২৮ মে, ২০২৪ ২২:২৮

কলাপাড়ায় উপকূলজুড়ে দুর্গতদের আহাজারি

কলাপাড়া (পটুয়াখালী) প্রতিনিধি:

কলাপাড়ায় উপকূলজুড়ে দুর্গতদের আহাজারি

ঘূর্ণিঝড় রিমালের তান্ডব থেমে গেলেও উপকূলজুড়ে চলছে দুর্গত মানুষের আহাজারি। আঘাতের চিহ্ন সাগর পাড়ের কলাপাড়ায় স্পষ্ট হয়ে উঠেছে। লন্ডভন্ড হয়ে গেছে গাছপালা। বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থা। বন্ধ হয়ে যায় বিদ্যুৎ ও মুঠোফোনের নেটওয়ার্ক। 

ডুবেছে শতশত পুকুর ও মাছের ঘের। বিধ্বস্ত হয়েছে অসংখ্য বসতবাড়ি ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। এছাড়া ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বন্যা নিয়ন্ত্রণ বেরিবাধ। এখনো পানিবন্দি রয়েছে হাজার হাজার পরিবার। সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে কৃষি খাতে। অনেক পরিবার এখনও খোলা আকাশের নিচে ও বিভিন্ন অশ্রয়কেন্দ্রে বসবাস করছে। এদিকে দুর্গত মানুষের মাঝে রান্না করা খাবার সরবরাহ করছে উপজেলা প্রশাসন ও স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা। 

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, কুয়াকাটার পাশে পশ্চিম খাজুরা এলাকায় বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধটির বাইরের অংশ এবং সাগরের মোহনার মহিপুর ইউনিয়নের নিজামপুর গ্রামসংলগ্ন বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধটি জোয়ারের চাপে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। উপজেলার নীলগঞ্জ ইউনিয়নের জালালপুর, খ্রিষ্টানপল্লি, পশ্চিম হাজীপুর, নবীপুর, ফতেহপুরসহ পাঁচটি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। একই ইউনিয়নের গৈয়াতলা ও নিচকাটা জলকপাট এলাকার বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধের উপর দিয়ে পানি লোকালয়ে প্রবেশ করে গ্রামের পর গ্রাম তলিয়ে গেছে।

উপজেলা সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা অপু সাহা জানান, ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে অস্বাভাবিক জলোচ্ছ্বাস ও অতিবর্ষণে উপজেলার ধূলাসার, লালুয়া, বালিয়াতলি, লতাচাপলি, ধানখালী, চম্পাপুর, মহিপুর ও নীলগঞ্জ ইউনিয়নে ৪ হাজার ৬ শত ৯০টি পুকুর, যার আয়তন ৪১০.২৫ হেক্টর এবং ৭৭৮টি ঘের ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. আরাফাত হোসেন জানান, ঘূর্ণিঝড় রেমালের তান্ডবে উপজেলার বিশ হাজার হেক্টর আবাদী জমি পানিতে নিমজ্জিত হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে কৃষকের করলা, ঝিঙ্গা, ঢেঁড়স, পুঁই শাক, গিমা কলমী শাক, চিচিঙ্গা, শসা, কলা ও আমের বাগান।

উপজেলা দুর্যোগ ও ত্রাণ কর্মকর্তা মো. হুমায়ুন কবির বলেন, দুর্গত মানুষের সহায়তায় ১০০ মে. টন চাল ও নগদ দেড় লক্ষ টাকা হাতে পেয়েছি। এছাড়া আরও নগদ ৫ লক্ষ টাকা, গো-খাদ্যের জন্য ২ লক্ষ টাকা, শিশু খাদ্যের জন্য ২ লক্ষ টাকা, আরও ২০০ মে. টন চাল ও ৫০০ প্যাকেট শুকনো খাবার বরাদ্দ দেয়া হয়েছে।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. রবিউল ইসলাম জানান, উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে দুর্গত মানুষের পাশে আছি। দুর্যোগকালীন ও পরে দুর্গত মানুষকে শুকনো খাবার, ত্রাণ সুবিধাসহ রান্না করা খিচুড়ি প্যাকেট সরবরাহ করেছি। 

বিডি প্রতিদিন/এএম

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর