নাটোরে হঠাৎ ডায়রিয়া আক্রান্তের সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়েছে। একদিনে ১৪৭ ডায়রিয়া রোগী নাটোর আধুনিক হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। এর মধ্যে ৬৮ শিশু ও নারী, ৭৯ জন পুরুষ ও বয়স্ক। তবে গতকাল দুপুর পর্যন্ত ১৯ জন সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরে গেছেন। বর্তমানে ১২৮ জন হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন।
নাটোরের সিভিল সার্জন ডা. মোহাম্মদ মুক্তাদির আরেফিন বলেন, প্রাথমিকভাবে ধারণা করছি, পানিবাহিত জীবাণু থেকে এ ডায়রিয়া ছড়িয়েছে। আবাসিক মেডিকেল অফিসার মাহবুব হোসেন বলেন, ডায়রিয়ার প্রাদুর্ভাবের কারণ খোঁজার উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে।
রোগীর স্বজনরা জানান, মঙ্গলবার রাতে শহরের ঝাউতলা, কাঁঠালবাড়িয়া, উলুপুরসহ আশপাশের কয়েকটি এলাকার কয়েক ব্যক্তির পেটে ব্যথা ও পাতলা পায়খানা উপসর্গ দেখা দেয়। রাতেই ওই এলাকার ৩০-৩৫ জন ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হন। সকাল সাড়ে ৮টা পর্যন্ত হাসপাতালে ডায়রিয়ায় ৬৫ রোগী ভর্তি হন। গতকাল দুপুর ১২টা পর্যন্ত ১৪৭ জন হাসপাতালে ভর্তি হন। যার মধ্যে পুরুষ ৬৬, মহিলা ৫৫ এবং বাকিরা শিশু।
এদিকে এসব রোগীর চিকিৎসায় মেডিসিন বিশেষজ্ঞ ডা. রবিউল আওয়ালকে প্রধান করে পাঁচ সদস্যের মেডিকেল বোর্ড গঠন করা হয়েছে। কমিটির অন্যরা হলেন, ডা. আবু সাইদ, ডা. সোহরাব হোসেন, ডা. নাজমা খাতুন, ডা. শ্রাবন্তি। এ খবর পেয়ে নাটোর আধুনিক সদর হাসপাতাল পরিদর্শন করেন, জেলা প্রশাসক আসমা শাহীন। এ সময় সিভিল সার্জন ডা. মোহাম্মদ মুক্তাদির আরেফিন, সদরের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডাক্তার মাহবুব হোসেন উপস্থিত ছিলেন। জেলা প্রশাসক রোগীদের শারীরিক খোঁজখবর নেন।
স্থানীয়রা বলছেন, শহরের ঝাউতলা, উলুপুর, আদর্শ গুচ্ছগ্রাম, উত্তর চৌকিরপাড়সহ এসব এলাকা ঘনবসতিপূর্ণ এবং অনেক স্থান নিচু, ড্রেনেজ ব্যবস্থাও নাজুক। ড্রেনের সঙ্গে আবার যুক্ত হয়েছে অনেক বাড়ির পয়ঃনিষ্কাশন ব্যবস্থা। প্রতি বর্ষাতেই এসব এলাকায় বাড়ে ডায়রিয়া রোগী।
নাটোর আধুনিক সদর হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার মাহবুব হোসেন বলেন, ডায়রিয়ার প্রাদুর্ভাবের কারণ খোঁজা ও সচেতনতা বাড়াতে উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে। তাদের পানি ফুটিয়ে খাওয়ার পরামর্শও দেওয়া হচ্ছে। এ ছাড়া ডায়রিয়ার প্রকোপ কমাতে পানি বিশুদ্ধকরণ ট্যাবলেট বিতরণও করছে স্বাস্থ্য বিভাগ।
নাটোরের সিভিল সার্জন ডা. মোহাম্মদ মুক্তাদির আরেফিন বলেন, শহরের ঝাউতলা এলাকার কিছু ডায়রিয়া রোগী শনাক্ত হয়েছে। রোগীরা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। সকাল পর্যন্ত ৬৫ জন ডায়রিয়া রোগী ভর্তি হয়। দুপুর ১২টা পর্যন্ত ১৪৭ জন হাসপাতালে ভর্তি হয়। এর মধ্যে হাসপাতাল থেকে সুস্থ হয়ে অনেকে বাড়ি ফিরেছেন। প্রাথমিকভাবে ধারণা করছি, পানিবাহিত জীবাণু থেকে এ ডায়রিয়া ছড়িয়েছে। বাড়ি বাড়ি গিয়ে পানি বিশুদ্ধকরণ মেডিসিন সরবরাহ করা হবে। হাসপাতালে আমাদের পর্যাপ্ত ওষুধ সরবরাহ রয়েছে। স্বাস্থ্যকর্মী ও চিকিৎসকরা চিকিৎসাসেবা প্রদান করছেন।