বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আব্দুল মঈন খান বলেছেন, আমরা অনেক রাজনৈতিক দল বাংলাদেশে দেখেছি। পথভ্রষ্ট রাজনৈতিক দল দেখেছি। আওয়ামী লীগ হচ্ছে পথভ্রষ্ট রাজনৈতিক দল। আওয়ামী লীগের যে পরিণতি হয়েছে, তাদের দেশ ছেড়ে পালিয়ে যেতে হয়েছে।
শনিবার দুপুর ১২ টায় রাজশাহীর ভুবন মোহন পার্কে বিএনপির নতুন সদস্য সংগ্রহ ও নবায়ন কর্মসূচি উপলক্ষে ফরম বিতরণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
মঈন খান বলেন, এই সরকারে যারা এসেছে, জনগণ তাদের এই গুরুদায়িত্ব দিয়েছে, এদেশে একটি সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন করে বাংলাদেশকে পুনরায় গণতন্ত্রের পথে ফিরিয়ে আনেন। আমরা জানি এখানে সংস্কারের প্রয়োজন আছে। আমরা জানি দেশে ন্যায় বিচারের প্রয়োজন আছে। কিন্তু প্রশ্ন হচ্ছে, এই সংস্কার এবং বিচার দুইটায় চলমান প্রক্রিয়া। এটা এ রকম নয় যে, আজকে সংস্কার করে দিলাম, সব সংস্কার শেষ হয়ে গেল। আজকে সুবিচার করে দিলাম, সব সুবিচার আজই শেষ হয়ে গেল। সংস্কার ও বিচার প্রক্রিয়া এরকম নয়।
তিনি বলেন, বিগত স্বৈরাচারী সরকার বলত আগে উন্নয়ন, পরে গণতন্ত্র। মনে আছে আপনাদের? এটা ছিল ভুয়া কথা। আজকে কারও মুখে আমরা এটা শুনতে চাই না- আগে সংস্কার হবে, আগে বিচার হবে, পরে গণতন্ত্র হবে, পরে নির্বাচন হবে। এই কথা আজকে আমরা অন্তবর্তীকালীন সরকারের মুখে শুনতে চাই না।
মঈন খান বলেন, এখন সময় হচ্ছে- আমরা শৃংঙ্খলভাবে একটি পরিবেশ-পরিস্থিতি বাংলাদেশে সৃষ্টি করব, যেখানে সুষ্ঠু নিরপেক্ষ নির্বাচন হবে। আমরা ১৬ বছর ধৈর্য রেখেছি। আগামী আরও কয়েক মাস ধৈর্য রাখব। আমরা নিয়মের বাইরে যাব না। আমরা শৃঙ্খলার বাইরে যাব না। আমরা কারও উপরে জোর করে কোনও কিছু চাপিয়ে দেব না। কেননা সেটা গণতন্ত্র নয়, সেটা স্বৈরাচার। স্বৈরাচারের রাজনীতিতে বিএনপি বিশ্বাস করে না। বিএনপি বিশ্বাস করে আইনের শাসনে। আমরা জনগণের শক্তিতে বিশ্বাস করি। আমরা মানুষের ভোটে বিশ্বাস করি। আমরা মানুষের গণতন্ত্রে বিশ্বাস করি। যে যতই ষড়যন্ত্র করুক, বাংলাদেশের মানুষের উপর আমাদের আস্থা আছে। আগামী নির্বাচনে জনগণ তাদের প্রতিনিধিত্ব করার সুযোগ আমাদের দেবে।
তিনি আরও বলেন, বিএনপি একটি ভিন্নধর্মী রাজনৈতিক দল। আমরা অনেক রাজনৈতিক দল বাংলাদেশে দেখেছি। পথভ্রষ্ট রাজনৈতিক দল দেখেছি। আওয়ামী লীগ হচ্ছে পথভ্রষ্ট রাজনৈতিক দল। আওয়ামী লীগের যে পরিণতি হয়েছে, দেশ ছেড়ে পালিয়ে যেতে হয়েছে। আজকে দীর্ঘ ১১ মাস অতিবাহিত হয়েছে। এই ১১ মাসের মধ্যে একজন আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মী কাউকে দেখাতে পারবেন যে, সৎ সাহস নিয়ে বলতে পেরেছে যে, আমরা বাংলাদেশের মানুষের প্রতি অন্যায় করেছি। আমরা ক্ষমা চাই। কেউ বলে নাই।
বিএনপি এই সিনিয়র নেতা বলেন, আজকে সেই রাজনৈতিক দলকে বাংলাদেশের মানুষ প্রত্যাখ্যান করেছে। আপনাদের সতর্ক থাকতে হবে, আপনাদের খেয়াল রাখতে হবে। বিএনপি যেন কোনও দিন আওয়ামী লীগের মত এই ধরনের আচরণ না করে। আমরা মানুষের সেবা করার জন্য রাজনীতিতে এসেছি। আমরা রাজনীতিকে আওয়ামী লীগের মত ব্যবসা হিসেবে নিই নাই। আমরা মানুষের সেবা করব। আমরা সেবার উদ্দেশ্য নিয়েই রাজনীতিতে এসেছি। আপনারা মানুষের সেবা করবেন। মানুষ আপনাদের প্রতিদান দেবে।
অনুষ্ঠানে রাজশাহী মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক এরশাদ আলী ঈশার সভাপতিত্বে বক্তব্য রাখেন রাজশাহী বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক সৈয়দ শাহীন শওকত, মহানগর বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক নজরুল হুদা।
বিডি প্রতিদিন/একেএ