ফেনীর ফুলগাজী উপজেলার পূর্বাঞ্চল এলাকার গজারিয়া ও তালবাড়ীয়া এলাকায় প্রবাহিত খালে একটি স্লুইস গেইট বদলে দিতে পারে ওই এলাকার কৃষকের ভাগ্য।
উপজেলার আমজাদহাট ইউনিয়নের তালবাড়িয়া, দক্ষিণ ধর্মপুর, খেজুরিয়া, তারাকুছাসহ সীমান্তবর্তী এলাকায় যে উঁচু এলাকাগুলো রয়েছে সেখানে বোরো মৌসুমে ধান চাষ করা কৃষকদের জন্য অসম্ভব হয়ে পড়েছে। ওই দুইটি স্থান দিয়ে দুটি খাল ভারতের উজান থেকে নদীতে সংযুক্ত হয়েছে।
এ দুটি খালের ভেতরে গজারিয়া খাল একটি গুরুত্বপূর্ণ। ভারতীয় পাহাড়ী অঞ্চলের পানি প্রবাহিত হতে হতেই খালটি সৃষ্টি হয়। এ খালটি ভারত সীমানা থেকে শুরু হয়ে তালবাড়িয়া গজারিয়া হয়ে উত্তর ধর্মপুরের মধ্য দিয়ে কহুয়া নদীতে গিয়ে পতিত হয়। পানির প্রতিবন্ধকতা এবং পানির জমা করে রাখার মতো কোন প্রযুক্তি না থাকার কারণে প্রায় শত শত একর জমিতে বোরো চাষ করতে পারছে না ওই এলাকার কৃষকরা।শীতকালীন সবজি চাষ করতেও অনেক কষ্ট করে অনেক দূর থেকে পানি নিয়ে আসতে হয়। এই অঞ্চলের শত শত কৃষকের দাবি-যদি গজারিয়া ও তালবাড়িয়া এলাকায় একটি স্লুইস গেইট নির্মাণ করে দেওয়া হয় তাহলে স্থানীয় শত শত কৃষকের ভাগ্য পরিবর্তন হবে।
আমজাদহাট ইউনিয়নের তালবাড়িয়া এলাকার কৃষক দেলোয়ার হোসেন জানান, বোরো চাষ এবং শীতকালীন সবজি চাষ করার জন্য যে পরিমাণ পানি প্রয়োজন তার অধিক পানি এ ছড়ায় রয়েছে। কিন্তু এ পানিগুলো আমরা প্রযুক্তিগতভাবে জমা করে রাখতে না পারায় কোনোভাবেই আমরা সুফল ভোগ করতে পারছি না। তাই আমরা দাবি জানাই, ওই স্থানে একটি স্লুইস গেইট নির্মাণ করে দেওয়া হয় তাহলে সাধারণ কৃষকরা অনেক উপকৃত হবে এবং লাভবান হবে।
স্থানীয় ইউপি সদস্য খোকা মিয়া জানান, একটি স্লুইস গেইট নির্মাণ করা হলে উত্তর ধর্মপুর খেজুরিয়া তালবাড়িয়া বসন্তপুরসহ চার গ্রামের কৃষকরা অনেক উপকার পাবে। এ এলাকার মানুষ কৃষি নির্ভর। তাই ধান চাষ ও সবজি চাষ অব্যাহত রাখতে স্লুইস গেইট নির্মাণ করা খুবই জরুরি।
আমজাদ হাট ইউপি চেয়ারম্যান মো. মীর হোসেন মিরু জানান, পানির অভাবে স্থানীয় কৃষকরা চাষাবাদে অনেক কষ্ট পোহাতে হচ্ছে। শুষ্ক মৌসুমে চাষাবাদ থেকে বিরত থাকে তারা। স্থান চিহ্নিত করে একটি প্রকল্পের মধ্য দিয়ে যদি এখানে একটি স্লুইস গেইট নির্মাণের ব্যবস্থা করা হয়। তাহলে অন্তত ওই এলাকার কৃষকগণ তাদের উৎপাদিত খাদ্যশস্য ব্যবহার করে জীবিকা নির্বাহ করতে পারবে।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. মাসুদ রানার কাছে জানতে চাইলে তিনি জানান, ওই এলাকার কৃষকদের চাষাবাদের জন্য পানি মজুদ না থাকায় শুষ্ক মৌসুমে চাষাবাদ করতে পারে না। শত-শত একর জমির পতিত থাকে। এ সংকট নিরসনে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সুদৃষ্টি কামনা করেন তিনি।
বিডি-প্রতিদিন/বাজিত হোসেন