সহকারী শিক্ষক এন্ট্রিপদে ১১তম গ্রেড প্রদান, শতভাগ বিভাগীয় পদোন্নতি এবং উচ্চতর গ্রেড প্রদানের জটিলতা নিরসনের দাবিতে আন্দোলনের ঘোষণা দিয়েছে প্রাথমিক সহকারী শিক্ষক সংগঠন ঐক্য পরিষদ।
শনিবার জাতীয় প্রেসক্লাবের আব্দুস সালাম হলে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়। সংবাদ সম্মেলনের সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির সভাপতি আনোয়ারুল ইসলাম তোতা।
কর্মসূচি ঘোষণা করেন প্রাথমিক সহকারী শিক্ষক সমাজের সভাপতি আনিসুর রহমান। লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন বাংলাদেশ প্রাথমিক সহকারী শিক্ষক সমাজের সভাপতি শাহিনুর আল আমীন।
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, প্রাথমিক শিক্ষার গুণগত মান উন্নয়নে সারাদেশে প্রায় তিন লাখ ৮০ হাজার সহকারী শিক্ষক নিষ্ঠা ও আন্তরিকতার সঙ্গে কাজ করে যাচ্ছেন। কিন্তু দীর্ঘদিন ধরে তারা আর্থিক ও মর্যাদাগত বৈষম্যের শিকার হচ্ছেন।
সংগঠনের দাবি, একজন সহকারী শিক্ষকের বর্তমান বেতন স্কেল ১৩তম গ্রেডে মাত্র ১১ হাজার টাকা, সর্বসাকুল্যে ১৭ হাজার ৬৫০ টাকা। দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির এ সময়ে এ বেতন অপ্রতুল ও অমানবিক।
লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, ‘আমাদের অন্যতম প্রধান দাবি হলো সহকারী শিক্ষকদের এন্ট্রিপদে ১১তম গ্রেডে উন্নীত করা। এতে সরকারের অতিরিক্ত ব্যয় হবে মাত্র দুই হাজার ২৬৫ টাকা। সরকারের আর্থিক সক্ষমতা বিবেচনায় এটি একটি যৌক্তিক দাবি।’
সংগঠনটি মনে করে, প্রাথমিক শিক্ষকদের সামাজিক ও অর্থনৈতিক অবস্থার উন্নয়ন ছাড়া মানসম্মত শিক্ষা নিশ্চিত করা সম্ভব নয়। তাই শিক্ষক মর্যাদা রক্ষার পাশাপাশি বৈষম্যহীন বেতন কাঠামো প্রতিষ্ঠার দাবি জানানো হয়।
দাবিগুলো হলো-
১. সহকারী শিক্ষকদের এন্ট্রিপদে ১১তম গ্রেড প্রদান।
২. ১০ ও ১৬ বছরের উচ্চতর গ্রেড প্রদানের জটিলতা নিরসন।
৩. শতভাগ বিভাগীয় পদোন্নতির মাধ্যমে দ্রুত পদোন্নতি বাস্তবায়ন।
কর্মসূচি ঘোষণায় সংগঠনের সদস্য আনিসুর রহমান জানান, যদি আগামী ১৫ নভেম্বরের মধ্যে দাবি পূরণ না হয়, তাহলে প্রথমিক সহকারী শিক্ষক সংগঠন ঐক্য সারাদেশের সহকারী শিক্ষকদের নিয়ে নিন্মোক্ত কর্মসূচি পালন করবে—
১. ২৩ ও ২৪ নভেম্বর অর্ধদিবস কর্মবিরতি।
২. ২৫ ও ২৬ নভেম্বর পূর্ণদিবস কর্মবিরতি।
৩. ২৭ নভেম্বর প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের সামনে অবস্থান কর্মসূচি।
৪. দৃশ্যমান অগ্রগতি না হলে ১১ ডিসেম্বর থেকে পরীক্ষা বর্জন ও আমরণ অনশন কর্মসূচি পালন।
সংবাদ সম্মেলনে বক্তারা বলেন, আমরা পূর্বে ও আন্দোলন ঘোষণা করেছিলাম কিন্তু শিক্ষার্থীদের স্বার্থে আন্দোলন স্থগিত করা হয়েছিলো।
তারা বলেন, আমাদের চলমান কর্মসূচি অনুযায়ী গত ১৭ অক্টোবর কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত অনশন কর্মসূচি পালন করার কথা ছিল। কিন্তু ১৬ অক্টোবরে শিক্ষা উপদেষ্টা সচিবসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা তাদের দাবি বাস্তবায়নে আশ্বস্ত করতে ১ মাসের সময় নেন। তবে সরকারের পক্ষ থেকে আশ্বাস পেলেও এখনো দৃশ্যমান কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি।
তারা আশা প্রকাশ করেন, প্রধান উপদেষ্টার নেতৃত্বাধীন বর্তমান সরকার ন্যায়সঙ্গত দাবিগুলো দ্রুত বাস্তবায়ন করবে। নূরে আলম সিদ্দিকী রবিউল ও অজিত পালের সঞ্চালনায় সংবাদ সম্মেলনে আরও বক্তব্য রাখেন তপন কুমার মন্ডল, শাহিনুর আল আমিন, মনিরুজ্জামান মনির, মোঃ মিজানুর রহমান, মো. রাসেল কবির, মো. ওয়াদুদ ভূইয়া, আমিনুল হক, মো. ইলিয়াস হোসেন, আব্দুর রহমান, নাজমুল হোসেন, মতি লাল দাসগুপ্ত, মো. তাজুল ইসলাম, টি এম জাকির হোসেন ও শিরীন সুলতানা।
বিডি প্রতিদিন/জুনাইদ