রাজশাহী পানি সরবরাহ ও পয়োনিষ্কাশন কর্তৃপক্ষের (ওয়াসা) পাম্প ঘরগুলো থেকে বৈদ্যুতিক তার চুরির হিড়িক পড়েছে। এ অবস্থায় পাম্প এলাকায় পুলিশের টহল বৃদ্ধি করার অনুরোধ জানিয়ে গত সোমবার রাজশাহী মহানগর পুলিশ (আরএমপি) কমিশনারকে চিঠি দিয়েছে ওয়াসা। এরপর রাতেই আরও দুটি পাম্প ঘরে চুরির ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনার পর এলাকাবাসী বলছে-এই চুরি রুধিবে কে?
রাজশাহী সিটি করপোরেশন এলাকার ৩০টি ওয়ার্ডে ওয়াসার পাম্প ঘর আছে ১২৩টি। এসব পাম্পের মাধ্যমে ভূগর্ভস্থ পানি তুলে নগরবাসীর জন্য সরবরাহ করা হয়। পাম্পগুলো থেকে বৈদ্যুতিক তার চুরি হয়ে যাওয়ায় হঠাৎ করেই সংশ্লিষ্ট এলাকায় পানি সরবরাহ বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। এতে ভোগান্তিতে পড়ছেন এলাকার বাসিন্দারা। সবশেষ সোমবার গভীর রাতে নগরীর কাজলা এবং খোজাপুর গোরস্থান সংলগ্ন পাম্প ঘর থেকে তার চুরির ঘটনা ঘটেছে। রাজশাহী ওয়াসা সূত্রে জানা গেছে, আগে বছরে দু-একটি পাম্প ঘর থেকে এভাবে বৈদ্যুতিক তার চুরি হতো। ইদানীং চুরি হচ্ছে নিয়মিত। কয়েক মাস আগে রাজশাহী শারীরিক শিক্ষা কলেজের পাম্প ঘরে প্রথম তার চুরির ঘটনা ঘটে। এরপর বিসিক পাম্প ঘরে চুরি হয়। এ ছাড়া গত ১১ অক্টোবর বুধপাড়া বাইপাস পাম্প ঘর, ১৬ অক্টোবর দায়রাপাক মোড়ের পাম্প ঘর ও ১৯ অক্টোবর খলিল সরকারের মোড়ের পাম্প ঘরে তার চুরি হয়।
এ অবস্থায় পাম্প ঘর এলাকায় পুলিশের টহল বৃদ্ধির অনুরোধ জানিয়ে ওয়াসার সচিব সূবর্ণা রানী সাহা সোমবার আরএমপি কমিশনার মোহাম্মদ আবু সুফিয়ানকে চিঠি দেন। এ চিঠির সঙ্গে চুরি হওয়া পাম্পগুলোর তালিকা এবং শহরের মোট ১২৩টি পাম্প ঘরেরই ঠিকানা দেওয়া হয়। এরপর রাতেই নগরীর কাজলা ও খোজাপুর গোরস্থান সংলগ্ন পাম্পে আবারও তার চুরির ঘটনা ঘটে।
ওয়াসা কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, তাদের জনবল সংকট আছে। তাই রাতে পাম্প ঘরে চালক থাকেন না। এ সুযোগে চোরেরা তার চুরি করছে।
চোর কখনো তালা ভেঙে ঢুকছে। আবার পাম্প ঘরের ছাদ ফুটো আছে ভূগর্ভস্থ পাইপ কিংবা পাম্প তোলার জন্য। সেখানে স্ল্যাব থাকলেও তা সরিয়ে চোরেরা ঢুকে পড়ছে। এরপর বোর্ড থেকে পাম্প পর্যন্ত থাকা সাবমারসিবল তার ও টেন-আরএম তার কেটে নিয়ে যাচ্ছে। এর ফলে পাম্প বন্ধ হয়ে পানি সরবরাহ থেমে যাচ্ছে।
রাজশাহী ওয়াসার উপব্যবস্থাপনা পরিচালক (অর্থ ও প্রশাসন) তৌহিদুর রহমান বলেন, ‘রাতে পাম্প চলে না। এ জন্য অপারেটররা সেখানে থাকে না। আর আমাদের কোনো নৈশপ্রহরীও নেই। তাই রাতে চুরির ঘটনা ঘটছে।
আরএমপির মুখপত্র গাজিউর রহমান বলেন, ‘পাম্পগুলো অরক্ষিত থাকে। এই সম্পদ ওয়াসার। তাই তা রক্ষা করার পরিকল্পনাও তাদের থাকা দরকার। তবে আমরা চুরির যেসব অভিযোগ পেয়েছি সেগুলোর তদন্ত চলছে। ওয়াসা যে ঠিকানাসহ তালিকা দিয়েছে সেসব এলাকায় ইতোমধ্যে পুলিশের রাত্রীকালীন টহল বৃদ্ধি করা হয়েছে।’