১৭ মার্চ, ২০২৩ ১৫:৪৩

গৃহবধূ হত্যা মামলায় মণিরামপুর থানার ওসিসহ ৯ জন আসামি

নিজস্ব প্রতিবেদক, যশোর

গৃহবধূ হত্যা মামলায় মণিরামপুর 
থানার ওসিসহ ৯ জন আসামি

যশোরের মণিরামপুরে গৃহবধূ হত্যার অভিযোগে স্বামী, শ্বশুরসহ নয়জনকে আসামি করে পিটিশন মামলা হয়েছে যশোর আদালতে। আসামিদের মধ্যে মণিরামপুর থানার ওসি মনিরুজ্জামান ও এসআই আতিকুজ্জামানও রয়েছেন।

এজাহার থেকে জানা গেছে, সংশ্লিষ্ট ঘটনায় মণিরামপুর থানায় হত্যার অভিযোগ করা হলেও ওই ধারায় মামলা গ্রহণ না করে আত্মহত্যার প্ররোচনা ধারায় মামলা রেকর্ড করার কারণে আসামিদের সহযোগী হিসেবে এ দুই পুলিশ কর্মকর্তাকে আসামি করা হয়েছে। বিচারক সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট শম্পা বসু অভিযোগ আমলে নিয়ে আগামী ২১ মার্চ এ ব্যাপারে আদেশের জন্য দিন ধার্য করেছেন।

মামলার অন্য আসামিরা হলো মৃত নাওয়াল জামান বরিষার স্বামী মণিরামপুর উপজেলার পাঁচাকড়ি গ্রামের আরশীল কবীর, তার বাবা আজমত হোসেন, মা আসমা বেগম, একই গ্রামের মৃত আবদুস সামাদের ছেলে মনিরুল ইসলাম, মনিরুলের স্ত্রী শিল্পী বেগম, এনায়েত মোল্লার স্ত্রী হাসিনা বেগম ও উজ্জল আহম্মেদের স্ত্রী ইরানী ফারজানা।

মামলার বাদী নিহত বরিষার বাবা যশোর সদর উপজেলার ভায়না গ্রামের মাহমুদুজ্জামান এজাহারে উল্লেখ করেছেন, প্রেমের ফাঁদে ফেলে কবীর তার মেয়ে  বরিষাকে বিয়ে করে। বিয়ের পর থেকে শ্বশুরবাড়ির লোকজন বরিষাকে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করতে থাকে। মোবাইল ফোনে বরিষা বিভিন্ন সময়ে নির্যাতনের বিষয়টি তাদের জানাতো। গত ১৯ ফেব্রুয়ারি রাত সাড়ে ৩ টায় শ্বশুরবাড়ির লোকেরা বাদীর পরিবারকে জানায় যে, বরিষা গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছে। পরে ঘটনাস্থলে গিয়ে বাদীর পরিবার মৃতদেহের বিভিন্ন স্থানে আঘাতের চিহ্ন দেখতে পান। গলায় ফাঁস নেওয়ার কোনো দাগ ছিল না।

এই ঘটনায় বরিষার মা নওশাবা তানবীন মণিরামপুর থানায় মেয়েকে হত্যার অভিযোগ দায়ের করেন, যার তদন্তের দায়িত্ব পান এসআই আতিকুজ্জামান। কিন্তু সুষ্ঠু তদন্ত না করে আসামিদের দ্বারা প্রভাবিত হয়ে অভিযোগটি হত্যামামলা হিসেবে গ্রহণ না করে আত্মহত্যার প্ররোচনা মামলা হিসেবে নথিভুক্ত করেন থানার ওসি মনিরুজ্জামান ও এসআই আতিকুজ্জামান। বর্তমানে সকল আসামি ময়নাতদন্তের রিপোর্টকে হত্যার পরিবর্তে আত্মহত্যায় রূপান্তরিত করার চেষ্টা চালাচ্ছেন বলেও এজাহারে উল্লেখ করেছেন বরিষার বাবা।

এ ব্যাপারে যোগাযোগ করা হলে মণিরামপুর থানার এসআই শেখ মনিরুজ্জামান বলেন, ঘটনার পর মেয়ের মা যেভাবে অভিযোগ দিয়েছিলেন, সেভাবেই মামলা হয়েছে। প্রধান অভিযুক্তকে আটক করে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে প্রেরণ করা হয়েছে। সকল আলামত সংগ্রহ করা হয়েছে। তিনি বলেন, ‘তারা হত্যা মামলা দিলে আমরা হত্যা মামলাই নিতাম। আমরা অপমৃত্যুর মামলাও তো করিনি। তাদের বর্ণনা অনুযায়ী আত্মহত্যার প্ররোচনার মামলা হয়েছে। এখন ময়নাতদন্ত রিপোর্টে যদি হত্যার বিষয়টি উঠে আসে, তাহলে আগের মামলাটিই হত্যা মামলায় রূপান্তর হবে। এটাই আইনগত প্রক্রিয়া। মেয়ের পরিবার হয়তো অন্য কারও প্ররোচনায় পড়ে এ ধরনের কাজ করছেন।

বিডিপ্রতিদিন/কবিরুল

এই রকম আরও টপিক

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর