৪ ডিসেম্বর, ২০২৩ ১৮:১০

বগুড়ার ৭ আসনে ৮৯ জন প্রার্থীর মধ্যে বাতিল ২৮

নিজস্ব প্রতিবেদক, বগুড়া

বগুড়ার ৭ আসনে ৮৯ জন প্রার্থীর মধ্যে বাতিল ২৮

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বগুড়ার সাতটি সংসদীয় আসনে জমাকৃত ৮৯ জন প্রার্থীর মনোনয়নের মধ্যে যাচায় বাছাইয়ে ২৮ জনের প্রার্থিতা বাতিল হয়েছে। এরমধ্যে স্বতন্ত্র প্রার্থী ২১ জন এবং অপর সাতজন বিভিন্ন দলের। আর প্রার্থিতা বৈধ হয়েছে ৬০ জনের। 

স্বাক্ষর না থাকা, তথ্য গোপন, স্বতন্ত্র প্রার্থীদের সমর্থন না থাকাসহ বিভিন্ন কারণে এই মনোনয়নপত্র গুলো বাতিল হয়ে যায়। বাতিল হয়ে গেলেও নিয়ম অনুযায়ী আপিল করার সুযোগ রয়েছে সম্ভাব্য প্রার্থীদের। তবে বগুড়া-৬ আসনে একজনের প্রার্থিতা স্থগিত রাখা হয়েছে।

সোমবার সকাল সাড়ে ১০টায় বগুড়া জেলা রিটার্নিং কর্মকর্তা ও জেলা প্রশাসক সাইফুল ইসলামের কার্যালয়ের সভাকক্ষে এই মনোনয়নপত্র যাচাই-বাছাই হয়। ৫, ৬ ও ৭ আসনের প্রার্থীদের মনোনয়নপত্র যাচাই করা হয়। এর আগে রবিবার ১,২,৩ ও ৪ আসনের প্রার্থীদের মনোনয়নপত্র যাচায় করা হয়। মনোনয়ন জমা প্রদানকারী সম্ভাব্য প্রার্থীদের গত দুই দিনে এই যাচায়-বাছাইয়ের প্রথম দিনে বাদ পড়েন ১২ জন এবং দ্বিতীয় দিনে বাদ পড়েন ১৬ জন।

সোমবার যাচাইয়ের শুরুতে বগুড়া-৫ (শেরপুর-ধুনট) আসনের জাতীয় পার্টির মনোনীত প্রার্থী মো. ওমর ফারুকের মনোনয়নপত্র বাতিল ঘোষণা করা হয়। যাচাইয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের সিআইবির রিপোর্টে ঋণসংক্রান্ত তথ্য থাকলেও জাতীয় পার্টির প্রার্থী ওমর ফারুক হলফনামায় তা গোপন করেন। এ জন্য তার মনোনয়নপত্র বাতিল করা হয়। একই আসনে ন্যাশনাল পিপলস পার্টির (এনপিপি) প্রার্থী আব্দুর নুর শেখের মনোনয়নপত্র বাতিল হয়েছে। মনোনয়নপত্রে প্রস্তাবকারী, সমর্থকের স্থানে তিনি নিজেই স্বাক্ষর করেন। এর আগে এই আসন থেকে মোট মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছিলেন ৮ জন। যাচাই-বাছাইয়ে আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী আলহাজ্ব মজিবর রহমান মজনুসহ ৬ জনের মনোনয়নপত্র গৃহিত হয়।

