লালমনিরহাট সদর উপজেলায় কুলাঘাটে এক গৃহবধূকে ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদকের বিরুদ্ধে।
ভুক্তভোগী ওই গৃহবধূ গত মঙ্গলবার রাতে সদর থানায় লিখিত অভিযোগ করেন। এর আগে গত ১৩ অক্টোবর রাতে ওই ঘটনা ঘটে।
অভিযুক্ত ছাত্রলীগ নেতা সোলায়মান আলী সবুজ একই ইউনিয়নের কুলাঘাট এলাকার সফিকুল ইসলামের ছেলে এবং মোগলহাট ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক।
এ দিকে ঘটনা ধামা চাপা দেওয়ার জন্য টাকা দিয়ে জোরপূর্বক মীমাংসার চাপ সৃষ্টি করে স্থানীয় আওয়ামী লীগ ও গ্রামের মাতব্বরেরা।
পরে স্ত্রীকে সাথে নিয়ে স্বামী কুড়িগ্রামে শশুরবাড়িতে চলে যান। সেখান থেকে গত মঙ্গলবার সন্ধ্যায় লালমনিরহাট সদর থানায় এসে ভুক্তভোগী গৃহবধূ বাদী হয়ে লিখিত অভিযোগ দেন।
ওই গৃহবধূ বলেন, দীর্ঘ দিন থেকে ছাত্রলীগ নেতা সবুজ তাকে কুপ্রস্তাব দিয়ে আসছিল। এতে রাজি না হওয়ায় তিনি ভিন্ন কৌশল অবলম্বন করেন। তার স্বামী স্থানীয় কুলাঘাট বাজারে মাছের ব্যবসা করে সংসার চালান। স্বামী রাতে বাজার থেকে ফেরার পথে তাকে মেরে ফেলার হুমকি দেন ছাত্রলীগ নেতা সবুজ। কিন্তু এতেও কুপ্রস্তাবে রাজি না হলে সুযোগের সন্ধানে থাকেন ওই ছাত্রলীগ নেতা। পরে ঘটনার দিন রাতে বাড়িতে প্রবেশ করে ঘরের দরজায় কড়া নাড়েন। সেদিন ভুক্তভোগী গৃহবধূ বাড়িতে একা ছিলেন। শব্দ পেয়ে দরজা খোলা মাত্রই গৃহবধূর মুখ চেপে ধরে ধর্ষণ করেন। একপর্যায়ে গৃহবধূর চিৎকারে আশপাশের লোকজন ছুটে আসে। তখন পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করলে ছাত্রলীগ নেতা সবুজকে আটক করে প্রতিবেশী লোকজন।
পরে খবর পেয়ে স্থানীয় ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা দল বেঁধে এসে সবুজকে ছিনিয়ে নিয়ে যান।
গৃহবধূর স্বামী বলেন, আমার স্ত্রীর সাথে বিভিন্ন নম্বর দিয়ে কথা বলে কুপ্রস্তাব দিত সবুজ। এতে রাজি না হওয়ায় বাড়িতে একা পেয়ে তাকে ধর্ষণ করেছে। পরে আমাকে টাকা নিয়ে মীমাংসা করার চাপ দেয় ছাত্রলীগ নেতা সবুজের লোকজন। এতে রাজি না হলে তারা আমাদের তিন দিন বাড়ি থেকে বের হতে দেয়নি। পরে সোমবার বিকালে ৩টি ১০০টাকার ফাঁকা স্টাম্পে আমাদের সই নিয়ে নিজ বাড়ি থেকে বের করে দেয়। পরে কুড়িগ্রামে শশুরবাড়ি গিয়ে আশ্রয় নেই। সেখান থেকে লালমনিরহাট সদর থানায় এসে লিখিত অভিযোগ দিয়েছি। আমি সবুজের বিচার চাই।
এ ব্যাপারে অভিযুক্ত ছাত্রলীগ নেতা সোলায়মান আলী সবুজ বলেন, আমাকে সমস্যার কথা বলে বাড়িতে ডেকে নেয়। পরে ওই গৃহবধূ এলাকার লোকজনকে ডেকে এনে মিথ্যা অপবাদ দেয়। আমার সাথে ওই গৃহবধূর কোনো সম্পর্ক নেই।
তবে লালমনিরহাট জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক আরিফ ইসলাম বলেন, বিষয়টি আমরা শুনেছি। তিনি ওই ইউনিয়নের ছাত্রলীগের কেউ না আমরা তাকে চিনিও না। জেলার প্রোগ্রামে কোনোদিন তাকে দেখিনি।
সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ওমর ফারুক বলেন, এ বিষয়ে অভিযোগ পেয়েছি। তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
বিডি প্রতিদিন/জুনাইদ আহমেদ