক যতীন সরকার। সাদাসিধা জীবনযাপন করেছেন অত্যন্ত সহজ সাবলীলভাবে। আজীবন চেয়েছেন শিক্ষা দিয়ে যেতে। অধ্যাপনা শেষ হলেও থেমে নেই পড়াশোনা করানো। শিক্ষার্থী আর ভক্তদের সাথেই যেন মিশে আছেন এবং আজীবন ধরেই ছিলেন। যখন যে যাচ্ছে তাকে পড়াশোনার তাগিদ দিচ্ছেন। শুধু পাঠ্য বই পড়ে যেতে হবে এমন না। 

জন্মদিন উপলক্ষে অধ্যাপক যতীন সরকার বলেছেন, ‌‘আমি ছোট থেকে বই পড়ি। এখনো পড়ে যাচ্ছি। কিন্তু আজকালকার পোলাপান বই পড়ে না। এটা আমি লক্ষ্য করেছি। তারা মোবাইল ডিভাইসে আসক্ত। আমি আমার এই জন্মদিন উপলক্ষে প্রত্যাশা জানতে চাইলে এটাই বলব যে, নতুন প্রজন্মকে বই পড়তে হবে। তাদের পড়াশোনার মধ্যে নিয়ে আসতে হবে। তাহলে তাদের দ্বারা সমাজ উপকৃত হবে। নয়তো সমাজের অবক্ষয় রোধ করা যাবে না। কেননা বই পড়ার মধ্য দিয়ে মানুষের মানসিক বিকাশ সাধিত হয়। যে যত বই পড়বে সে তত জ্ঞানী হবে। আর জ্ঞান আহরণ ছাড়া জাতি সমৃদ্ধ হবে না। এইটুকুই প্রত্যাশা সমাজের কাছে।’
 
তিনি ১৯৩৬ খ্রিষ্টাব্দে (বাংলা ১৩৪৩ সনের ২ ভাদ্র) নেত্রকোনা জেলার কেন্দুয়া উপজেলার চন্দপাড়া গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। বর্তমানে জেলা শহরের সাতপাই “বানপ্রস্থ” নিজ বাড়িতে বসবাস করছেন। যিনি অধ্যাপক যতীন সরকার নামেই সমধিক পরিচিত, বাংলাদেশের একজন প্রগতিবাদী চিন্তাবিদ ও লেখক। তিনি ময়মনসিংহে নাসিরাবাদ কলেজে বাংলা বিভাগে অধ্যাপনা করেছেন।

তার রচিত গ্রন্থগুলো তার গভীর মননশীলতা ও মুক্তচিন্তার স্বাক্ষর বহন করে। ১৯৬০-এর দশক থেকে তিনি ময়মনসিংহ শহরের সকল সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে জড়িত ছিলেন। তিনি অসাধারণ বাগ্মীতার জন্য জনপ্রিয়তা অর্জন করেন। তার উপস্থিতি শহরের প্রতিটি সাহিত্যিক, সাংস্কৃতিক ও শিক্ষামূলক প্রোগ্রামে অনিবার্য ছিল। তিনি সাংস্কৃতিক উদীচী শিল্পী গোষ্ঠীর সভাপতি ছিলেন। তিনি ময়মনসিংহ প্রেসক্লাবের পদক লাভ করেছেন। ২০০৭ সালে তিনি শাস্ত্র ও সমাজ (শমজ) নামক একটি পত্রিকা শুরু করেছিলেন, ২০০৮ সালে তিনি বাংলা একাডেমি সাহিত্য পুরস্কার লাভ করেন। ২০১০ খ্রিষ্টাব্দে তাকে স্বাধীনতা দিবস পুরস্কার প্রদান করা হয়।

এ পর্যন্ত তিনি ৩৫টি শিরোনামে বই প্রকাশ করেছেন। ২০০৫ সালে প্রকাশিত পাকিস্তানের জন্ম মৃত্যু-দর্শন, তার একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রকাশনা বই। ১৯৮৫ সালে বাংলা একাডেমি কর্তৃক প্রকাশিত বাংলাদেশের কবিগান আরেকটি বই। তার আরো কিছু বই রয়েছে যার মধ্যে প্রথম বই ১৯৮৫ সাহিত্যের কাছে প্রতাশা, বাঙালি সমাজতন্ত্র ঐতিহ্য, সাংস্কৃতিক সংগ্রাম, মানব মন মানব ধর্ম ও সমাজ বিপ্লব, সিরাজউদ্দিন কাশিমপুরী, গল্পে গল্পে ব্যাকরণ এবং চিন্তা চর্চার দিগদিগন্ত।  

বিডি প্রতিদিন/জুনাইদ আহমেদ

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর