২৮ মার্চ, ২০২৩ ১৬:৩৩

সখীপুরে পাওয়ার টিলার ও গাভী দেওয়ার নামে টাকা আত্মসাতের অভিযোগ

সখীপুর (টাঙ্গাইল) প্রতিনিধি

সখীপুরে পাওয়ার টিলার ও গাভী দেওয়ার নামে টাকা আত্মসাতের অভিযোগ

মানববন্ধন

টাঙ্গাইলের সখীপুরে পাওয়ার টিলার, গাভী ও সেলাই মেশিন দেওয়ার কথা বলে অসহায় গৃহিণী এবং কৃষকদের কাছ থেকে টাকা আত্মসাৎ করার অভিযোগ উঠেছে স্থানীয় টেংরা মাদলা খাল পানি ব্যবস্থাপনা সমবায় সমিতি লিমিটেডের সভাপতি ও স্থানীয় ইউপি সদস্য মো. রুহুল আমিনের বিরুদ্ধে। এ ঘটনার প্রতিকার চেয়ে মঙ্গলবার সকালে উপজেলা কাকড়াজান ইউনিয়নের ওই সমিতির কার্যালয়ের সামনে ঘণ্টাব্যাপী মানববন্ধন করেছে শতাধিক কৃষক ও গৃহিণী।

এর আগে গত ১৯ মার্চ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, টাঙ্গাইল জেলা এলজিইডির নির্বাহী প্রকৌশলী, উপজেলা নির্বাহী প্রকৌশলী ও কাকড়াজান ইউনিয়ন চেয়ারম্যান বরাবর লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন তারা।

টেংরা মাদলা খাল পানি ব্যবস্থাপনা সমবায় সমিতির কোষাধ্যক্ষ আব্দুল মান্নান শিকদার মানববন্ধনে বলেন, বিদেশি সংস্থা জাইকা’র মাধ্যমে সরকারিভাবে উন্নত কৃষি যন্ত্রপাতি, সেলাই মিশিন, গাভী ও পাওয়ার টিলার দেওয়া হবে, তার খরচ বাবদ কিছু টাকা লাগে। তাই সমিতির সদস্যদের কাছ থেকে মিথ্যা আশ্বাস দিয়ে ৫০ হাজার, ৩০ হাজার, ২০ হাজার, সর্বনিম্ন সাড়ে ১৫ শত টাকা করে হাতিয়ে নিয়েছে সমিতির সভাপতি রুহুল আমিন। প্রায় তিন বছর হয়ে আসছে কোনো সদস্য পাওয়ার টিলার, গাভী কিংবা সেলাই মেশিন কিছু পায় নাই। এ নিয়ে তার কাছে কথা বললে জানায় ‘এইতো আর কয়ডা দিন পরেই আসবো’। এ নিয়ে সদস্যরা অতিষ্ঠ হয়ে গেছে। বাড়িতে স্বামী স্ত্রীর মধ্যে ঝগড়া বিবাদ চলছে।

সমিতির সদস্য গড়বাড়ি গ্রামের আকলিমা আক্তার বলেন, ‘গাভী পাওয়ার আসায় ২০ হাজার টাকা দিছি রুহুল মেম্বারের কাছে। টাকাগুলো সুদি করে দিয়েছি।’

সমিতির সদস্য ভূয়াইদ গ্রামের ছাহেরা খাতুন বলেন, ‘প্রায় আট মাস আগে গাভী দেওয়ার কথা বলে রুহুল মেম্বার আমার কাছ থেকে ২০ হাজার টাকা নিছে এখন তারে হারিক্যান দিয়াও খুঁইজা পাই না।’

রফিকুল ইসলাম নামে একজন বলেন, ‘পাওয়ার টিলার দেওয়ার কথা বলে আমার কাছ থেকে ৩০ হাজার টাকা নিছে রুহুল আমিন মেম্বার। এখন পাওয়ার টিলারও দেয় না টাকাও দেয় না।’

আব্দুল মান্নান শিকদার আরও জানান, কাকড়াজান ইউনিয়নের আট-নয়টি গ্রামে বোরো চাষের জন্য সেচ প্রকল্পের আওতায় টেংরা মাদলা নামে দুটি খাল খনন করা হয়েছে। সেই খাল খনন, কৃষি যন্ত্রপাতি ও খালের পাশ দিয়ে গাছ রোপণ করা বাবদ জাইকা প্রকল্প থেকে ৯৬ লাখ টাকা আসে। এক বছরের বেশি সময় হলেও এখনো খালের পাশে কোনো গাছ রোপণ করা হয়নি। সেই টাকাও তিনি আত্মসাৎ করেছেন। আমরা এ ঘটনার তদন্ত করে সুষ্ঠু বিচার চাই।

অভিযোগ অস্বীকার করে মো. রুহুল আমিন মেম্বার বলেন, আমার একটা প্রতিপক্ষ আছে আব্দুল মান্নান, সে আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা একটি মানববন্ধন করিয়েছে। আমি কারো কাছ থেকে টাকা নেই নাই। খালের পাশ দিয়ে যেখানে গাছ লাগানো প্রয়োজন, সেখানে গাছ লাগানো হয়েছে। আমিও আগামীকাল একটি মানববন্ধন করাবো আপনি আইসেন।

কাকড়াজান ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মো. দুলাল হোসেন বলেন, গরু, সেলাই মেশিন এবং পাওয়ার টিলার দেওয়ার কথা বলে রুহুল আমিন মেম্বার নাকি সমিতির সদস্যদের কাছ থেকে টাকা নিয়েছে, এ নিয়ে মেম্বারের বিরুদ্ধে বিভিন্ন জায়গায় অভিযোগ দেওয়ার একটি অনুলিপি পেয়েছি। এ বিষয় নিয়ে তাকে পরিষদে ডাকা হবে।

বিডি প্রতিদিন/এমআই

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর