বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বী রাখাইন সম্প্রদায়ের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব প্রবারণা পূর্ণিমা। এ উপলক্ষ্যে রবিবার রাতে পর্যটন কেন্দ্র কুয়াকাটার শ্রীমঙ্গল বৌদ্ধ বিহারে গৌতম বুদ্ধ দেবের স্মরণে এক হাজার মোমবাতি প্রজ্জ্বলন করা হয়। পরে বিহার সংলগ্ন মাঠে প্রায় অর্ধশতাধিক রং বেরংয়ের ফানুস আকাশে উড়িয়ে এ উৎসব উদযাপন করেন। এ সময় আতশবাজি ও নাচেগানে মাতোয়ারা হয়ে ওঠে রাখনাইন সম্প্রদায়ের যুবক-যুুবতীরা। তাদের এ উৎসব দেখতে ভিড় করে পর্যটকসহ স্থানীয়রা। এর আগে সকালে পঞ্চশীল, অষ্টশীল প্রার্থনা, ঘণ্টা বাজানোসহ ধর্মীয় আলোচনা করা হয়। এছাড়া বিভিন্ন ফল ও হরেক রকমের পিঠাপুলি বৌদ্ধ ভিক্ষুকে প্রদান করেন। তবে প্রবারণা উৎসবকে কেন্দ্র করে পটুয়াখালীর কলাপাড়া উপজেলার ২৪টি রাখাইন পল্লীতে বিরাজ করছে উৎসবমুখর পরিবেশ। আলোকসজ্জ্বা করা হয়েছে প্রতিটি বিহার। তবে কোন অপ্রীতিকর ঘটনা এরাতে পল্লীগুলোতে জোরদার করা হয়েছে নিরাপত্তা ব্যবস্থা।
বৌদ্ধ ধর্মালম্বীদের মতে, এই দিনে গৌতম বুদ্ধ ধর্ম প্রচার শুরু করেন। এই দিনটি বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীদের কাছে অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ। এছাড়া গৌতম বুদ্ধের স্মরণে আষাঢ়ী পূর্ণিমাতে বৌদ্ধ ভিক্ষুদের বর্ষাব্রত শুরু হয়ে কার্তিকের এ পূর্ণিমাতে শেষ করেন। এ উৎসবকে ঘিরে বাড়ি বাড়ি তৈরি হয় বাহারি পিঠা, পুলি, পায়েশ। গৃহে অতিথি আপ্যায়নসহ রাখাইনরা এই দিনে পরিষ্কার কিংবা নতুন পোশাকে বিহারে গমন করে। একই সাথে পালন করা হয় বিভিন্ন ধর্মীয় আচার-অনুষ্ঠান। তবে ফানুস উৎসব এখন সর্বজনীন উৎসবে পরিণত হয়েছে। এ অনুষ্ঠান চলবে সোমবার বিকেলে এ উৎসবের সমাপ্তি ঘটবে বলে স্থানীয়রা জানিয়েছেন।
কুয়াকাটা শ্রী মঙ্গল বৌদ্ধ বিহার ভিক্ষু উপাধক্ষ্য ইদ্রবংশ ভিক্ষু বলেন, প্রতিবছরই এই সময় আকাশে ফানুস উড়িয়ে এবং ধর্মীয় নানা আয়োজনের মাধ্যমে গৌতম বুদ্ধ দেবকে স্মরণ করা হয়। প্রবারণা পূর্ণিমা উৎসব উপলক্ষ্যে বিভিন্ন ধর্মীয় আচার-অনুষ্ঠান পালন করা হয়েছে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, উপজেলার ২৪টি রাখাইন মন্দিরে প্রবারণা উৎসব পালন করার জন্য ৫০০ কেজি করে চাল দেওয়া হয়েছে। রাখাইনরা যাতে এ উৎসব ভালোভাবে পালন করতে পারে, সে জন্য সার্বিক নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।
বিডি প্রতিদিন/এএ