বগুড়া-৬ (সদর) আসনে দুইজন স্বতন্ত্র প্রার্থী নয়ন রায় ও সৈয়দ কবির আহম্মেদ মিঠুর মনোনয়নপত্র বাতিল করেন জেলা রিটার্নিং কর্মকর্তা সাইফুল ইসলাম। নয়ন রায়ের মনোনয়নপত্রে দেয়া তথ্যে এক শতাংশ সমর্থনযুক্ত ভোটারের স্বাক্ষরের তথ্য সঠিক না হওয়ায় সেটি বাতিল করা হয়। সৈয়দ কবির আহম্মেদের নামে ঋণ খেলাপি থাকার কারণে মনোনয়নপত্র বাতিল করেন জেলা রিটার্নিং কর্মকর্তা। এই আসনে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী রাগেবুল আহসান রিপুসহ মোট ৮ জন মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছিলেন। এরমধ্যে ৬ জনের মনোনয়নপত্র যাচাই-বাছাইয়ে গৃহিত হয়।

বগুড়া-৭ (গাবতলী-শাজাহানপুর) আসনে মোট ১২ প্রার্থীর মনোনয়নপত্র বাতিল হয়েছে। এরমধ্যে স্বতন্ত্র প্রার্থী ১১ জন ও অপর ১ জন জাতীয় পার্টি জেপি মো. রাকিব হাসান। জাতীয় পার্টির (জেপি) মনোনীত প্রার্থী থাকা স্বত্ত্বেও জালিয়াতি করায় রাকিব হাসানের মনোনয়নপত্র বাতিল করা হয়। বাতিল হওয়া ১১ জনের মধ্যে স্বতন্ত্র প্রার্থী মো. জহুরুল ইসলামের নামে ঋণ খেলাপি থাকার কারণে মনোনয়নপত্র বাতিল করেন জেলা রিটার্নিং কর্মকর্তা। আর বাকিদের মনোনয়নপত্রে দেয়া তথ্যে এক শতাংশ সমর্থনযুক্ত ভোটারের স্বাক্ষরের তথ্য সঠিক না হওয়ায় বাতিল করা হয়। এই আসন থেকে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী ডা. মোস্তফা আলম নান্নুসহ মোট ২৫ জন মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছিলেন। যাচাই-বাছাইয়ে ১৩ জনের মনোনয়নপত্র গৃহিত হয়।  

মনোনয়ন যাচাই-বাছাই শেষে বগুড়া জেলা রিটার্নিং কর্মকর্তা ও জেলা প্রশাসক সাইফুল ইসলাম জানান, বাতিলকৃত প্রার্থীরা আগামী ৫ থেকে ৯ ডিসেম্বর পর্যন্ত নির্বাচন কমিশনের কাছে আপিল করার সুযোগ পাবেন। যাচাই-বাছাই শেষে সোমবার বিকেল চারটার পর রায়ের কপি নিয়ে নির্বাচন কমিশন বরাবর আপিল করতে হবে।

উল্লেখ্য, এর আগে গত ৩০ নভেম্বর বগুড়ার সাতটি আসনে ৮৯ জন প্রার্থী নিজেদের মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছিলেন। এ নিয়ে বগুড়ার সাতটি আসনে মোট প্রার্থিতা বৈধ ৬০ জনের। বাতিল হয়েছে ২৮টি। আর বগুড়া-৬ আসনের একজনের প্রার্থিতা স্থগিত রাখা আছে।

বগুড়ার ৭ আসনে মোট ভোটার সংখ্যা ২৮ লাখ ২৮ হাজার ৩৪৪। এর মধ্যে পুরুষ ভোটার ১৪ লাখ ৪ হাজার ৩২১ এবং নারী ভোটার ১৪ লাখ ২৪ হাজার ২৩ জন। ভোটকেন্দ্রের সংখ্যা ৯৬৯টি। ভোট কক্ষ স্থায়ী ৫ হাজার ৮১৫টি ও অস্থায়ী ৪০৮টি মিলে মোট ৬ হাজার ২২৩টি কক্ষে ভোট দিবেন জেলাবাসী।

নির্বাচন কমিশন ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী-রিটার্নিং কর্মকর্তার সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে আপিল ও শুনানি ৬-১৫ ডিসেম্বর এবং ১৭ ডিসেম্বরের মধ্যে মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করা যাবে। 

বিডি-প্রতিদিন/বাজিত

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর