সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার শাসনামলে গুম-অপহরণ ও হত্যার ঘটনায় করা পৃথক তিন মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ১৫ সেনা কর্মকর্তাকে গ্রেপ্তার দেখিয়ে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল। এর মধ্যে গুম-অপহরণের দুই মামলায় ১৩ জন এবং জুলাই-আগস্ট অভ্যুত্থানে রাজধানীর রামপুরা এলাকায় ২৮ জনকে গুলি করে হত্যার ঘটনায় করা মামলায় দুই সেনা কর্মকর্তাকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। একই সঙ্গে শেখ হাসিনা ও তার প্রতিরক্ষাবিষয়ক উপদেষ্টা তারিক আহমেদ সিদ্দিকসহ পলাতক আসামিদের বিষয়ে সাত দিনের মধ্যে আত্মসমর্পণের নির্দেশ দিয়ে পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করতে বলা হয়েছে। বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল-১ গতকাল সকাল ৮টার দিকে এ আদেশ দেন। গুম-অপহরণের দুই মামলায় পরবর্তী শুনানির জন্য আগামী ২০ নভেম্বর এবং রামপুরায় গুলি করে হত্যার ঘটনায় করা মামলার পরবর্তী শুনানির জন্য আগামী ৫ নভেম্বর দিন রেখেছেন ট্রাইব্যুনাল। এ ১৫ সেনা কর্মকর্তার মধ্যে ১৪ জন কর্মরত। একজন এখন অবসরকালীন ছুটিতে রয়েছেন। এর আগে কঠোর নিরাপত্তা বলয়ের মধ্যে গতকাল সকাল ৭টার দিকে ‘বাংলাদেশ জেল-প্রিজনভ্যান’ লেখা সবুজ রঙের শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত গাড়িতে ট্রাইব্যুনালে হাজির করা হয় আর্মি হেফাজতে থাকা ১৫ সেনা কর্মকর্তাকে। সবাই ছিলেন সাধারণ পোশাকে। সকাল ৭টার আগেই অফিসে আসেন ট্রাইব্যুনালের কর্মকর্তা-কর্মচারীরাও। পরে সকাল ৮টা ৫ মিনিটে এজলাসে ওঠেন বিচারকরা। এরপর চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম কার্যতালিকা অনুযায়ী হাজির করা আসামিদের বিষয়টি উল্লেখ করলে নাম ডেকে আসামিদের উপস্থিতি নিশ্চিত করে আদেশ দেন ট্রাইব্যুনাল। সকাল সাড়ে ৮টার মধ্যে ট্রাইব্যুনালের কার্যক্রম শেষ হলেও সকাল ১০টার দিকে একই প্রিজনভ্যানে আসামিদের নিয়ে যাওয়া হয়। পরে কারা অধিদপ্তর জানায়, গ্রেপ্তারকৃত সেনা কর্মকর্তাদের ঢাকা ক্যান্টনমেন্টে স্থাপিত কারা অধিদপ্তরের সাব-জেলে রাখা হবে।
এদিন ট্রাইব্যুনালে আসামিপক্ষের আইনজীবীদের ওকালতনামা দাখিলের পাশাপাশি সেনা কর্মকর্তাদের জামিন আবেদনও করা হয়েছে। পরে ওকালতনামা মঞ্জুর করে জামিন আবেদন নথিভুক্ত রেখে পরবর্তী তারিখে শুনানির জন্য রেখেছেন ট্রাইব্যুনাল। ১৫ সেনা কর্মকর্তার পক্ষে ওকালতনামা দাখিল করা আইনজীবীরা হলেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ব্যারিস্টার এম সারোয়ার হোসেন, আইনজীবী মেজবাউল হক, সালাউদ্দিন রিগ্যান।
এদিন চিফ প্রসিকিউটর ছাড়াও প্রসিকিউশনের পক্ষে প্রসিকিউটর গাজী এম এইচ তামীম, ফারুক আহমদ, মইনুল করিম প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
গুম-অপহরণের পর র্যাবের টাস্কফোর্স ইন্টারোগেশন (টিএফআই) সেলে আটকে রেখে নির্যাতনের মামলায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও সাবেক প্রতিরক্ষাবিষয়ক উপদেষ্টা তারিক আহমেদ সিদ্দিকসহ মোট আসামি ১৭ জন। এ মামলায় যে ১০ জনকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে তারা হলেন- র্যাবের সাবেক অতিরিক্ত মহাপরিচালক (অপস) ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. জাহাঙ্গীর আলম, সাবেক অতিরিক্ত মহাপরিচালক (অপস) ব্রিগেডিয়ার জেনারেল তোফায়েল মোস্তফা সারোয়ার, সাবেক অতিরিক্ত মহাপরিচালক (অপস) ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. কামরুল হাসান, সাবেক অতিরিক্ত মহাপরিচালক (অপস) ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. মাহাবুব আলম, সাবেক পরিচালক (ইন্টেলিজেন্স উইং) লেফটেন্যান্ট কর্নেল মো. মশিউর রহমান জুয়েল, সাবেক পরিচালক (ইন্টেলিজেন্স উইং) লেফটেন্যান্ট কর্নেল সাইফুল ইসলাম সুমন, সাবেক অতিরিক্ত মহাপরিচালক (অপস) কর্নেল আবদুল্লাহ আল মোমেন, সাবেক অতিরিক্ত মহাপরিচালক (অপস) কর্নেল আনোয়ার লতিফ খান (এখন অবসরকালীন ছুটিতে), সাবেক অতিরিক্ত মহাপরিচালক (অপস) কর্নেল কে এম আজাদ ও সাবেক পরিচালক (ইন্টেলিজেন্স উইং) কর্নেল মো. সারওয়ার বিন কাশেম।
শেখ হাসিনা ও তারিক আহমেদ সিদ্দিকসহ বাকি সাত আসামি পলাতক। পলাতক অন্য পাঁচ আসামি হলেন- সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, সাবেক পুলিশ প্রধান (আইজিপি) বেনজীর আহমেদ, র্যাবের সাবেক মহাপরিচালক এম খুরশীদ হোসেন, র্যাবের সাবেক মহাপরিচালক মো. হারুন-অর-রশিদ, র্যাবের সাবেক পরিচালক (ইন্টেলিজেন্স উইং) ও সাবেক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মুহাম্মদ খায়রুল ইসলাম।
আর গুম-অপহরণের পর সেনাবাহিনীর জয়েন্ট ইন্টারোগেশন সেলে (জেআইসি) আটকে রেখে নির্যাতনের মামলায় মোট আসামি ১৩ জন। তাদের মধ্যে তিনজনকে জেলে পাঠানো হয়েছে। তারা হলেন- ডিজিএফআইয়ের সাবেক পরিচালক (সিটিআইবি) ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. মাহবুবুর রহমান সিদ্দিক, সাবেক পরিচালক (সিটিআইবি) ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আহমেদ তানভীর মাজাহার সিদ্দিক ও সাবেক পরিচালক (সিটিআইবি) মেজর জেনারেল শেখ মো. সরওয়ার হোসেন। শেখ হাসিনা ও তারিক আহমেদ সিদ্দিকসহ বাকি ১০ আসামি পলাতক। পলাতক বাকি ৮ আসামি হলেন- ডিজিএফআইয়ের সাবেক মহাপরিচালক ও অবসরপ্রাপ্ত লেফটেন্যান্ট জেনারেল মো. আকবর হোসেন, ডিজিএফআইয়ের সাবেক মহাপরিচালক ও অবসরপ্রাপ্ত মেজর জেনারেল মো. সাইফুল আবেদিন, ডিজিএফআইয়ের সাবেক মহাপরিচালক ও অবসরপ্রাপ্ত লেফটেন্যান্ট জেনারেল মো. সাইফুল আলম, ডিজিএফআইয়ের সাবেক মহাপরিচালক ও অবসরপ্রাপ্ত লেফটেন্যান্ট জেনারেল আহমেদ তাবরেজ শামস চৌধুরী, ডিজিএফআইয়ের সাবেক মহাপরিচালক ও অবসরপ্রাপ্ত মেজর জেনারেল হামিদুল হক, ডিজিএফআইয়ের সিটিআইবির সাবেক পরিচালক ও সাবেক মেজর জেনারেল মোহাম্মদ তৌহিদুল উল ইসলাম, ডিজিএফআইয়ের সিটিআইবির সাবেক পরিচালক ও মেজর জেনারেল কবীর আহাম্মদ ও অবসরপ্রাপ্ত লেফটেন্যান্ট কর্নেল মখছুরুল হক।
এ দুই মামলার মোট ৩২ জন আসামির মধ্যে ১৭ জনই পলাতক। তাদের ট্রাইব্যুনালে হাজির হতে আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে দুটি জাতীয় দৈনিক পত্রিকায় বিজ্ঞাপন দিতে রেজিস্ট্রার কার্যালয়কে নির্দেশ দিয়েছেন ট্রাইব্যুনাল। আগামী ২০ নভেম্বর এ দুই মামলার পরবর্তী তারিখ ধার্য করা হয়েছে। জুলাই-আগস্ট অভ্যুত্থানের সময় রাজধানীর রামপুরা-বনশ্রী এলাকায় ২৮ জনকে হত্যার ঘটনায় মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় মোট আসামি চারজন। তাদের মধ্যে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) সাবেক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মোহাম্মদ রেদোয়ানুল ইসলাম ও বিজিবির সাবেক কর্মকর্তা মেজর রাফাত বিন আলম মুনকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন ট্রাইব্যুনাল। অন্য দুই আসামি পলাতক। তারা হলেন- পুলিশের সাবেক অতিরিক্ত উপকমিশনার (এডিসি) মো. রাশেদুল ইসলাম ও সাবেক ওসি মো. মশিউর রহমান। পলাতক এ দুজনের বিষয়ের জাতীয় দৈনিকে বিজ্ঞপ্তি দিতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। আগামী ৫ নভেম্বর এ মামলার পরবর্তী তারিখ রেখেছেন ট্রাইব্যুনাল।
রাখা হবে সাব-জেলে : ট্রাইব্যুনালের এ আদেশের পর সেনা কর্মকর্তাদের ঢাকা ক্যান্টনমেন্টে স্থাপিত কারা অধিদপ্তরের সাব- জেলে রাখা হবে বলে জানিয়েছেন কারা মহাপরিদর্শক (আইজি-প্রিজন) ব্রিগেডিয়ার জেনারেল সৈয়দ মো. মোতাহের হোসেন। গতকাল তিনি সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান। তিনি বলেন, সরকার ঢাকা ক্যান্টনমেন্টের একটি ভবনকে সাব-জেল ঘোষণা দিয়েছে। সাব-জেল হিসেবে ঘোষণার পরপরই সেই ভবনটি কারা অধিদপ্তরের অধীনে সাব-জেল হিসেবে তত্ত্বাবধান করা হচ্ছে। ১৫ সেনা কর্মকর্তাকে কারাগারে রাখতে ট্রাইব্যুনালের নির্দেশের পর সেখানেই তাদের রাখা হবে। আমাদের কারা অধিদপ্তরের সব ব্যবস্থা সাব-জেলে রয়েছে।
নিরাপত্তার চিত্র : পুরাতন হাই কোর্ট প্রাঙ্গণে অবস্থিত আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে সেনা কর্মকর্তাদের হাজির করাকে কেন্দ্র করে গতকাল ভোর ৬টার আগে থেকেই ব্যাপক নিরাপত্তা দেখা গেছে। ট্রাইব্যুনাল প্রাঙ্গণে পুলিশ, র?্যাব, বিজিবি, এপিবিএনের বিপুলসংখ্যক সদস্য মোতায়েন করা হয় ভোর থেকেই। এ ছাড়া কারওয়ান বাজার, বাংলামোটর, কাকরাইল মোড়সহ রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় সেনাবাহিনী, আনসারসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সতর্ক অবস্থান ও টহল দেখা গেছে।
১৫ আসামিকে গ্রেপ্তার করে হাজির করা হয়েছে : আদেশের পর ট্রাইব্যুনাল প্রাঙ্গণে এ আদেশ নিয়ে সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম। এ সেনা কর্মকর্তাদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে নাকি তারা আত্মসমর্পণ করেছেন, এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, যাদের হাজির করা হয়েছে, তাদের গ্রেপ্তারের ব্যাপারে, বিচারে সোপর্দ করার ব্যাপারে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী যেমন কাজ করেছে, তেমনিভাবে বাংলাদেশের সার্বভৌমত্বের রক্ষক বাংলাদেশ সেনাবাহিনী এ আদালতের প্রক্রিয়াকে সাহায্য করেছে। তারা ঘোষণা দিয়েছিলেন যে, ল অব দি ল্যান্ডের প্রতি তারা শ্রদ্ধাশীল থাকবেন। বিচার প্রক্রিয়ার প্রতি তাদের সমর্থন থাকবে। তারা সেই সমর্থন আমাদের দিয়েছেন। আসামিদের গ্রেপ্তার করে আদালতে হাজির করার ব্যাপারে তারা সম্পূর্ণ সহযোগিতা করেছেন। এটা আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর মাধ্যমে আমরা জানতে পেরেছি। উনাদের আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী গ্রেপ্তার করে আদালতে উপস্থিত করেছে।
