নওগাঁর মান্দা উপজেলায় বাস ও সিএনজিচালিত অটোরিকশা শ্রমিকদের সংঘর্ষে উভয়পক্ষের অন্তত ২০জন আহত হয়েছেন। উপজেলার সাবাইহাট ও ফেরিঘাট এলাকায় দুপুর ২টা ৩০ মিনিট থেকে ৩টার মধ্যে এ সংঘর্ষ হয়। এ সময় দুটি বাস ও ১৫টি অটোরিকশা ভাঙচুর করা হয়। এ ঘটনার পর থেকে নওগাঁ-রাজশাহী মহাসড়কে বাস ও তিন-চাকার যান চলাচল বন্ধ রয়েছে।
নওগাঁ জেলা মোটর শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক মতিউজ্জামান বলেন, সরকারি আইন অনুযায়ী মহাসড়কে তিন-চাকার যান চলাচল নিষিদ্ধ। প্রশাসন ও মোটরশ্রমিক ইউনিয়নের পক্ষ থেকে বারবার নিষেধ করা সত্ত্বেও অটোরিকশা চালকেরা নওগাঁ-রাজশাহী মহাসড়কে জোর করে গাড়ি চালিয়ে আসছিল। এ নিয়ে সম্প্রতি দুই পক্ষের মধ্যে উত্তেজনা বিরাজ করছিল। আজ দুপুর আড়াইটার দিকে নওগাঁ-রাজশাহী মহাসড়কে মান্দার সাবাইহাট বাজার এলাকায় সিএনজি চালক ও মালিকেরা সংঘবদ্ধ হয়ে দুটি বাস ভাঙচুর করেন। এ সময় বাস দুটির চালক ও তার সহকারীকে মারধর করেন। পরে বাস শ্রমিকেরা এ ঘটনার প্রতিবাদ জানানোর জন্য মান্দার ফেরিঘাট এলাকায় রাস্তার ওপর আড়াআড়িভাবে বাস রেখে যান চলাচল বন্ধ করে দেন। এ সময় উভয়পক্ষের মধ্যে আবারও সংঘর্ষ হয়।
সিএনজি-মালিক শ্রমিক সমিতি সাবাইহাট শাখার সভাপতি শফিকুল ইসলাম বলেন, দীর্ঘদিন ধরে নওগাঁ বাস মালিক সমিত ও মোটর শ্রমিক ইউনিয়নের লোকজন মান্দার চৌদ্দমাইল ও ফেরিঘাট এলাকায় অবৈধভাবে চেকপোস্ট বসিয়ে সিএনজিচালিত অটোরিকশা চলাচলে বাধা সৃষ্টি করে আসছে। এ নিয়ে অটোরিকশার মালিক ও শ্রমিকেরা প্রতিবাদ করলে গেলে গত ২৯ আগস্ট মোটর শ্রমিক ইউনিয়নের লোকজন তাদের মারধর করেন। আজকে নামাজের পর ফেরিঘাট থেকে রাজশাহীতে যাওয়ার সময় উপজেলার সাবাইহাট বাজারের কাছে চৌদ্দমাইল এলাকায় একটি অটোরিকশার থামিয়ে এর চালককে মারধর করে মোটর শ্রমিক ইউনিয়নের লোকজন। পরে উপজেলার ফেরিঘাট এলাকায় বাসশ্রমিকেরা আবারও সিএনজি মালিক ও চালকের ওপর হামলা চালায়। এ সময় ১৫-১৬টি অটোরিকশা ভাঙচুর করা হয়। হামলায় অন্তত ১৫জন অটোরিকশা শ্রমিক আহত হয়েছেন।
প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা যায়, প্রথমে অটোরিকশা শ্রমিকেরা সাবাইহাট বাজার এলাকায় দুটি বাস ভাঙচুর করেন। পরে মোটরশ্রমিক ইউনিয়নের শ্রমিকেরা সংঘবদ্ধ হয়ে ফেরিঘাট এলাকায় জড়ো হয়ে অটোরিকশা শ্রমিকদের ওপর হামলা ও অটোরিকশা ভাঙচুর করেন। বিকেল ৩টার দিকে ফেরিঘাট এলাকায় আত্রাই নদের ওপর নির্মিত সেতুর পূর্ব পাশে ও সেতুর পশ্চিম পাশে ফায়ার সার্ভিস স্টেশনের উভয়পাশে রাস্তার ওপর আড়াআড়িভাবে বাস রেখে যান অবরোধ সৃষ্টি করে মোটর শ্রমিক ইউনিয়নের লোকজন।
বিকাল সাড়ে ৫টার দিকে মান্দা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোজাম্মেল হক কাজী বলেন, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে কাজ চলছে। পুনরায় সংঘর্ষ এড়াতে ফেরিঘাট এলাকায় পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। যান চলাচল স্বাভাবিক করতে এবং উভয়পক্ষের মধ্যে সমঝোতার চেষ্টা চলছে। সংঘর্ষের ঘটনায় এখন পর্যন্ত মামলা করেনি।
বিডি প্রতিদিন/জুনাইদ আহমেদ