মার্কিন ধনকুবের ইলন মাস্কের মালিকানাধীন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সের (সাবেক টুইটার) বিরুদ্ধে অপরাধমূলক তদন্ত শুরু করল ফ্রান্স।
প্ল্যাটফর্মটির অ্যালগরিদমে ইচ্ছাকৃতভাবে পরিবর্তন এনে ‘বিদেশি হস্তক্ষেপ’ ঘটানো হয়েছে কি না, তা নিয়ে তদন্ত শুরু করেছে দেশটির পুলিশ।
সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদন থেকে জানা গেছে, শুক্রবার প্যারিসের প্রসিকিউটর অফিস এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে বলেছে, এক্সের বিরুদ্ধে প্রাথমিকভাবে দুটি অপরাধের অভিযোগ আনা হয়েছে- অ্যালগরিদম পরিবর্তন এবং ব্যবহারকারীদের কাছ থেকে প্রতারণামূলকভাবে তথ্য সংগ্রহ। এই অভিযোগ ‘সংগঠিত তথ্য সিস্টেম হ্যাকিং’-এর আওতায় পড়ে, যা ফরাসি আইনে অপরাধ হিসেবে গণ্য হয়।
প্রসিকিউটর লোর বেকো বলেছেন, জাতীয় জেনডারমারিকে এই মামলার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।
চলতি বছরের জানুয়ারিতে, প্যারিসের প্রসিকিউটর অফিসের সাইবার ক্রাইম ইউনিট এক্সের বিরুদ্ধে দুটি আনুষ্ঠানিক অভিযোগ পেয়েছিল। ফরাসি সংসদের একজন সদস্য এবং একটি সরকারি প্রতিষ্ঠানের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা এই মামলার অভিযোগ দাখিল করেন। উভয় অভিযোগেই বলা হয়েছে যে, এক্সের অ্যালগরিদম বিদেশি হস্তক্ষেপের উদ্দেশ্যে ব্যবহার করা হয়েছে।
মার্কিন সংবাদমাধ্যম পলিটিকোর প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ফরাসি সংসদের আরও কয়েকজন সদস্য সম্প্রতি এক্সের বিরুদ্ধে বক্তব্য দিয়েছেন, বিশেষ করে প্ল্যাটফর্মের এআই চ্যাটবট ‘গ্রোক’-এর সাম্প্রতিক ইহুদিবিদ্বেষী মন্তব্য নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন।
এই মামলায় এক্স প্ল্যাটফর্ম ছাড়াও এর সঙ্গে সংশ্লিষ্ট একটি আইনি সত্তা এবং কয়েকজন অজ্ঞাত ব্যক্তি তদন্তের আওতায় এসেছে। তদন্তকারীরা এখন প্রমাণ খুঁজছেন- এক্স প্ল্যাটফর্ম কীভাবে কনটেন্ট প্রদর্শনের অ্যালগরিদম পরিবর্তন করে চরম ডানপন্থি মতাদর্শকে এগিয়ে দিয়েছে। বিশেষ করে ইউরোপের সাম্প্রতিক নির্বাচনে ডানপন্থি প্রার্থীদের পোস্টগুলো বেশি প্রচারিত হয়েছে বলে অভিযোগ রয়েছে।
অভিযোগে আরও বলা হয়েছে, এক্স-এ সাম্প্রতিক সময়ে ঘৃণামূলক, বর্ণবাদী, এলজিবিটিকিউ+ বিরোধী ও সমকামবিরোধী রাজনৈতিক কনটেন্ট বৃদ্ধি পেয়েছে, যা ফ্রান্সের গণতান্ত্রিক পরিবেশকে প্রভাবিত করতে পারে।
এক্স ফ্রান্সের সিইও লরেন্ট বুয়ানেক জানুয়ারিতে একটি পোস্টে বলেছিলেন, ঘৃণামূলক কনটেন্ট ঠেকাতে এক্সের কঠোর ও স্পষ্ট নীতিমালা রয়েছে।
তিনি আরও যোগ করেন, প্ল্যাটফর্মটি ‘ভুল তথ্যের বিরুদ্ধে লড়াই করে’ এবং এর অ্যালগরিদম ‘ঘৃণাত্মক কনটেন্ট’ ঠেকাতে ডিজাইন করা হয়েছে। সূত্র: রয়টার্স, ফ্রান্স২৪, পলিটিকো, এপি
বিডি প্রতিদিন/একেএ