৭ এপ্রিল, ২০২৩ ১৮:০৩

যৌতুকের জন্য স্ত্রী নির্যাতন, দেবর গ্রেফতার

লালমনিরহাট প্রতিনিধি

যৌতুকের জন্য স্ত্রী নির্যাতন, দেবর গ্রেফতার

লালমনিরহাটের হাতীবান্ধায় যৌতুকের টাকা দিতে না পারায় রাশেদা বেগম নামে এক গৃহবধূকে আটকে রেখে মারধর ও নির্যাতন করার অভিযোগ উঠেছে স্বামী ও তার পরিবারের বিরুদ্ধে।

স্থানীয় থানায় লিখিত অভিযোগ করায়, উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে প্রবেশ করে চিকিৎসাধীন রাশেদা বেগম ও তার মা, ভাই, ভাবির ওপর অতর্কিতভাবে হামলা করেছেন স্বামীর চাচাতো ভাই মোতাহার ও তার লোকজন। খবর পেয়ে পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করেন। অতর্কিত হামলায় ৭ জন আহত হয়েছে।

আজ শুক্রবার সকালে অভিযুক্ত দেবর মোতাহার হোসেনকে (৩৫) গ্রেফতার করেছেন পুলিশ। হাতীবান্ধা থানা ভারপ্রাপ্তকর্মকর্তা (ওসি) শাহ আলম বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

এর আগে গত বৃহস্পতিবার রাতে ১২ জনের নাম উল্লেখ করে হাতীবান্ধা থানায় একটি লিখিত অভিযোগ করেন নির্যাতনের শিকার গৃহবধূ রাশেদা বেগম। গত বুধবার রাতে হাতীবান্ধা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের অসুস্থ রোগী থাকা নারী ওয়ার্ডে এই মারধরের ঘটনা ঘটেছে। 

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ২০ বছর আগে উপজেলার সিংগীমারী ইউনিয়নের ৪নং ওয়ার্ডের দক্ষিণ গড্ডিমারী গ্রামের মৃত আজিজার রহমানের মেয়ে রাশেদা বেগমের সাথে বিয়ে হয় একই ইউনিয়নের ৮নং ওয়ার্ডের সিংগীমারী গ্রামের লুৎফর রহমানের ছেলে মকছেদ আলীর সাথে। বর্তমান তাদের এক ছেলে এক মেয়ে। বিয়ে পর থেকে ২ লক্ষ টাকা যৌতুকের জন্য মমিনুর ও তার পরিবারের লোকজন রাশেদাকে চাপ দেয়। রাশেদার বাবার বাড়ির লোকজন টাকা দিতে না পারায় তারা প্রায় সময় রাশেদাকে নির্যাতন করেন। গত ৪ এপ্রিল মঙ্গলবার সন্ধ্যায় মকছেদ আলী তার স্ত্রী রাশেদাকে তার বাবার রেখে যওয়া জমির ভাগ বিক্রি করে টাকা আনতে বলেন। এতে  রাজি না হওয়ায় স্বামী মকছেদ, দেবর মমিনুর, শ্বশুর  লুৎফর ও শ্বাশুড়ি জোহরা বেগম রাশেদাকে মারধর ও নির্যাতন করে ঘরে আটকে রাখে। পরের দিন, ৫ এপ্রিল বুধবার সকালে স্থানীয়দের সহযোগিতা নিয়ে রাশেদা হাতীবান্ধা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি হন।
  
নির্যাতনের শিকার গৃহবধূ রাশেদা বেগম বলেন, বিয়ের পর থেকে আমার স্বামী ও তার ভাই, মা-বাবা যৌতুকের টাকা জন্য প্রায় আমাকে মারধর ও নির্যাতন করেন। আমি আমার বাবার বাড়িতে ছয় শতক জমি ভাগ পেয়েছি। সেই জমি বিক্রি করে টাকা আনতে বলেন। টাকা না আনলে নির্যাতন করে। 

এ বিষয়ে অভিযুক্ত রাশেদার স্বামী ছাদেকুল আলম বলেন, আমার স্ত্রী একজন পাগল। তার মানসিক সমস্যা আছে। সে আমার মায়ের চুল ধরে টানা হেছড়া করে। তাই তাকে সরানোর জন্য একটু মারধর করেছি।
   
হাতীবান্ধা থানার উপ-পরিদর্শক(এসআই) মহিদুল ইসলাম বলেন, রাশেদা বেগম একটি লিখিত অভিযোগ করেছেন। তদন্ত চলছে, তদন্ত শেষে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। 

 

বিডি প্রতিদিন/নাজমুল

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর