পাবনার বেড়া থেকে অপহরণ ও হত্যার দায়ে ৪ জনের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। একই সঙ্গে ২৫ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরও ১ বছরের কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। মঙ্গলবার বেলা সাড়ে ১২ টার দিকে পাবনার বিশেষ জজ আদালতের (জেলা জজ) বিচারক আহসান তারেক এ রায় ঘোষণা করেন।
মৃতদন্ডপ্রাপ্ত আসামিরা হল- ঝিনাইদহ জেলার শৈলকোপা উপজেলার লঘু নন্দনপুর গ্রামের নুরু জোয়ার্দারের ছেলে সবুজ ওরফে দাদা ভাই ওরফে বকুল, কুষ্টিয়া জেলার খোকশা থানার বনগ্রাম পূর্বপাড়া গ্রামের মোবারক হোসেনের ছেলে আবুল কালাম, নিহাল বিশ্বাসের ছেলে আজাদ এবং একই এলাকার খলিল। রায় ঘোষণার সময় আজাদ ও আবুল কালাম উপস্থিত থাকলেও অন্যরা পলাতক রয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেছেন আদালত।
মামলা এজাহার সূত্রে জানা যায়, ঝিনাইদহ থেকে পাবনার বেড়া উপজেলার রামনারায়পুরের রশিদ সিকদারের বাড়িতে দিনমজুরের কাজে এসে সম্পর্ক তৈরি করেন সবুজ। সম্পর্কের এক পর্যায়ে ২০০৯ সালের ১৪ জুলাই রশিদকে বিদেশে নেয়ার কথা বলে বাড়ি থেকে নিয়ে যান সবুজ। পরের দিন রশিদের বাড়ির লোকজন তার খোঁজ নিলে সবুজ তাকে অপহরণ করা হয়েছে বলে ৫ লক্ষ টাকা মুক্তিপণ দাবি করেন। পরে এ বিষয়ে বেড়া থানায় একটি অভিযোগ দেন রশিদের শ্যালক বাহের মন্ডল। অভিযোগের সূত্রে ধরে সবুজকে গ্রেফতার করে জিজ্ঞাসাবাদ করলে সে স্বীকার করেন যে, মুক্তিপণের টাকা দিতে অস্বীকার করায় তাকে হত্যা করে লাশ পদ্মা নদীতে ফেলে দেয়া হয়েছে।তবে পুলিশ লাশ উদ্ধার করতে না পারায় আসামিদের বিরুদ্ধে শুধু অপহরণের মামলা দায়ের করা হয়। দীর্ঘ তদন্ত শেষে ২০১০ সালের ১১ জানুয়ারি ৬ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দেয় পুলিশ। ১১ জনের স্বাক্ষী শেষে মঙ্গলবার রায় ঘোষণা করা হলো।
আসামিদের পক্ষে শুনানি করেন অ্যাডভোকেট তৌফিক ইমাম খান ও মকিবুল আলম বাবলা এবং রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন বিশেষ পাবলিক প্রসিকিউটর অ্যাডভোকেট দেওয়ান মজনুল হক।
রায়ে সন্তুষ্টি প্রকাশ করে ডভোকেট দেওয়ান মজনুল হক বলেন, যেহেতু লাশ উদ্ধার হয়নি এজন্য হাইকোর্টের নির্দেশনা অনুযায়ী অপহরণ মামলায় বিচার হয়েছে। এই রায়ের মাধ্যমে ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠিত হয়েছে।
রায়ে অসন্তুষ্টি প্রকাশ করে আসামিদের পক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট তৌফিক ইমাম খান বলেন, আমরা উচ্চ আদালতে আপিল করব।
বিডি প্রতিদিন/এএম