বাগেরহাটে দিনে জেলাজুড়ে বইছে তীব্র দাবদাহ। আর ভোর হওয়ার সাথে সাথেই ঘন কুয়াশার চাদরে ঢেকে যাচ্ছে রাস্তাঘাট, জনপদ ও ফসরের ক্ষেত। দেখে মনে হবে যেনো শীতের ভোর। উপকূলীয় বাগেরহাট জেলার আবহাওয়ার এমন বিচিত্র রূপ লক্ষ্য করা যাচ্ছে কিছুদিন ধরে।
রবিবার বাগেরহাটের মোংলায় তাপমাত্রার নতুন রেকর্ড সৃষ্টি হয়েছে ৪১.৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস। গত চারদিন ধরে বাগেরহাটে তাপমাত্রা ৪০.৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের উপর ওঠানামা করছে। শনিবার ছিল ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াস। শুক্রবার তাপমাত্রা ছিল ৪১.২ ডিগ্রি সেলসিয়াস। বৃহস্পতিবার যা ছিল ৪০.৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস। রাত ও দিনের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকায় তীব্র গরমে হাঁসফাঁস অবস্থা সব মানুষের। দিনে তীব্র তাপপ্রবাহের পর ভোরে থেকে সকাল ৮টা পর্যন্দ ঘন কুয়াশার চাদরে ঢেকে যাচ্ছে সব। চৈত্র-বৈশাখ মাসে এমন ঘন কুয়াশা আগে কখনোই দেখেনি এই উপকূলীয় অঞ্চলের মানুষ। এতে মানুষের মধ্যে বিরাজ করছে আতঙ্ক ও কৌতুহল। অসময়ে কুয়াশা পড়ায় ফসলের ক্ষতির আশঙ্কা করছেন বোরো চাষিরা।
শরণখোলা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা দেবব্রত সরকার জানান, এর আগে উপকূলীয় এই অঞ্চলে এমন কুয়াশা দেখা যায়নি। কুয়াশা দীর্ঘ সময় ধরে পড়লে বোরো ফসলে ব্লাস্ট রোগে আক্রমণের আশঙ্কা রয়েছে। এব্যাপারে কৃষি বিভাগ চাষিদের নানাভাবে পরামর্শ দিয়ে যাচ্ছে।মোংলা আবহাওয়া অফিসের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আবহাওয়াবিদ মো. হারুন অর রশিদ জানান, রবিবার বিকাল ৩টায় মোংলায় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হযেছে ৪১. ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস। যা মোংলা বন্দরে আবহাওয়া অফিস স্থাপনের পর থেকে ১৫ বছরের ইতিহাসে এটাই সর্বোচ্চ তাপমাত্রা। এই আবহাওয়াবিদ কুয়াশা দেখে আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই জানিয়ে বলেন, বায়ু মন্ডলে তাপ বৃদ্ধি পাওয়ায় দিনে ভূ-পৃষ্ঠ উত্তপ্ত থাকে। রাত যখন ভোর হয় তখন ভূ-পৃষ্ঠ শীতল হয়ে যায়। ওই সময়টাতে বাতাসের জলীয় বাষ্প ধারণ করতে না পারায় তা কুয়াশা আকারে ভেসে বেড়ায়। সে কারণে উপকূল অঞ্চলে প্রায় এক সপ্তাহ যাবত কুয়াশা পড়ার খবর পাচ্ছি। রাত তিনটার পর থেকে কুয়াশা পড়া শুরু হয়। দুই-চারদিনের মধ্যে আবহাওয়ার এমন অস্বাভাবিক অবস্থা কেটে যাওয়ার সম্ভাবনা আছে বলে জানান তিনি।
বিডি প্রতিদিন/হিমেল