আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থার (আইএলও) তিনটি কনভেনশনে স্বাক্ষর করেছে বাংলাদেশ। গতকাল রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইউনূসের উপস্থিতিতে শ্রম ও কর্মসংস্থান এবং নৌপরিবহন উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) ড. এম সাখাওয়াত হোসেন এ তিনটি কনভেনশন অনুসমর্থনপত্রে স্বাক্ষর করেন। দিনটি ‘বাংলাদেশের শ্রমজীবী মানুষের অধিকার আদায়ের ইতিহাসে স্মরণীয় হয়ে থাকবে’ বলে মন্তব্য করেছেন প্রধান উপদেষ্টা। এ তিনটি কনভেনশন অনুস্বাক্ষরিত হওয়ায় বাংলাদেশ দক্ষিণ এশিয়ার একমাত্র দেশ হিসেবে আইএলওর ১০টি মৌলিক কনভেনশন অনুস্বাক্ষরকারী দেশ হলো। গতকাল প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয় থেকে পাঠানো সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, কনভেনশন স্বাক্ষরকালে উপস্থিত ছিলেন প্রধান উপদেষ্টার আন্তর্জাতিকবিষয়ক বিশেষ দূত লুৎফে সিদ্দিকী, প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ের সচিব মো. মাহমুদুল হোসাইন খান, শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের সচিব ড. মো. সানোয়ার জাহান ভূঁইয়া, বাংলাদেশে আইএলওর কান্ট্রি ডিরেক্টর ম্যাকস টুনোনসহ সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা। কনভেনশনগুলো হলো পেশাগত নিরাপত্তা ও স্বাস্থ্যবিষয়ক কনভেনশন, ১৯৮১ (নম্বর ১৫৫); কর্মক্ষেত্রে নিরাপত্তার মান উন্নয়নে প্রচারমূলক কাঠামো কনভেনশন, ২০০৬ (নম্বর ১৮৭) এবং কর্মক্ষেত্রে সহিংসতা ও হয়রানি প্রতিরোধবিষয়ক কনভেনশন, ২০১৯ (নম্বর ১৯০)।
কনভেনশন তিনটির মধ্যে কনভেনশন ১৮৭ ও ১৫৫ আইএলওর মৌলিক কনভেনশন। ২০২২ সালে এ দুটিকে মৌলিক কনভেনশন হিসেবে গ্রহণ করে আইএলও।
এ সময় ২০১৩ সালের রানা প্লাজা ট্র্যাজেডির কথা স্মরণ করে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘রানা প্লাজা ট্র্যাজেডির পর তৎকালীন সরকার সবকিছুতে রাজি হলো। কিন্তু যা করবে বলেছিল সেগুলো কিছুই হয়নি। শুধু হচ্ছে-হবে করেই চলছিল। আমরা বললাম যে হচ্ছে-হবে আর নয়, এটা আমরা করেই যাব।’
শ্রমিকদের সুরক্ষা নিশ্চিতে তিনটি গুরুত্বপূর্ণ কনভেনশন স্বাক্ষর করায় অন্তর্বর্তী সরকারকে আন্তরিক অভিনন্দন জানিয়েছেন আইএলওর কান্ট্রি ডিরেক্টর ম্যাকস টুনোন। তিনি বলেন, বাংলাদেশ সরকার, শ্রমিক ও আইন প্রয়োগকারীদের সঙ্গে মিলে কনভেনশনের বাস্তবায়ন নিশ্চিত করতে আইএলও প্রয়োজনীয় সহযোগিতা অব্যাহত রাখার প্রতিশ্রুতি দিচ্ছে। পাশাপাশি শ্রম আইন সংস্কার কমিশনের বেশ কিছু সুপারিশ বাস্তবায়নেও সরকারকে সহযোগিতা প্রদান অব্যাহত রাখার প্রতিশ্রুতি দেন তিনি।