গাজীপুরের শ্রীপুরে ইয়াবা সেবন করে এক নারীকে হত্যার অভিযোগে তিনজনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আসামিরা জানিয়েছেন, ইয়াবা সেবনের পর নারীর সাথে শারীরিক সম্পর্ক করেন তারা। পরে শারীরিক সম্পর্কের লেনদেন নিয়ে কথা কাটাকাটি হলেই শ্বাসরোধে হত্যার করে হাত, পা ও কোমরে ইট বেঁধে মরদেহ পানিতে ডুবিয়ে দেওয়া হয়।
বৃহস্পতিবার দুপুরে গাজীপুর পিবিআই’র পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মাকছুদের রহমান এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানিয়েছেন।
তিনি জানান, গত বছরের ২৫ জুলাই গাজীপুরের শ্রীপুরের টেপিরবাড়ি গ্রামের সুমন মিয়ার ডোবা থেকে হাত, পা বাঁধা ও কোমরে তিনটি ইট বাঁধা ৩০ বছর বয়সী এক নারীর গলিত মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। পরে শ্রীপুর থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) সজীব হাসান বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামা আসামিদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন। থানা পুলিশ দুই মাস মামলাটি তদন্ত করে কোনো তথ্য উৎঘাটিত না হওয়ায় গাজীপুর পিবিআই’য়ের ওপর মামলাটি তদন্তের জন্য দায়িত্ব দেওয়া হলে দীর্ঘ তদন্ত শেষে প্রত্যক্ষভাবে জড়িত আসামিদের গ্রেফতার করে আদালতে হত্যার দায় স্বীকার করেন।
গ্রেফতারকৃতরা হলেন গাজীপুর জেলার শ্রীপুর থানার টেপিরবাড়ি গ্রামের মো. আবুল হোসেনের ছেলে মো. মোখলেসুর রহমান (৩১), একই গ্রামের ওয়াজ উদ্দিনের ছেলে মো. খোকন মিয়া (২৭) ও মো. মাসুদ রানার ছেলে মো. রাজীব মোড়ল (২৬)। তাদের মধ্যে মোখলেসুর ও খোকন মিয়াকে মঙ্গলবার ভোরে ও রাজীব মোড়লকে পরদিন বুধবার রাতে টেপিরবাড়ি এলাকা থেকে গ্রেফতার করা হয়। লাশটি সম্পূর্ণ পচে যাওয়ায় আঙ্গুলের ছাপ নেওয়া সম্ভব হয়নি। তাই অজ্ঞাত ওই নারীর পরিচয় শনাক্ত করা যায়নি।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা গাজীপুর পিবিআই’য়ের উপ-পরিদর্শক মো. জহিরুল ইসলাম জানান, গত বছর ঘটনার ৩-৪দিন আগে তিন বন্ধু মিলে চায়ের দোকানে বসে ইয়াবা সেবনের পাশপাশি এক নারীকে এনে শারীরিক সম্পর্ক করে ফূর্তি করার পরিকল্পনা করেন। পরিকল্পনা অনুযায়ী, ওই দিন রাত ১০টার দিকে টেপিরবাড়ি গ্রামের সুমনের বাড়ির পাশে নির্জন জায়গাতে যান এবং ইয়াবা সেবন করেন। সেখানে তারা প্রায়ই ইয়াবা সেবনের আড্ডা বসাতেন। ইয়াবা সেবনের পর মেয়েটির সাথে তারা শারীরিক সম্পর্ক করেন। পরে লেনদেন নিয়ে মোখলেস, খোকন ও রাজিবের কথা কাটাকাটি হলে একপর্যায়ে তারা মেয়েটিকে শ্বাসরোধে হত্যা করে পাশের সুমনের মালিকানাধীন একটি পানি ভর্তি ডোবায় মধ্যে হাত পাঁ ও কোমরে ইট বেঁধে মরদেহটি ফেলে রেখে পালিয়ে যান।
গাজীপুর পিবিআই’র পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মাকছুদের রহমান বলেন , এটি একটি চাঞ্চল্যকর হত্যা মামলা। আসামিদেরকে গ্রেফতার করলে মামলার প্রকৃত রহস্য উৎঘাটিত হয় এবং উক্ত আসামিরা ঘটনার বিস্তারিত বর্ণনা দিয়ে আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দী প্রদান করেন।
বিডিপ্রতিদিন/কবিরুল