আসামিদের চাকরি নিয়ে এক প্রশ্নে তাজুল ইসলাম বলেন, আইন অনুযায়ী তাদের চাকরির স্ট্যাটাস নির্ধারিত হবে। সর্বশেষ সংশোধিত আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল আইনে যেভাবে বলা আছে সেভাবে নির্ধারিত হবে। অনলাইনে তাদের হাজিরা দেওয়ার সুযোগ থাকবে কি না, জানতে চাইলে চিফ প্রসিকিউটর বলেন, সেটা আদালত নির্ধারণ করবেন। ভবিষ্যতে যখন আবেদন আসবে, বাস্তবতার নিরিখে আদালত যেটা ভালো মনে করবেন, যেটা বিচার প্রক্রিয়াকে স্মুথ করবে, সবকিছু মিলিয়ে যেটা কনভিনিয়েন্ট (সুবিধাজনক) হবে, আদালতের নির্দেশ অনুযায়ী যা হওয়ার, সেটা হবে।’
কারাগারে পাঠানো কর্মকর্তারা ডিভিশন সুবিধা পাবেন কি না প্রশ্নে তাজুল ইসলাম বলেন, তাদের কাস্টডিতে রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। কাস্টডিতে প্রেরণ মানে হচ্ছে তারা কারা কর্তৃপক্ষের অধীনে চলে যাবেন। কারা কর্তৃপক্ষ তাদের কোথায় রাখবে, কোন জেলে রাখবে, কোন সাব-জেলে রাখবে, ঢাকায় রাখবে না চট্টগ্রামে পাঠাবে, না অন্য কোথাও রাখবে এটার যথাযথ কর্তৃপক্ষ কারা কর্তৃপক্ষের অর্থাৎ সরকারের।
আসামিরা আইনের প্রতি শ্রুদ্ধাশীল, আত্মসমর্পণ করেছেন : ১৫ সেনা কর্মকর্তাকে গ্রেপ্তার করে ট্রাইব্যুনালে হাজির করা হয়েছে, চিফ প্রসিকিউটর এমন দাবি করলেও আসামিদের আইনজীবী এম সারওয়ার হোসেন বলেছেন, সেনা সদরের আদেশে সংযুক্ত ১৫ জন অফিসার আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হয়ে স্বেচ্ছায় আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে আত্মসমর্পণ করেছেন। প্রসিকিউশনের গ্রেপ্তারের দাবির বিষয়ে তিনি বলেন, যেহেতু তারা পুলিশের মাধ্যমে আদালতে আত্মসমর্পণ করেছেন, সেটিকে তারা বলেছেন যে গ্রেপ্তার হয়েছেন। তারা কখনোই গ্রেপ্তার ছিলেন না। তারা সেনা হেফাজতে ছিলেন। তারা ট্রায়াল ফেস (বিচার মোকাবিলা) করতে চান। এক প্রশ্নে আইনজীবী সারওয়ার হোসেন বলেন, আইনের কাছে যারা স্বেচ্ছায় আত্মসমর্পণ করেন, তারা মনোবল নিয়ে আত্মসমর্পণ করেন। তার মানে তাদের মনোবল আছে যে তারা কোনো অন্যায় করেননি। যারা সত্যিকারের অন্যায় করেছেন, তারা দেশ ছেড়ে পালিয়ে গেছেন। আইনজীবী সারওয়ার হোসেন বলেন, এই অফিসাররা অনেক সিনিয়র অফিসার, অভিজ্ঞ অফিসার। আন্তর্জাতিক বাহিনীতেও অনেকে চাকরি করেছেন। তারা আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হয়ে আজকে এই আদালতে আত্মসমর্পণ করেছেন। তারা আশা করছেন, এই আদালতের মাধ্যমে তারা ন্যায়বিচার পাবেন।
ঢাকা সেনানিবাসে যে ভবনটিকে সাব-জেল ঘোষণা করা হয়েছে, এই ১৫ সেনা কর্মকর্তাকে সেখানে নেওয়া হবে-এমনটা জানান আইনজীবী সারওয়ার হোসেন। তিনি আরও জানান, কারাগারে পাঠানো ১৫ কর্মকর্তার জামিন চেয়ে আবেদন করা হয়েছে। আগামী নির্ধারিত তারিখে এর শুনানি হবে বলে জানান তিনি। গত ১১ অক্টোবর এক সংবাদ সম্মেলনে সেনাবাহিনী জানায়, ১৫ কর্মকর্তা সেনাবাহিনীর হেফাজতে আছেন। এমন পরিস্থিতির মধ্যে গত ১৩ অক্টোবর ঢাকা সেনানিবাসের একটি ভবনকে সাময়িকভাবে কারাগার ঘোষণা করে সরকার। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এ-সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, ফৌজদারি কার্যবিধির, ১৮৯৮ এর ৫৪(১) এর ক্ষমতাবলে দি প্রিজন অ্যাক্ট কারা আইন), ১৮৯৪ এর ধারা ৩/বি অনুসারে ঢাকা সেনানিবাসের বাশার রোডসংলগ্ন উত্তর দিকে অবস্থিত ‘এম ই এস’ বিল্ডিং নম্বর-৫৪-কে সাময়িকভাবে কারাগার হিসেবে ঘোষণা করা হলো। যথাযথ কর্তৃপক্ষের অনুমোদনক্রমে এ আদেশ জারি করা হলো। এ আদেশ অবিলম্বে কার্যকর হবে।