পঞ্চগড়ের করতোয়া নদীতে নৌকাডুবির ঘটনায় দশম দিনেও উদ্ধার অভিযান চলছে। তবে তদন্ত প্রতিবেদন নিয়ে সৃষ্টি হয়েছে ধুম্রজাল। রাষ্ট্রীয় শোক ঘোষণা না করায় এলাকাবাসীরা ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন।
উদ্ধার অভিযান চললেও এখনো নিখোঁজ কাউকে খুঁজে পাওয়া যায়নি। সীমিত আকারে উদ্ধার অভিযান চলছে।
উদ্ধার অভিযানের সাথে সংশ্লিষ্টরা বলছেন, নিখোঁজ ব্যক্তিদের মরদেহ সম্ভবত নদীর বালি বা মাটির নিচে চাপা পড়ে যেতে পারে। এজন্য মরদেহগুলি পওয়া যাচ্ছে না। তবে উদ্ধার অভিযান অব্যাহত থাকবে।
বোদা ফায়ার সার্ভিস এন্ড সিভিল ডিফেন্সের ভারপ্রাপ্ত স্টেশন অফিসার শাহজাহান আলী জানান, অভিযানে এখন পর্যন্ত কোন অগ্রগতি নাই। মাটি এবং বালির নিচে মরদেহগুলো চাপা পড়ে যেতে পারে। এ জন্য খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। প্রতিদিন সকাল এবং বিকেলে উদ্ধার অভিযান অব্যাহত থাকবে বলে জানিয়েছেন তিনি।
এদিকে, তদন্ত প্রতিবেদন নিয়ে সাধারণ মানুষের মাঝে ধুম্রজাল সৃষ্টি হয়েছে। জেলা প্রশাসকের কাছে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিয়েছে তদন্ত কমিটি। কিন্তু এখনো পুরো তদন্ত প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়নি। এ নিয়ে স্থানীয়দের মাঝে নানা জল্পনা কল্পনা ও আশঙ্কাও সৃষ্টি হয়েছে। প্রকৃত দায়ীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে কিনা এ নিয়ে সন্দেহও সৃষ্টি হয়েছে। গণমাধ্যমকর্মীদের মাঝেও এই প্রতিবেদন সরবরাহ করা হয়নি। গণমাধ্যমকর্মীরা এই প্রতিবেদন চাইলেও তা এখন পর্যন্ত দেয়া হয়নি।
স্থানীয়দের দাবি, প্রকৃত তদন্ত প্রতিবেদন প্রকাশ করা হোক। কি আছে এই তদন্ত প্রতিবেদনে তা জানতে না পারায় সর্বমহলে এ নিয়ে ধুম্রজালের সৃষ্টি হয়েছে। তদন্ত প্রতিবেদন বিষয়ে গণমাধ্যম কর্মীদেরকে আনুষ্ঠানিকভাবে জানানো হয়নি।
এ বিষয়ে তদন্ত কমিটির আহ্বায়ক দীপঙ্কর কুমার রায় জানান, এলাকার ভৌগলিক পরিস্থিতি এবং নদী কেন্দ্রীক জীবন জীবিকাকে উল্লেখ করে ১১৮ পৃষ্ঠার তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করা হয়েছে। তদন্তে সংশ্লিষ্ট সকলের সম্পৃক্ততা উল্লেখ করা হয়েছে। ভবিষ্যতে এ ধরনের কোন ঘটনা যাতে না ঘটে এজন্য ৫টি সুপারিশও উল্লেখ করা হয়েছে।
গতকাল সোমবার অন্য একটি অনুষ্ঠানে গণমাধ্যকর্মীদের প্রশ্নের জবাবে জেলা প্রশাসক জহুরুল ইসলাম জানান, তদন্ত রিপোর্ট আপনাদের হাতে দিতে পারব না। তবে তদন্ত প্রতিবেদনে বেশ কিছু বিষয় উঠে এসেছে। এর মধ্যে ঘাট ইজারাদার, অদক্ষ মাঝি, ধর্মীয় অনুভূতি এবং উপস্থিত সকলের অসচেতনার বিষয়টি উল্লেখযোগ্য। পুলিশ এবং ফায়ার সার্ভিসও দুটি তদন্ত টিম গঠন করেছে। রিপোর্ট দাখিল হবার পর সরকারের নিকট থেকে যে নির্দেশনা আসবে তা পরবর্তীতে জানানো হবে এবং সেই মোতাবেক ব্যবস্থা নেয়া হবে।
বিডি-প্রতিদিন/বাজিত হোসেন