ফিলিস্তিনের অধিকৃত পশ্চিম তীরের কিছু অংশ ইসরায়েলের সঙ্গে সংযুক্ত করার পরিকল্পনাকে ‘লাল রেখা’ হিসেবে আখ্যায়িত করেছে সংযুক্ত আরব আমিরাত। দেশটির রাজনৈতিক বিষয়ক সহকারী মন্ত্রী লানা নুসেইবেহ এক বিবৃতিতে এই কঠোর বার্তা দিয়েছেন।
নুসেইবেহ বলেন, পশ্চিম তীরের সংযুক্তি সংযুক্ত আরব আমিরাতের জন্য একটি লাল রেখা। এটি আব্রাহাম চুক্তির চেতনা ও দৃষ্টিভঙ্গিকে গুরুতরভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করবে। একইসঙ্গে আঞ্চলিক একীকরণের প্রচেষ্টাও থেমে যাবে। সংঘাতের গ্রহণযোগ্য সমাধানের পথে যে ঐক্যমত্য তৈরি হয়েছিল, তাও হুমকির মুখে পড়বে।
২০২০ সালে আব্রাহাম চুক্তির মাধ্যমে সংযুক্ত আরব আমিরাত ২৬ বছরের মধ্যে প্রথম আরব দেশ হিসেবে ইসরায়েলের সঙ্গে সম্পর্ক স্বাভাবিক করে। এরপর বাহরাইন ও মরক্কোও একই পথে হাঁটে। আবুধাবি তখন থেকে তেলআবিবের সঙ্গে বাণিজ্য, প্রতিরক্ষা এবং পর্যটনসহ নানা খাতে সম্পর্ক জোরদার করেছে। এখন ইসরায়েল ও যুক্তরাষ্ট্র চুক্তিটি সৌদি আরবসহ অন্য আরব দেশগুলো পর্যন্ত সম্প্রসারিত করার চেষ্টা চালাচ্ছে।
কিন্তু ইসরায়েলি অতি-ডানপন্থী অর্থমন্ত্রী বেজালেল স্মোট্রিচ গত আগস্টে ঘোষণা দেন, দীর্ঘদিন ধরে বিলম্বিত পশ্চিম তীর সংযুক্তির পরিকল্পনা এবার বাস্তবায়ন করা হবে। এই পদক্ষেপে পশ্চিম তীর বিভক্ত হয়ে পড়বে এবং পূর্ব জেরুজালেম থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যাবে, যা ফিলিস্তিনি রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার ধারণাকে কার্যত ‘কবর’ দেবে।
এই প্রেক্ষাপটে লানা নুসেইবেহ বলেন, আব্রাহাম চুক্তিকে আমরা শুরু থেকেই ফিলিস্তিনি জনগণের প্রতি আমাদের সমর্থন এবং একটি স্বাধীন রাষ্ট্রের জন্য তাদের বৈধ আকাঙ্ক্ষাকে সমর্থন করার একটি উপায় হিসেবে দেখেছি। আমরা ইসরায়েল সরকারকে এই সংযুক্তিকরণ পরিকল্পনা স্থগিত করার আহ্বান জানাচ্ছি।
বিশ্লেষকরা বলছেন, পশ্চিম তীরের অংশ দখল ও সংযুক্তির এই উদ্যোগ এমন এক সময় সামনে এলো, যখন বিশ্বের ১৪০টিরও বেশি দেশ ফিলিস্তিন রাষ্ট্রকে স্বীকৃতি দিয়েছে বা দেওয়ার পরিকল্পনা করছে। চলতি মাসেই জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে ফ্রান্স, যুক্তরাজ্য, কানাডা, অস্ট্রেলিয়া, পর্তুগালসহ বেশ কয়েকটি পশ্চিমা দেশ ফিলিস্তিনকে স্বীকৃতি দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে। এমন প্রেক্ষাপটে ইসরায়েলের এই একতরফা পদক্ষেপ মধ্যপ্রাচ্যে স্থায়ী শান্তির পথ আরও জটিল করে তুলবে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
তথ্যসূত্র : বিবিসি।
বিডি-প্রতিদিন/শআ